Kojagori Laxmi Puja 2023: লক্ষ্মী পূজায় ঘন্টা বাজাতে নেই কেন? জানুন কারণটা

ক্ষ্মী পূজা সারা বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি শরতের শেষ পূর্ণিমায় এই কোজাগরী লক্ষ্মী পূজাতেও তাঁকে বিশেষভাবে আরাধনা করা হয়। তবে এখানে একটা কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় কখনোই উচ্চ আওয়াজ করা উচিত নয়।

যেমন কাঁসর, ঘন্টা বাজাতে নেই তবে এর পিছনেও রয়েছে পৌরাণিক কাহিনী ও ব্যাখ্যা। তিনি অর্থাৎ দেবী লক্ষ্মী খুবই শান্তিপ্রিয় একজন দেবী, শুধুমাত্র শঙ্খ ধ্বনিতে তাঁকে আরাধনা করা হয়, কোনরকম কোলাহল, উঁচু আওয়াজ তিনি পছন্দ করেন না।

লক্ষ্মী পূজায় ঘন্টা বাজাতে নেই কেন? জানুন কারণটা
লক্ষ্মী পূজায় ঘন্টা বাজাতে নেই কেন? জানুন কারণটা

যদি সপ্তাহের মধ্যে বার হিসেব করা যায় তাহলে বৃহস্পতি বারে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয় বলে এই বৃহস্পতিবার কে লক্ষ্মী বার হিসেবেও অনেকে অভিহিত করেছেন। এই দিন অনেক গৃহস্থ বাড়ির মহিলারাই উপোস থেকে সকাল সকাল স্নান সেরে মা লক্ষ্মীর পূজা করে দিনের শুরু করেন এবং রান্নাবান্নায় মনোযোগ দেন।

অভাব অনটন দূর হবে এই নিয়ম মেনে লক্ষ্মী পূজা করলে

নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন লাল রঙের শাড়িতে এবং পায়ে আলতা পরেন, সিঁদুর দিয়ে সিঁথি ভরিয়ে তোলেন, লক্ষ্মীর পাঁচালী পড়েন, ভক্তি ভরে দিন মা লক্ষ্মীর পূজা করতে দেখা যায় অনেককেই।

বিভিন্ন নিয়ম পালন করার পাশাপাশি মা লক্ষ্মীর পূজায় কখনোই ঘন্টা বাজাতে নেই যেমন, তেমন লোহার বাসন ব্যবহার করতে নেই, স্টিলের বাসন ব্যবহার করতে নেই, তার পাশাপাশি কাঁসর, ঘন্টাও বাজাতে নেই। তবে আপনি কি জানেন কেন এই লক্ষ্মী পূজাতে কাঁসর, ঘন্টা বাজাতে নেই ? অন্যান্য পূজাতে তো ঘন্টা বাজালেও এই পূজাতে কোনভাবেই কাঁসর ঘন্টার জায়গা নেই।

শুভ কোজাগরি লক্ষ্মী পূজা শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক এর পৌরাণিক কাহিনী ও ব্যাখ্যা:

পৌরাণিক কাহিনী:

পুরান মতে ঘন্টা কর্ণ নামে এক দেবতা পূজনীয় লক্ষ্মী দেবীকে দেখে অশালীন আচরণ করেছিলেন। যেখানে দেবীকে গোটা দেবলোক পূজা করেন সেই দেবীকে কিনা অপমান করেন ঘন্টা কর্ণ ? এই ঘটনায় দেবী লক্ষ্মী ঘন্টা কর্ণের উপরে বেজায় রেগে যান, সেই থেকে মা লক্ষ্মীর পূজায় কোন ব্যক্তি ঘন্টা বাজালে তার উপরে বেজায় ক্ষিপ্ত হন পদ্ম আসনে অধিষ্ঠিতা দেবী লক্ষ্মী। তাই যদি সংসারে উন্নতি সাধন করতে চান তাহলে কখনোই ভুল করেও ঘন্টা বাজাবেন না এই লক্ষ্মী পূজাতে।

আরো অন্যান্য বিভিন্ন পূজাতে ঘণ্টা বাজালেও এই লক্ষ্মী পূজাতে ঘন্টা বাজানো একেবারেই নিষিদ্ধ। দেবীর রোশানলে না পড়তে চাইলে কখনোই লক্ষ্মী পূজার সময় ঘন্টা বাজানো উচিত নয়।

খুবই শান্তিপূর্ণভাবে শুধুমাত্র শঙ্খ ধ্বনিতে দেবীকে আরাধনা করতে হয়, আর চারিদিকে নিস্তব্ধ একটা পরিবেশ বজায় রাখতে হয়। কোন রকম কোলাহল, চেঁচামেচি, ঝগড়াঝাঁটি এগুলি পছন্দ করেন না দেবী, তাই যে সংসারে এগুলি অনবরত চলতে থাকে সেই সংসারে তিনি অবস্থান করেন না।

কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় এই পদ্ধতি মানলে হবে মা লক্ষ্মীর প্রচুর কৃপা

আরও একটি কারণ:

লক্ষ্মী পূজায় ঘন্টা না বাজানোর সাথে সাথে লোহা, বা স্টিলের কোন কিছু ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। সে ক্ষেত্রে লোহা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে লোহা দিয়ে অলক্ষ্মীর পূজা করা হয়, তাই লোহা ব্যবহারের ফলে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।

পূজায় যে ঘন্টা বাজানো হয় সেই ঘন্টাও কিন্তু এক ধরনের লৌহজাত পদার্থ থেকেই তৈরি। আর এই দৃষ্টিকোণ থেকে লক্ষ্মী পূজায় ঘন্টা ব্যবহার না করার একটি কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু এটা বিশ্বাস করা হয় যে, যা পুরোটাই আধ্যাত্মিক এই আধ্যাত্মিক বিশ্বাস যতক্ষণ না কর্ম তে প্রকাশ পাচ্ছে ততক্ষণ এটা কারো বাস্তব জীবনে কোনদিন প্রভাব ফেলে না, আর ফেলবেও না। তাই এটি লক্ষ্মীপূজায় এই লোহা বা স্টিলের জিনিসপত্র বা ঘন্টা বাজাতে নিষিদ্ধ করার বাস্তব কারণ।

নারায়ণের পত্নী মা লক্ষ্মী দেবী, তিনি ধন, সম্পদ ও ঐশ্বর্যের দেবী। মা লক্ষ্মীর পূজা ও আরাধনা করা হয় এর সাথে সাথে বছরের বিভিন্ন সময়ে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়ে থাকে। হিন্দু মহিলারা এই দিনে উপবাস রেখে সংসারের মঙ্গল কামনা এবং ধন সম্পদ বৃদ্ধির আশায় মা লক্ষ্মী ও অন্নপূর্ণা দেবীর পূজা করে থাকেন।

কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় মনের মত ফল পেতে এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না

পূজার মধ্যে দিয়ে মা লক্ষ্মীকে প্রসন্ন করতে পারলেই সেই সংসারে ধন-সম্পদ উপচে পড়ে বলে জানা যায়। আর কোন কিছুরই অভাব থাকে না, মা লক্ষ্মীর পূজা করতে গেলে অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়, তার মধ্যে একটি অন্যতম নিয়ম হলো লক্ষ্মীপূজায় ঘন্টা বাজানো একেবারে নিষিদ্ধ।

⭐ দেবী লক্ষ্মী এই বিষয়ে বিশেষভাবে রেগে যান তাই কখনোই আপনি চাইবেন না যে আপনার ঘরের লক্ষ্মী আপনার উপরেই অসন্তুষ্ট হন, আপনি তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য এত কিছুর আয়োজন করেন আর সামান্য একটু ঘন্টা বাজানোর জন্য তাঁকে যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে এটা আপনি কখনোই মেনে নিতে পারবেন না, তাই না ! সেই কারণে ছোট থেকে বড় সকলকে এ বিষয়ে অবগত করান যে, লক্ষ্মী পূজায় কখনোই কোন কোলাহল, চেঁচামেচি, ঝগড়াঝাঁটি থেকে শুরু করে ঘন্টা, কাঁসর বাজানো একেবারেই নিষিদ্ধ।

আর্থিক সমস্যা দূর করতে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজায় এই কাজগুলি করুন

তাই ছোট বাচ্চারাও যখন পূজাতে অংশগ্রহণ করবে তখন তারা কোনভাবেই ভুল করেও এই কাজটি করে বসবে না। এর ফলে আপনার সংসারে কোন অমঙ্গল ও আসবেনা। বাচ্চাদের সাথে পূজা সম্পর্কে আলোচনা করুন জানান যে, কোন নিয়ম মানতে হয়, আর কোন কাজ করতে নেই। তাহলে তারাও কিন্তু আপনাকে পূজার কাজে সহযোগিতা করতে পারে।

সমস্ত নিয়ম মেনে দেবীকে সন্তুষ্ট করতে যা যা করার প্রয়োজন তা করেই আপনি নিজে থেকেই কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা সম্পন্ন করতে পারেন। এছাড়া সারা বছর যে লক্ষ্মী পূজা করছেন তার ফলাফল তো আপনি অবশ্যই পাচ্ছেন। দেবীকে সন্তুষ্ট করুন সহজ উপায়ে, তিনি অল্পতেই সন্তুষ্ট। তাই নিজের ঘরে সবসময় সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি বজায় রাখতে মা লক্ষ্মীকে সন্তুষ্ট রাখুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top