Legal Solution for Partition of Joint Property

যৌথ সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়ার আইনী সমাধান সম্পর্কে জানুন

যে কোন বিষয়েরই আইনসমাধান নিয়ে আমরা জটিলতায় পড়ি। কখনো কখনো আইনী পরামর্শ নিতে গিয়ে দুষ্ট লোকের পাল্লায় পড়ে আর্থিক ও মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। যৌথ সম্পত্তি ভাগ করা হলো তেমনি একটি জটিলতার কাজ। 


যৌথ সম্পত্তি ভাগ করে নেয়া সব সময়েই জটিল কাজ। এই সম্পত্তি ভাগ করা নিয়ে আমাদের নানা আইনী জটিলতায় পড়তে হয়। এজন্য আমাদের সবারই যৌথ সম্পত্তি ভাগ করে নেয়ার আইনী সমাধান কিভাবে হয় তা জানতে হবে। এই আইনী সমাধান জানা থাকলে আমাদের কারোই এই সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়ার ঝামেলায় পড়তে হবে না। 

 

আমাদের বাংলাভূমি সাইটে নিয়মিতভাবে আপনাদের সাথে জমি সংক্রান্ত নানা বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এতে করে আপনারা জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন, জমির দাম, জমি কেনা বেচার প্রক্রিয়াসহ নানা গুরুত্বপূর্ন বিষয় খুব সহজেই জানতে পারেন। 

 

এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা আপনাদের সাথে যৌথ সম্পত্তি ভাগ করে নেওয়ার আইনী সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করবো। এর মাধ্যমে আপনারা যৌথ সম্পত্তি ভাগ করার সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন। সেই সাথে পরবর্তীতে আমাদের কারোই যৌথ সম্পত্তি ভাগ করার প্রশ্ন আসলে বিচলিত হতে হবে না। আমরা খুব ঠান্ডা মাথায় এসকল জটিলতায় সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। 

 

আসুন দেখে নিই, যৌথ সম্পত্তির নানা প্রকার আইনী সমাধান। 

 

যৌথ সম্পত্তি কি কি কারনে ভাগ করা হয়? 

১) যৌথ মালিকদের আলাদা আলাদা মালিকানা ভাগ করে নেয়া।

২) পারিবারিক বিরোধ পরিহার করার জন্য।

৩) সম্পত্তির মালিকানায় ৩য় পক্ষের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা তৈরি হলে ঐ সম্পত্তি আলাদা আলাদা ভাগ করে নিয়ে সম্পত্তিতে নিজেদের অংশ বুঝে নেয়া।

৪) সম্পত্তি ভাগ করে নেয়ার সময় উচ্চ মূল্য পাবার জন্য। 

 

কিভাবে যৌথ মালিকানার সম্পত্তি এর মালিকদের মাঝে ভাগ করা হয়?

যৌথ মালিকানার সম্পত্তি বিভাজন করা আইনের মাধ্যমে এই যৌথ সম্পত্তি ভাগ করা হয়। এই আইনের মাধ্যমে সাধারনত পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিভাজন করা হয়ে থাকে। এই সম্পত্তি বিভাজনের সময় সম্পত্তির বিভিন্ন মালিকদের আলাদা আলাদা অংশ বুঝে নিতে হয়। এর ফলে মালিকগন অংশীদার হতে নিজেদের মালিকানা লাভ করে থাকে। 

এই সম্পত্তি বিভাজনের সময় প্রযোজ্য ভারতীয় আইনের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী যার যার মালিকানার অংশ পেয়ে থাকে। 

 

সম্পত্তি ভাগ করার পর নতুন মালিকানা লাভ

প্রতিটি যৌথ সম্পত্তি ভাগের ফলে এর অংশীদাররা নতুনভাবে ঐ সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে। প্রতিটি অংশীদাররা ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী তার নিজ নিজ অংশের ভাগের মালিকানা পেয়ে থাকে। এই সম্পত্তি বিভাজনের সময় সকল অংশীদারের সম্মতিতে সমঝোতার মাধ্যমে লিখিত ঘোষনাপত্র থাকে। 

 


এই সম্পত্তি বিভাজনের ফলে পূর্বের মালিকানা পরিবর্তন হয়ে নতুন অংশীদারের নামে মালিকানা সৃষ্টি হয়ে থাকে। নতুন মালিকরা তাদের আইনী অধিকারের বলে সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষমতা লাভ করে। তারা চাইলেই সম্পত্তি বিক্রি, দান, পরিবর্তন করতে পারে। 

 

সম্পত্তি বিভাজনে বাকি অংশীদারদের মতামত

যখন কোন যৌথ মালিকানার সম্পত্তি সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকে, তখন সকল অংশীদারদের সম্মতি থাকতে হয়। ঐ সম্পত্তি নতুনভাবে নিবন্ধনের সময় লিখিত সমঝোতা চুক্তিমা দিতে হয়।


এই সম্পত্তি নিবন্ধনের সময় সরকার কতৃক নির্ধারিত স্টাম্প ডিউটি ও নির্ধারিত রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দিতে হয়। এই স্টাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি সম্পত্তির মূল্যের উপর নির্ভর করে থাকে। 

 

উত্তরাধিকার আইন অনুসারে সম্পত্তি বিভাজন

উত্তরাধিকারদের মাঝে সম্পত্তি বিভাজন হলে, ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সকল সম্পত্তি বিভাজিত হবে। এই উত্তরাধিকার আইন বিভিন্ন ধর্ম ভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। পিতার মৃত্যুর পর সন্তান এই উত্তরাধিকার আইনে সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে থাকে। 

কোর্টের মাধ্যমে সম্পত্তি ভাগ করার আইনি সমাধান

অনেক সময় সম্পত্তির অংশীদারদের মাঝে সমঝোতা হয় না। তখন বাধ্য হয়ে কোর্টের মাধ্যমে সমাধানের রাস্তা খুঁজতে হয়। কোর্টে আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে সম্পত্তি বিভাজনের জন্য জমা দিতে হয়। তখন কোর্ট সমস্ত কাগজপত্র বিবেচনা করে সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে কোর্ট অর্ডার দিয়ে থাকে। এই কোর্ট অর্ডার অনুসারে সকল অংশীদার নিজ নিজ সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে থাকে। 

 

এভাবে আজ আমরা যৌথ সম্পত্তি ভাগ করার আইনি সমাধান নিয়ে আলোচনা করলাম। পরবর্তী লেখায় আরো বিস্তারিত লেখা থাকবে। তাই আমাদের পেজে নিয়মিত চোখ রাখুন। এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে জমি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।  

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *