এলার্জির সমস্যা একটি পরিচিত সাধারণ অসুখ, আমাদের প্রত্যেকেরই কোন না কোন বিষয়ে এলার্জি রয়েছে। রক্তের গ্রুপ ভেদে একেক জনের একেক জিনিস বা খাদ্যে এলার্জি রয়েছে।
এলার্জি মানুষের রক্তের গ্রুপ, ইমিউন সিস্টেম এবং বংশানুক্রমে হতে পারে। তাই কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে তা জানার উপায় হচ্ছে আগে একটি খাবার খেয়ে সমস্যা হলে সেটা পুনরায় খেয়ে দেখা, তখনো একই সমস্যা হলে খাবারটি আর না খাওয়া, অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ খাওয়া৷
তারপর যদি চিকিৎসক বলেন খাবারটি খাওয়া যাবে, তবেই খাবারটি পুনরায় খাওয়া উচিত। কারণ এলার্জি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেকসময় এটা মারাত্নক আকার ধারণ করে, তখন শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।
সুপ্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে এলার্জি হওয়ার কারণ ও কোনসব খাবারে এলার্জি বেশী হয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। চলুন দেরী না করে আলোচনা শুরু করা যাক।
এলার্জি হওয়ার কারণ:-
এলার্জি আমাদের কাছে একটি পরিচিত শব্দ, প্রতিটি মানুষেরই কোন না কোন কারণে এলার্জি হয়ে থাকে।
আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছু কিছু উপাদানের উপস্থিতিকে আমাদের জন্য ক্ষতিকর বলে চিহ্নিত করে, ফলে সেইসব উপাদান দেহে প্রবেশ করা মাত্রই আমাদের শরীরে তা প্রতিরোধের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়।
তবে খাদ্যের এলার্জির বিষয়টি হচ্ছে খাদ্যের কিছু উপকারী প্রোটিন রয়েছে যার পুরো অংশ আমাদের দেহে শোষিত হয়না, কিছু অংশকে আমাদের দেহের ইমিউন সিস্টেম ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করে তা থেকে আমাদের রক্ষা করার চেষ্টা করে। এর ফলশ্রুতিতে এলার্জির বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়।
যেসব খাবারে এলার্জি বেশী দেখা দেয়:-
১. সামুদ্রিক মাছ
বেশিরভাগ মানুষের সামুদ্রিক মাছে এলার্জি দেখা দেয়। যেসব সামুদ্রিক মাছের শক্ত খোলস বা আশ রয়েছে সেগুলো খেলে এলার্জি বেড়ে যায় অনেকেরই।
এসব মাছের মধ্যে রয়েছে চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, কাকড়া,টুনামাছ,স্যালমন, ম্যাকরলে ইত্যাদি।
২. বেগুন
বাঙালিদের খুবই পছন্দের একটি সবজি হচ্ছে বেগুন, সকালের খাবার থেকে রাতের খাবার, সব বেলাতেই বেগুন দিয়ে মুখরোচক সব পদ রান্না করা হয়।
কিন্তু দারুণ মুখরোচক এই খাবারটিতেই অনেকের রয়েছে এলার্জি, বেগুনে হালকা থেকে গুরুতর এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর তা শিশুদের থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের বেলাতেই বেশি দেখা যায়। এজন্য অনেকেরই বেগুন খাওয়া নিষেধ থাকে।
৩. বাদামজাতীয় খাবার
অনেকেরই বাদামজাতীয় খাবারে এলার্জি হয়ে থাকে, বিশেষত শিশুদের চীনা বাদামে এলার্জি হয়ে থাকে, তবে চীনা বাদামে এলার্জি থাকলেও সব ধরনের বাদামেই যে সবার এলার্জি থাকবে এমনটা নয়।
সবার শরীরের ইমিউন সিস্টেম সমান নয়, তাই সবার শরীর সব ধরনের প্রোটিনকে উপকারী মনে করেনা।
৪. ইলিশ
ইলিশ মাছ খেলে অনেকেরই এলার্জি দেখা দেয়, ইলিশ মাছে সরষে বা নারকেলের দুধ মিশিয়ে রান্না করা হলে তা আরও প্রকট এলার্জির সৃষ্টি করে অনেকের শরীরে।
৫. মাংস
খাসি, ভেড়া ইত্যাদি প্রাণীর মাংস খেতে অনেকেই ভালবাসেন, এগুলো খুবই মুখরোচক খাদ্য।
কিন্তু মাংসে অনেকেরই এলার্জি রয়েছে এবং তা বেড়ে শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। মাংসে এলার্জি আছে কিনা জানতে পরপর তিনদিন খেয়ে দেখতে হবে শরীরে কোন র্যাশ, যন্ত্রণা বা অস্বস্তি হচ্ছে কিনা, যদি হয়, তাহলে বুঝবেন আপনার মাংসে এলার্জি রয়েছে।
৬. গরুর দুধ
গরুর দুধে প্রচুর প্রোটিন ও স্নেহজাতীয় উপাদান থাকে, গরুর দুধ খেলে অনেকেরই এলার্জি হয়, শিশুদেরও এলার্জি হতে দেখা যায়।
যেসব গরুকে চিকিৎসার জন্য পেনিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়, তাদের দুধে বিশেষ করে এলার্জিক উপাদান থাকে।
আর যে ব্যক্তির ইমিউন সিস্টেমে দুধের প্রোটিন বা এন্টিবায়োটিককে ক্ষতিকর মনে হয়, তার শরীরে গরুর দুধ খেলে এলার্জি দেখা দেবে।
৭. সবজী
বিভিন্ন ধরনের সবজী যেমন টমেটো, কুমড়া, পুইশাক, লালশাক,লাল আলু, বাধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি খেলে অনেকের এলার্জি দেখা দেয়।
সবজিতে থাকা এসিড ও প্রোটিন সকলের শরীরের ইমিউন সিস্টেম উপকারী ভেবে গ্রহন করেনা বিধায় এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয়।
উপসংহার
এলার্জির সমস্যা প্রায় সকলেরই হয়ে থাকে। রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে।
এছাড়া পরিবার বা বংশে কোন বিশেষ খাবারে এলার্জি থাকতে পারে, আবার একেকজন মানুষের ইমিউন সিস্টেম অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এলার্জি থাকতে পারে। এটা আগে যাচাই করে নিতে হবে যে কোন কোন খাবারে এলার্জি হচ্ছে তারপর ডাক্তার দেখিয়ে মলম, খাওয়ার ঔষধ বা ইঞ্জেকশন নিতে হবে।
সমস্যা কম হলে পরবর্তীতে খাবারগুলো খেতে পারবেন। কিন্তু সমস্যা বেশি হলে খাবারগুলো না খাওয়াই উত্তম।
কারণ অনেকের এলার্জি মারাত্নক আকার ধারণ করে থাকে। আশা করি পোস্টটি এলার্জির কারণ ও কোনসব খাবার খেলে এলার্জি বেশী হয় তা জানতে আপনাদের সাহায্য করবে।
পোস্টটির বিষয়ে কোন তথ্য জানানোর হলে বা কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে কমেন্ট করুন। আমরা অবশ্যই তথ্য জানিয়ে আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি অনেক ধরনের ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক খেয়েছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এন্টিবায়োটিক খাওয়ার পর কিছু দিন যেতে না যেতে পুনরায় দেখা যায়। আর কোন কিছু খেলে শরীর চুলকায়। তাই এখন কি করতে পারি? আমার ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার রয়েছে।