Summer Skin Care Tips in Bangla | Oily Skin Care Tips in Summer in Bangla
গরম পড়া মানেই তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীদের শান্তি নষ্ট হওয়া। শীতকালেই এনারা শুধুমাত্র মেকআপ বা শীতের ক্রিম মেখে ভাল থাকেন।
কিন্তু গরম আসা মানেই মুখ ভর্তি তেল, চিটচিটে ভাব, সুন্দর চেহারার অবস্থা খারাপ হয়ে যায় একেবারে। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ, র্যাস, ওপেন পোরস এবং ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যাও হয়।
এই ত্বকের সুবিধা হচ্ছে ত্বকে খুব তাড়াতাড়ি রিংকেল পড়েনা। গরমের সময় তৈলাক্ত ত্বকে যে ক্রিমই ব্যবহার করা হোক না কেন, তা একটু পরই গলে গিয়ে চেহারা কালচে করে ফেলে।
অনেকেই ভাবেন যে গরমের সময় মুখে কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। এর ফলে ত্বক ডিহাইড্রেট হয়ে পড়ে। ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়।
এরজন্য নিয়ম মেনে ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে, যাতে ত্বকের আদ্রতা, উজ্জ্বলতা বজায় থাকে আবার তৈলাক্ত ভাবও কমে যায়। সুপ্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের লেখা সাজানো হয়েছে গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের পরিপূর্ণ গাইডলাইন নিয়ে।
আশা করি, পোস্টটি গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিতে আপনাকে সাহায্য করবে।
১. ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করুন
গরমে তৈলাক্ত ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করা খুব জরুরী। কারণ তৈলাক্ত ত্বক থেকে বেশী তেল নিঃসৃত হয়, ফলে ধুলা-ময়লা সহজেই ত্বকে প্রবেশ করে। এ
রজন্য ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, ওপেন পোরসের সমস্যা দেখা দেয়। তাই ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। এরজন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ২-৩ বার অয়েল ফ্রি ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।
ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলে নিমযুক্ত সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। ফেসওয়াস ব্যবহারের পর ত্বকে অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
বারবার ত্বক পরিষ্কার করা হলে ধুলা-ময়লা ত্বকে জমে ত্বকের কোন ক্ষতি করতে পারেনা। তবে ত্বকে দিনে ২-৩ বারের বেশী ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত নয়।
২. আইসকিউব ব্যবহার
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা কমাতে ত্বকে শসার রস, লেবুর রস, চাল ধোয়া পানি, ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে এগুলো সরাসরি ব্যবহার করতে না চাইলে জমিয়ে আইসকিউব করে ব্যবহার করতে পারেন।
এগুলো ত্বকের ওপেন পোরসের সমস্যা কমাবে, ব্রণ ও র্যাশ হওয়া কমিয়ে দেবে, ত্বক মোলায়েম ও উজ্জ্বল হবে। প্রতিদিন সকালে ও রাতে দুবার আইসকিউব ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ট্যিসু ব্যবহার
ত্বকে অতিরিক্ত তেল জমে যাওয়া খুবই বাজে একটি সমস্যা। যারা ক্লাস বা জবের জন্য সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকেন তারা চাইলেও মুখ ধুয়ে নিতে পারেন না।
আর বাইরে যেতে হলে নুন্যতম মেকআপ বা সানপ্রোটেকশন নিতেই হয়। কিন্তু গরমে এগুলো গলে যায়। আর খুবই তেলতেলে,আর কালো দেখায় ত্বক।
এই সমস্যা থেকে বাচতে সাথে ফেসিয়াল টিস্যু রাখুন। মেকাপের উপর থেকেই ট্যিসু দিয়ে চাপ দিয়ে মুখের বাড়তি তেল মুছে ফেলা সম্ভব।
এছাড়াও আপনি সাথে ওয়েট ট্যিসু রাখতে পারেন, এটাও খুবই কার্যকরী ত্বকের ফ্রেশভাব বজায় রাখার জন্য।
৪. উপকারী প্যাক ব্যবহার
গরমে ত্বকে এক ধরনের জ্বালাপোড়া অনুভূতি হতে পারে, আর অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতা কেড়ে নিয়ে ত্বক বিবর্ন করে তোলে।
বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় ত্বকে কোন কিছু মাখার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আসলে তেল সরে গেলেই ত্বক শুষ্ক ও নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। এই অবস্থা থেকে বাচতে কিছু প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
যেমন তেতুল ও মধুর প্যাক। তেতুল গুলে নিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ৫-১০ মিনিট। এরপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
টকদই ও লেবুর প্যাক লাগাতে পারেন। এছাড়া পাকা টমেটো পেস্ট করে মুখে লাগাতে পারেন। লেবু ও মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
বেসন, টকদই এবং চালের গুড়া মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। এগুলোর যেকোন একটি প্যাক নিয়মিত ত্বকে লাগালে ত্বকের তৈলাক্তভাব কমে যাবে।
৫. অয়েল ফ্রি প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন
ব্রণের সমস্যা এড়াতে এবং বাড়তি তেল উৎপাদন কমাতে ত্বকে অয়েল ফ্রি প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। যে ধরনের ক্রিম বা ফেসওয়াশই ব্যবহার করুন না কেন তা যেন ওয়াটার বেসড নয়।
৬. টোনার ব্যবহার
ত্বকের ঝুলেপড়া রোধ করতে, এবং ওপেন পোরসের সমস্যা থেকে বাচতে টোনার ব্যবহার করুন। চাইলে বাজার থেকে কিনতে পারেন ত্বকের ধরন বুঝে। অথবা বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন।
আপেলের খোসা ছাড়িয়ে পাটায় বেটে নিন, অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। সাথে মধু মিশিয়ে নিন। তারপর ত্বকে ব্যবহার করুন। অথবা মুখ ধোয়ার পর গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন।
৭. স্ক্রাবার
ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে সপ্তাহে ২-৩ দিন স্ক্রাব ব্যবহার করুন। চালের গুড়ার সাথে দুধ মিশিয়ে স্ক্রাবিং করতে পারেন।
৮. জল ও ফল খান
ত্বক ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত জল পান করুন ও নিয়মিত মৌসুমী ফল ও সবজী খান। এতে ভেতর থেকে ত্বক পরিষ্কার থাকবে।
উপসংহার
গরমে ত্বকের সমস্যা বেড়ে যায়, তাই প্রয়োজন হয় বাড়তি যত্ন। উপরিউক্ত উপায়ে যত্ন নিলে সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব সহজেই। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।
আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।