আজ কিছু ভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে কথা বলব। স্মার্টফোন, ওয়েবসাইট, নিয়ে অনেক কথা হলো। আজ কথা বলব উইন্ডোজ এর কিছু সফটওয়্যার নিয়ে।
যেগুলো আকারে ছোট, বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এবং খুব শক্তিশালী। অর্থাৎ জায়গা এবং বিনামূল্য হিসাবে এসব সফটওয়্যার গুলো যে সুবিধা আপনাকে দেবে তা আপনি বিশ্বাস করতে হিমশিম খেয়ে যেতে পারেন।
তো তাহলে চলুন আপনাকে হিমশিম না খাইয়ে দেখা যাক উইন্ডোজ এর কয়েকটি ফ্রি, ছোট জায়গার এবং শক্তিশালী সফটওয়্যারঃ
ছোট কিন্তু শক্তিশালী ও কাজের কিছু পিসি সফটওয়্যারঃ
১. Everything
Everything হচ্ছে একটি ফাইন্ডবার যেটা দিয়ে যেকোনো ফাইল বা সফটওয়্যার খুজে বের করা হয়। আমরা জানি উইন্ডোজ এর ডিফল্ট সারচইঞ্জিন খুবই স্লো এবং এখান দিয়ে কিছু খুজলে তাতে খুব দেরি হয় এবং রেজাল্ট আসতে এত সময় লাগে যে বিরক্তি ধরে যায়।
কিন্তু Everything খুব দ্রুততার সাথে যেকোনো ফাইল, সফটওয়্যার, বা খুব বেশি ডাটা সম্পন্ন ড্রাইভ থেকেও খুব সহজে এমনকি খোজা ফাইলের নাম লেখা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই রেজাল্ট চলে আসে।
শুনে অবাক লাগবে যে এই সুন্দর সফটওয়্যারটির সাইজ মাত্র ১.৪ মেগাবাইট। তবে একটি জিনিস মনে রাখুন যে এটি আপনার যেকোনো প্রাইভেট বা লক করা ফাইলও খুজে বের করে।
সুতরাং আপনার গোপন ফাইল থাকলে সেগুলো অবশ্যই কোন গোপন বা কোড নেমে সেভ করবেন।
২. Unlocker
আমাদের লিস্টের ২য় সফটওয়্যার এর নাম হচ্ছে Unlocker। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ফাইল ম্যানেজার এর যেকোনো ফাইল ডিলিট করতে পারেন।
অর্থাৎ হয়তো আপনার ফোনের পাজি কিছু ফাইল যেগুলো রিনেম, মুভ, ডিলেট বা কাট করা যাচ্ছে না এসব ফাইল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই আনলকার ব্যবহার করার প্রয়োজন।
যেকোনো প্রকার ফাইল এর দ্বারা ডিলেট করা সম্ভব যা আসলেই অবাক করার মতো। তবে এর সাইজ মাত্র ৩৯৩ কিলোবাইট যা আপনাকে সম্পূর্ণ হতভম্ব হতে বাধ্য করবে।
এটি আপনার সব ফাইল ডিলেট করবে ঠিকই তবে নিজের বানানো ফাইল বা ফোল্ডার নিয়ে সমস্যায় পড়লেই এটা দিয়ে ডিলেট করুন।
উইন্ডোজ এর কোন ফাইল এটা দিয়ে ডিলেট করবেন না বিপদে পড়ে যেতে পারেন পরে আমার দোষ দিয়েন না।
৩. Texter
লিস্টের ৩য় সফটওয়্যার হচ্ছে Texter। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি যদি টাইপ করতে বিশেষ ভালো না বাসেন তাহলে এখানে আপনার সবসময়ের টাইপ করা লেখা গুলি শর্ট ফর্মে লিখে এখানে সেভ করতে পারেন ফলে আপনি টাইপ করার সময় শর্ট ফর্ম লিখলেই পুরো বানানটা লেখা হয়ে যাবে।
এছাড়াও আপনি কোন বাক্য যদি বারবার লেখেন তাহলে সেটাও এখানে সেভ করতে পারেন। পরে যদি ওই বাক্যের কিছু শব্দ বা অংশ লিখতে থাকেন তাহলে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই পুরো বাক্যটি লেখা হয় যাবে।
এই সফটওয়্যারটির সাইজ মাত্র ৪৬২ কিলোবাইট কিন্তু সেবা দেয় অসাধারন।
৪. Unchecky
আমাদের চতুর্থ সফটওয়্যারটি হলো Unchecky। সফটওয়্যারটির সাইজ হলো মাত্র ১.২৯ মেগাবাইট। আমরা জানি উইন্ডোজে যেকোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করার সময় আমাদের স্ক্রিনে বিভিন্ন রকম অন্য সফটওয়্যার এর টুলবক্স আসে।
