ফ্লাটের পরিবর্তে নিজের জমি কেনার সুবিধা কি?

নিজের একটা আবাসন থাকা আমাদের সবার মনের একটি বাসনা। আমরা সবাই চাই নিজের সঞ্চয় থেকে প্রথমেই একটা আবাসনের ব্যবস্থা। অতীতে আমরা জমি কিনে বাড়ি করাটাই স্বাভাবিক নিয়ম ছিলো। আধুনিক জীবনে স্থান নিলো ফ্লাট। এখন কেউ জমি কিনছেন আর কেউ কিনছেন ফ্লাট। কেউ বলছেন জমি কেনা ভালো কেউ ভাবছেন ফ্লাট কেনা। তাই যারা নতুন করে বিনিয়োগ করতে চান তারা সংশয়ে আছেন ফ্লাট কিনবেন নাকি জমি। 

 

সত্যিকারভাবে জমি কেনা বা ফ্লাট কেনার আলাদা আলাদা উপকারীতা ও অপকারীতা দুইটাই আছে। আপনার বিনিয়োগের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে আপনার জমি কেনার ও ফ্লাট কেনার সুবিধা অসুবিধা নির্ভর করে থাকে। তাই জমি বা ফ্লাট কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করে তার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। 

 

আমরা আমাদের সাইটে নিয়মিতভাবে জমি সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এরই ধারাবাহিতায় আজ আমরা জমি কেনা বা ফ্লাট কেনা কোনটি ভালো তার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এর ফলে আমরা সহজেই বুঝতে পারবো, আমদের কি জমি কেনা ঠিক হবে নাকি ফ্লাট কেনা। আসুন দেখে নিই, জমি ও ফ্লাট কেনার কিছু বিষয়। 

 

জমি ও ফ্লাট কেনার সুবিধা ও অসুবিধা 

নিচে আমরা জমি ও ফ্লাট কেনা সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি ।

 

জমি ও ফ্লাটের দাম

জমির দাম তার অবস্থান, সাইজ, ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে থাকে।  

ফ্লাটের দাম তার অবস্থান, সাইজ, সুবিধা, দেখতে কেমন, ডেভেলপার কোম্পানীর সুনাম এসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। 

 

দাম বৃদ্ধির পরিমান

জমি দাম সাধারনত প্রতি বছর বাড়তেই থাকে । জমি কিনার পর ঐ জমির দাম কয়েক বছর পরে বাড়তিই পাবেন।

ফ্লাট একটি নির্দিষ্ট উপাদান দিয়ে তৈরি। তাই এর উপাদানের স্থায়ীত্ব দিন দিন কমতে থাকে । এজন্য বিশেষ কিছু সময় ব্যতীত ফ্লাটের দাম বাড়ে না। বরঞ্চ অনেক বছর পর ফ্লাট ভেঙ্গে আবার নতুন স্থাপনা করতে হয়।

 

ব্যাংক লোন নেয়ার সুযোগ 

জমি কেনার সময় ব্যাংক লোন নেয়ার সুযোগ কম থাকে। তাই জমি কেনার বিনিয়োগ করার সময় ব্যাংকের সাপোর্ট পাওয়া যায়। 

ফ্লাট কেনার সময় ব্যাংকগুলি সহজ শর্তে ঋন দিয়ে থাকে। তাই ফ্লাট কেনার বিনিয়োগ করা তুলনামূলক সহজ। 

 

সম্পদ হতে নিয়মিত আয় করা

জমি থেকে নিয়মিত আয় পেতে হলে ঐ জমিতে স্থাপনা বানাতে হবে এবং তা ব্যয়বহুল। তাই জমি হতে তেমন আয় করা সম্ভব হয় না।

ফ্লাট ভাড়া দিয়ে খুব সহজেই নিয়মিত আয় করা যায়। এর ফলে বিনিয়োগ কিছুটা উঠে আসে, সেই সাথে ব্যাংক ঋন থাকলে তা পরিশোধ করতে সুবিধা পাওয়া যায়। 

ভবিষ্যত মূল্য কেমন হবে 

জমির দাম ক্রমবর্ধমান হওয়াতে জমির ভবিষ্যতে জমির মূল্য অনেক বেড়ে যায়। এভাবে জমিতে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া যায়। তাই জমি কেনা হলে তার ভবিষ্যত মূল্য বেশি হয়ে থাকে। 

ফ্লাটের দাম ক্রমবর্ধমান নয়। ফ্লাটের উপকরনের একটা স্থায়ীত্বকাল থাকায় ধীরে ধীরে এইটির আয়ু কমতে থাকে আর মূল্য কমতে থাকবে। তাই ফ্লাটের ভবিষ্যত মূল্য কম হয়ে থাকে। 

 

বাড়ির ডিজাইন পরিবর্তন করার সুবিধা

জমি একান্ত নিজের সম্পত্তি হওয়ায় যে কোন সময় আপনার পছন্দমত পরিবর্তন করতে পারবেন। উচু দালান করতে পারবেন। নকশা পরিবর্তন করতে পারবেন। এভাবে জমিতে আপনার আবাসনকে আপনার মত করে সব সময় পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। 

ফ্লাটে একই ভবনে অনেকের সাথে থাকার কারণে আপনি আর তেমন কোন পরিবর্তন করতে পারবেন না। কোন প্রকার বৃদ্ধি বা নকশা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। 

এভাবে আমরা জমি ও ফ্লাট কিনার সুবিধা ও অসুবিধাগুলি দেখলাম। এখান থেকে দেখে বুঝেশুনে আপনি আপনার মত করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন । আপনার চাহিদার উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোনটি কেনা ভালো হবে? ফ্লাট নাকি জমি। এভাবে দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নিলে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন সেই সাথে লাভবান হতে পারবেন। 

 

আজ আমরা জমি বা ফ্লাট কোনটি কেনা ভালো তা নিয়ে আলোচনা করলাম। আমাদের পরবর্তী লেখায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে, তাই আমাদের সাইটে নিয়মিত চোখ রাখুন। এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে জমি থেকে আয় করার ব্যবস্থা করতে পারে। 

জমি নিয়ে আরো অনেক লেখা পেতে আমাদের সাইটের অন্য লেখাগুলি দেখুন। আমাদের লেখা ভালো লাগলে বা যেকোন মন্তব্য আমাদের ফেসবুক পাতায় লিখুন। আমরা আপনার মন্তব্যের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবো। 

Leave a Comment