সব সময় সুস্থ থাকার কিছু উপায়ঃ ছোটখাটো বিভিন্ন অসুখ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে দৈনন্দিন জীবনে। তবে এমন কিছু টিপস ফলো করে সুস্থ থাকা যায় সব সময়। আজকের এই ব্যস্তজবনে কাজের চাপ, দৌড়ঝাঁপ, তার মাঝে শরীরের যত্ন নেওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তার ফলে ওজন বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিস এর মত বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে থাকে।
এমন কিছু টিপস, যেগুলো আপনি প্রতিদিন যদি ফলো করেন তাহলে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন পাওয়াটা স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপান্তরিত করতে পারেন আপনি। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু টিপস সম্পর্কে-
১) প্রচুর হাঁটাচলা করুন :
এখনকার দিনে দাঁড়িয়ে গাড়ি ছাড়া কেউ চলতেই পারেন না। তবে ছোটখাট কাজ, কম দূরত্বের জায়গাতে হেঁটে যাতায়াত করার অভ্যাস গড়ে তুলুুন। শরীরে যেমন খাবারের প্রয়োজন আছে, তেমনি প্রতিনিয়ত হাটাচলারও প্রয়োজন আছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ হাজার স্টেপ হাঁটাচলা করুন।
খাবার গ্রহণের পর কিছুক্ষণ হাঁটা উচিত, তারপরে আপনার হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। সকালবেলা হাঁটার অভ্যাস আপনাকে সুস্থ রাখবে। কোন কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য সকালে হাঁটার সময় যদি না হয়ে থাকে তাহলে রাতে খাওয়ার পর আধ ঘন্টা হাঁটার চেষ্টা করুন।
-
ওজন কমাতে এই আটার রুটি দারুন কার্যকরী, আপনি কি জানেন কি কি আটা?
-
গ্যাসের সমস্যা বেড়ে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, ভুলেও করবেন না এই কাজগুলি
-
-
-
-
-
২) পর্যাপ্ত পরিমান জল পান :
আমাদের শরীরের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিমাণ মতো জল পান করা। প্রতিদিন অন্তত পক্ষে সুস্থ থাকার জন্য ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল পান করা উচিত। এই অভ্যাস আপনার সমস্ত শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনার খাওয়া খাবার হজম করতে পারবেন খুব সহজে।
লাগাতার যদি জল পান করতে থাকেন তাহলে শরীরে ক্ষতিকারক টক্সিন জমা হতে পারে না। তা শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সুবিধা হয়। অপরদিকে অল্প জল পান করলে শুষ্ক ত্বক, কিডনির সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
৩) ব্রেকফাস্ট বা প্রাতরাশ :
সুস্থ সবল থাকার জন্য সকালের খাবার কখনোই বাদ দেবেন না। সকালের ভারী ব্রেকফাস্ট আপনাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এনার্জেটিক রাখতে সাহায্য করবে।
৪) রাতের খাবার কম খাওয়া :
রাতের খাবার পরে আমাদের আর কোনো কাজ থাকে না। তারপরে ঘুমাতে যাওয়ার পালা। সেক্ষেত্রে কিন্তু খাবারটা হজম হবে খুব ধীরগতিতে।
তাই রাতের খাবার যতটা হালকা এবং পরিমাণে অল্প খাবেন ততবেশি আপনার হজমে সুবিধা হবে। তাছাড়া রাতে কম খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আপনার ওজনটাও কিন্তু নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
রাতের বেলা খাবার হজম করার জন্য শরীরকে বেশি পরিমাণে শক্তি ক্ষয় করতে হয়়। হালকা এবং অল্প পরিমাণ খেতে হবে ততোই শরীরে শক্তি খরচ কম হবে। সেটা আপনার শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
৫) চা অথবা কফি পান করা :
অনেকেরই চা অথবা কফি পান করার অভ্যাস থাকে। তবে জানেন কি এই চা ও কফি পান করার ফলে শরীরে কত রকমের সুবিধা হয়! শরীর সবসময় সুস্থ এবং সবল থাকতে পারে।
তবে পরিমাণটা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়়। নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণ চা পান করার ফলে শরীর সুস্থ থাকে তবে অতিরিক্ত হয়ে গেলে কিন্তু শরীরে ক্ষতিটাই বেশি হয়। তাই পরিমাণটা খেয়াল রাখবেন। প্রত্যেকটা জিনিস অতিরিক্ত খারাপ জায়গায় নিয়ে যেতে পারে।
