2023 কামরাঙা চাষের সঠিক ও সহজ পদ্ধতি | 2023 Carambola Cultivation Method in Bangla

কামরাঙা একটি অতীব পরিচিত ফল। এ ফল খেতে অনেক সুস্বাদু ও রসালো ফল। আমাদের গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এ ফল গাছ দেখা যায়। এ ফল থেকে সস, জেলি, আচার তৈরি করা যায় । অনেকে আবার স্যালাদ ও ফ্রুট কার্ভিং এ এর ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমান বিশ্বে মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এর বানিজ্যিক চাষাবাদ হচ্ছে।

কামরাঙা একটি উচ্চ  ভিটামিন সম্পন্ন ও খাদ্যগুন সম্পন্ন ফল। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে, আরও রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম, ভিটামিন-ই, ফসফরাস ছাড়াও আরও অনেক পুষ্টিগুন। এটি প্রচুর পরিমানে ফলে। তেমন কোন সার ও যত্ন ছাড়াই বছরে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব।

Carambola Cultivation Method in Bangla
Carambola Cultivation Method in Bangla

আমরা আমাদের বাংলাভূমি ওয়েবসাইটে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এতে করে আপনারা কৃষি, শিক্ষা, অর্থনীতি আরও নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করে থাকেন। আমাদের এ তথ্যগুলো আপনারা আপনাদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে উপকৃত হয়ে থাকেন ।

সেই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা কামরাঙা ফলের চাষ নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করছি খুব সহজেই কামরাঙা চাষের বিস্তারিত জানতে পারবেন ।

আসুন আজ আমরা এ পুষ্টিগুনে ভরপুর ও সুস্বাদু ফলটি সম্পর্কে জানি

কামরাঙা চাষে কি ধরনের মাটি ও জলবায়ু প্রয়োজনঃ

কাময়াঙা চাষে বেলে দো-আঁশ মাটি চাষের জন্য ভাল । চারা রোপন করার আগে মাটিতে গোঁবর সার ৫-১০ কেজি দিয়ে নিতে হবে, ৫০-কেজি  ১০ঃ২৬ঃ২৬ সার, ১০০ গ্রাম- টিএসপি, ১০০ গ্রাম- পটাস  দিয়ে ১৫-২০ দিন পঁচিয়ে নিতে হবে। তারপর বাছাই করা চারা রোপন করতে হবে ।

এ গাছ টবেও লাগানো যায়, সেক্ষেত্রে ২০ ইঞ্চি কালার ড্রামে লাগানো যেতে পারে। সাথে ২ ভাগ বেলে দো-আঁশ মাটি, ১ ভাগ গোঁবর  সার, ৪০ গ্রাম  টিএসপি, ৪০ গ্রাম পটাস মিশিয়ে একত্রে রেখে দিতে হবে ১০-১৫ দিন। তারপর মাটি খুচিয়ে ৪-৫ দিন রেখে যখন মাটি ঝুর-ঝুরে হবে তখনই চারা টবে রোপন করতে হবে। গাছের গোঁড়া উঁচু করে গাছ লাগাতে হবে যেন গাছের গোঁড়ায় জল না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এ গাছে তেমন কোন রোগবালাই নেই বললেই চলে ।

চারা সংগ্রহঃ

আমাদের দেশীয় চারায়  ফলন ভালো হয়। তবে স্বাদ অনেকটা টক হয়ে থাকে। আর থাই কলমের চারা গুলোর ফল স্বাদে মিষ্টি হয়, স্বাস্থ্যসম্মত ও গুনে মানে বেশ ভালো হয়। আর সহজে গাছে ফল এসে যায় সাধারনত ৮-৯ মাসের দিকে । দেশীয় জাতগুলোতে ফল আসতে ১-১.৫ বছর লাগে ।

পরবর্তী পরিচর্যাঃ

গাছ লাগানোর পরবর্তী ৪-৫ মাস পর্যাপ্ত তেমন জলেরর প্রয়োজন হয় না । তারপর থেকে একটু একটু করে জলসেচ এর পরিমান বাড়াতে হবে।

এছাড়া সরিষার খৈল পানিতে পঁচিয়ে ১০-১৫ দিন পর  পর জলস্প্রে করতে হবে। এতে ফলন ভালো হবে। ১ বছর পর মাটি খুঁড়ে পরিবর্তন করে দিতে হবে। আর সাথে সার মিশ্রিত করে দিতে হবে ।

এছাড়া গাছের মরা ডাল গুলো ছেঁটে দিতে হবে। আর বর্ধিত ডালপালা যেগুলোতে ফুল আসে না সে ডাল গুলো কেটে দিলে আরও অনেক নতুন ডাল গজাবে। এতে গাছে ফলের পরিমান বাড়বে ।

একটি কলমি চারায় ৮-৯ মাসে ফলন চলে আসে। প্রথম বছরে ১৫-২০ কেজি ফল পাওয়া গেলেও ২য়  ও ৩য় বছরে ফলন বেড়ে  ৫০-৬০ কেজি ফল পাওয়া সম্ভব। কামরাঙা চাষে-আমাদের আশেপাশের পরিত্যাক্ত জমি ব্যাবহার করতে পারি এছাড়াও বাড়ির আশেপাশে ২-৪  টি গাছ যদি রোপন করতে পারি তাহলে ঘরের খাবারের চাহিদা মিটিয়েও বাড়তি টুকু বিক্রি করে আয়ের সংস্থাপন করতে পারি।

আজ আমরা কামরাঙা চাষ নিয়ে আলোচনা করলাম। আগামীতে কামরাঙা চাষের ব্যাপক সফলতা নিয়ে আরও আলোচনা করবো।

আমাদের এ লিখাটি আপনাদের সহ, আরও অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লিখাটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো । আপনার একটি শেয়ারের মাধ্যমে, যদি কেউ অনুপ্রানিত হয়ে এ চাষে আগ্রহী হয়, আর লাভবান হয়ে আয়ের ব্যাবস্থা করতে পারে, তবেই এ লেখায় স্বার্থকতা আসবে ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top