এগুলো বিভিন্ন রকম অনুমতি চায় এবং বিভিন্ন বক্সে টিক দিতে বলে। এটা খুবই বিরক্তিকর কাজ। এছাড়াও একটি সফটওয়্যার ইনস্টল করার সময়ে আরও অনেক সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে যায় বা সামনে ইনস্টল এর অনুমতি চায় আর আমরা খেয়াল না করে অনুমতি দিয়ে দেই।
এর ফলে অনেক বাজে ক্ষতিকর সফটওয়্যার ইনস্টল হয়ে যেতে পারে যা পিসিতে ভাইরাস, ম্যালওয়ার বা পিসিতে বিভিন্ন রকম সমস্যা করতে পারে।
কিন্তু আনচেকি ব্যবহার করলে আপনি যখন পিসিতে কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করবেন তখন আপনার কাছে অন্য কোন ডায়ালগ বক্স আসবে না বা যেকোনো অন্য সফটওয়্যার এর ইনস্টল হওয়ারও অনুমতি চাইবে না।
শুধু যে সফটওয়্যারটি ইনস্টল করছেন সেই অনুমতিই আপনাকে দিতে হবে। এই সফটওয়্যারটি বেশ কাজের এবং হয়রানি হ্রাস করে থাকে।
৫. QT Tab bar
আমাদের লিস্টের ৫ম সফটওয়্যার হলো QT Tab bar। এই সফটওয়্যার এর সাইজ মাত্র ৪.২৯ মেগাবাইট। সফটওয়্যার টির কাজ হলো আমাদের ওয়েব ব্রাউজারের বিভিন্ন পেজ গুলোকে ক্রমানুসারে ট্যাব আকারে সাজানো যেমন গুগল ক্রোমে ট্যাব থাকে।
আমরা যখন ব্রাউজ করি তখন ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় বিভিন্ন ওয়েব পেজের সারি ট্যাববারে থাকে। পিছনের কোন ট্যাবে ফিরে যেতে হলে আবার খুজতে হয় কোথায় সেই ট্যাব যা বেশ বিরক্তিকর ও সময়সাধ্য।
তাই এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার ব্যবহার করা ট্যাবগুলোকে লিস্ট আকারে ট্যাববারে সাজিয়ে রাখতে পারেন ফলে যখন যেটা দরকার হবে সেই বারে ক্লিক করলেই আপনি সেই ট্যাব ওপেন করতে পারবেন কোনো খোজাখুজির প্রয়োজন হবেনা।
৬. Windirstat
আমাদের লিস্টের ৬ষ্ঠ সফটওয়্যার হলো Windirstat। সফটওয়্যার টির সাইজ হচ্ছে ৬ মেগাবাইট মাত্র। এর মাধ্যমে আপনার পিসি ফাকা অর্থাৎ ড্রাইভের বিভিন্ন ফাইল ডিলিট করতে সহায়তা করবে।
যেমন – ধরুন আপনার ড্রাইভে অসংখ্য ফাইল রয়েছে কিন্তু এগুলোর সাইজ কিন্তু আপনাকে ডিফল্ট এক্সপ্লোরার এ দেখানো হয়না।
কিন্তু যখন আপনি এই সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন তখন আপনার ড্রাইভের সকল ফাইলের সাইজ আপনাকে দেখানো হবে এমনকি বিভিন্ন ফাইল ফোল্ডার এর জন্য বিভিন্ন কালারও দেয়া থাকবে।
আর বড় ফাইলের ক্ষেত্রে বড় একটি বক্স এবং ছোট ফাইলের ক্ষেত্রে ছোট বক্স দেখানো হবে আর ওই রঙ চিহ্নিত বক্সে ক্লিক করলে তার সাইজ, এর ভিতরে আর কতো ফোল্ডার আছে সব দেখা যাবে এবং আপনি খুব সহজেই আপনার পিসির বড় ফাইলগুলি খুজে বার করে ডিলিট করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে আর 30 মতো সময় ব্যয় করতে হবেনা বা বিরক্ত হতে হবেনা।
এই কয়েকটি সফটওয়্যার হলো এক কথায়, ছোট লঙ্কার ঝাল বেশি টাইপের। আমার এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করে খুব ভালো লেগেছে।
আপনিও সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করে দেখুন এবং এছাড়া অন্য এমন কোন ছোট মরিচ এর কথা জানলে আমাদের জানাবেন কমেন্ট বক্সে। আমরা অবশ্যই সানন্দে আপনার মতামত গ্রহণ করব।
সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে আজকের মতো শেষ করছি!