৬) ফাস্টফুড ত্যাগ করা :
ফাস্টফুড খেতে সকলেই পছন্দ করেন। তবে পছন্দ হলেই তো হবে না শরীরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই সমস্ত খাবারে ক্যালরির পরিমাণ প্রচুর থাকে।
তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে বাইরের খাবার এবং ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন। তার ওপর যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে তো এগুলো একেবারেই বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
৭) গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস :
চা অথবা কফি খাওয়া শরীরের পক্ষে ভালো তো বটেই। তবে এসবের বদলে যদি আপনি গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করেন, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
গ্রিন টি শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এর ফলে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকারক টক্সিন তাড়াতাড়ি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তাই নিয়মিত দিনে দুবার গ্রিন টির সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
৮) নেশা করা থেকে বিরত থাকুন :
নেশা করা শুধুমাত্র শরীরের ক্ষতি করে তা নয়, মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়তে পারেন আপনি। মানসিক স্বাস্থ্যের অনেকটাই ক্ষতি করে নেশা। নেশা ফুসফুস এবং লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে নেশা থেকে দূরে থাকুন।
৯) এক্সারসাইজ অথবা ব্যায়াম করুন :
নিয়মিত এক্সারসাইজ অথবা ব্যায়াম করলে আপনার শারীরিক উন্নতি ঘটবে আপনার চোখের সামনে। শুধু শারীরিক উপকারিতা পাবেন তা কিন্তু নয়, তার সাথে সাথে মানসিক স্বাস্থ্যও বজায় থাকবে।
ব্যায়াম করলে অনেক রকম রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন আপনি। মাথাব্যথা থেকে মারণ রোগ ক্যানসারকে পর্যন্ত আপনি দমিয়ে রাখতে পারেন, এক্সারসাইজ অথবা ব্যায়াম করার মাধ্যমে।
১০) মিষ্টি কে না বলুন :
অনেকেই স্বাভাবিকভাবেই মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন না। তবে অনেকেই আছেন মিষ্টির নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে। এক্ষেত্রে কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য মিষ্টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। তাছাড়া ডায়াবেটিসের মতো রোগের থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। এছাড়াও মিষ্টি কম খাওয়ার ফলে আপনার ওজনটাও আপনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
১১) পর্যাপ্ত পরিমান ভালো ঘুম :
সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম কিন্তু আবশ্যক। সারাদিনের ধকল এবং ক্লান্তি কাটিয়ে আবার সতেজ হয়ে উঠতে শরীরকে একটু তো বিশ্রাম দেওয়া প্রয়োজন নাকি !তবে সেটা একটা পরিমাণ মতো দিতে হবে।
তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম আপনার সুস্থ থাকার একটা চাবিকাঠি হতে পারে। যারা ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেন না তারাই কিন্তু কোনো না কোনো ছোটখাটো রোগে ভুগতে থাকেন। রাতে যদি ঘুম না আসে তাহলে কফি খাওয়া এবং অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস ত্যাগ করার চেষ্টা করুন।
অন্যদিকে ডিপ্রেশন এর মত সমস্যা থেকে যতটা নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারবেন ততই আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। সুস্থ থাকার জন্য “ব্রিদিং এক্সারসাইজ” ও তার সাথে “মেডিটেশন” করতে পারেন। আপনাকে অবসাদ মুক্ত করতে সাহায্য করবে এগুলি।