Things to Know Before Starting a New Business: অর্থ উপার্জন এবং সাবলম্বী হওয়ার জন্য আমরা বিভিন্ন কাজ করতে আগ্রহী। এর মধ্যে অন্যতম ও প্রানীন পেশা হচ্ছে ব্যবসায়।
আজকাল ব্যবসায়ের ধরনে পরিবর্তন এসেছে, ব্যবসায় বলতেই স্থায়ী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ভার্চুয়ালি ব্যবসায় করা যায়। কিন্তু সবার ব্যবসায় তো অনলাইন ভিত্তিক নয়।
অনলাইন ছাড়া অফলাইন বা স্থায়ী প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানই বেশী। নতুন কোন ব্যবসায় শুরু করার আগে প্রথমেই আমরা ভাবি যে, ব্যবসায়টা কিসের হবে, আর তারপরেই আমরা ভেবে থাকি লাভ কেমন হবে।
অন্যভাবে বললে বলা যায়, আমরা যখন দেখি যে কোন একটি ব্যবসায় করে কেউ অনেক অর্থ রোজগার করছে, অথবা কোন নির্দিষ্ট প্রকারের ব্যবসায়ে আয়ের সুযোগ বেশী তখন সেই প্রকারের ব্যবসায় করতে আমরা আগ্রহী হই।
আজ আমাদের পোস্ট সাজানো হয়েছে মূলত তাদের জন্য যারা চিন্তা করছেন নিজের একটি ব্যবসায় শুরু করবেন। কিন্তু এ বিষয়ে সব পরিকল্পনা এখনো করে উঠতে পারেন নি। আপনাদের জন্যও উপকারী পোস্ট হবে আশা করি।
ব্যবসায় শুরুর আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানা উচিত:
১. পণ্যের কোয়ালিটি ও নতুনত্ব
আপনি যে পণ্য নিয়েই ব্যবসায় শুরু করতে চান না কেন, আপনার আগে কেউ না কেউ ব্যবসায়টি হয়ত ইতোমধ্যেই করছে। আর এজন্যই আপনি ব্যবসায়টি শুরু করার সাথে সাথেই প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবেন।
বাজারে যদি আগে থেকেই আপনার পরিকল্পনাকৃত ব্যবসায়ের পণ্যটির যোগান থেকে থাকে, তাহলে অন্য কোথাও থেকে না কিনে কেন কেউ আপনার থেকে পণ্য কিনবে? এটা মাথায় আনুন প্রথমেই।
আপনার পণ্যের কোয়ালিটি, ডিজাইন, ব্যতিক্রমী কোন সংযোজন, পণ্যের সাথে আনুষঙ্গিক কোন সুবিধা এমন কিছু আপনাকে পণ্যের ভিতর সংযোজন করতে হবে যাতে অন্যদের চেয়ে আলাদা মনে হয়, এবং ক্রেতারা আপনার পণ্যটিই কিনতে চায়।
২. চমৎকার পণ্যসজ্জা
আপনি যদি কোন প্রতিষ্ঠান শুরু করেন, তবে প্রতিষ্ঠান বা দোকানের পণ্যসজ্জার দিকে নজর দিতে হবে। গতানুগতিক না হয়ে পণ্যসজ্জা এমন হবে, যেন মানুষ এটা দেখেই আপনার প্রতিষ্ঠানে আসে, এবং পণ্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়।
মানুষ সুন্দরের পূজারী, তাই সুন্দর করে সাজানো দোকান বা প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই ক্রেতাদের ভীড় হবে।
৩. পণ্যের মূল্য
পণ্যের দাম নির্ধারণ হয় পণ্যের পিছে খরচ হওয়া যাবতীয় ব্যয় ও প্রত্যাশিত মুনাফা যোগ করে। মুনাফাই ব্যবসায়ের প্রধান লক্ষ্য।
কিন্তু নতুন ব্যবসায় শুরু করতে হলে আগেই লাভের পুরো হিসেব কষলে চলবে বা। এরজন্য প্রথমে পণ্যের উৎপাদন খরচ ও আনুষঙ্গিক খরচের সাথে ন্যুনতম মুনাফা যোগ করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করুন।
প্রথমে লাভ কম বা না থাকলেও হতাশ হবেন না। আগে পরিচিতি বাড়িয়ে নিন। অবশ্যই এরপর থেকে সবাই আপনার কাছ থেকেই পণ্য কিনবে।
৪. পণ্যের যোগান
আপনি যখন পণ্য নিয়ে ব্যবসায় আরম্ভ করবেন শুরুতেই ভেবে নিন, পণ্যটি কোথা হতে সংগ্রহ করবেন, স্থানীয় বাজার, কারখানা নাকি অন্যস্থান থেকে নিয়ে আসা বা বিদেশী পণ্য নিয়ে ব্যবসায় শুরু করবেন।।
স্থানীয় পণ্য হলে প্রথমেই অনেক পণ্য নিয়ে ব্যবসায় শুরু করবেন না। কারণ হচ্ছে যেহেতু স্থানীয় ব্যবসায়, তাই পণ্যের চাহিদা বাড়লেই মজুদ বাড়ানো সম্ভব হবে।
আর যদি পণ্য অন্য প্রদেশ, বা দেশ থেকে নিয়ে আসা হয়, তবে পণ্যটি কোন মাধ্যমে আনলে সিবিধা হবে, চাহিদা বাড়লে, দেশের রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হলে কিভাবে পণ্যের যোগান দেবেন সেটা আগেই ভেবে নিন।
অনেক পণ্যই প্রথমে সাশ্রয়ী মূল্যে এবং সহজে পাওয়া যায় প্রথমে, পরে সেগুলো পাওয়া কষ্টকর হয় বিধায় পণ্যের যোগানের অভাবে ব্যবসায় মুখ থুবড়ে পড়ে৷
তাই যেকোন পরিস্থিতিতে যোগান ঠিক থাকবে কিনা সেটা ভালভাবে চিন্তা করুন।
৫. ব্যবসায়ের প্রচার ও বিজ্ঞাপন
স্থানীয় হোক বা ভার্চুয়াল ব্যবসায়, আপনার ব্যবসায়ের পণ্যের গুনগত মান, দাম ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে মানুষ্কে জানাতে হলে অবশ্যই প্রচার ও বিজ্ঞাপন প্রয়োজন হবে।
এরজন্য সাইনবোর্ড, দোকানের নাম, কার্ড, লিফলেট, স্থানীয় টিভি চ্যানেল এ বিজ্ঞাপন, সামাজিক – যোগাযোগ মাধ্যমে পণ্যের নামে পেজ, বিজ্ঞাপন, ছবি, পণ্য কেনার নিয়মাবলি ইত্যাদি গুছিয়ে সুন্দরভাবে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
কোন মাধ্যমে প্রচার বা বিজ্ঞাপন দিলে খরচ কম হবে কিন্তু প্রচার বেশী হবে সেটা ভাবতে হবে। কারণ খরচ বেশী হলে তা পণ্যমূল্যের উপর প্রভাব ফেলবে এবং ক্রেতারা পণ্যের দাম।বেশী হলে প্রাথমিক অবস্থায় পণ্য কিনতে আগ্রহী হবেনা।
৬. ব্যবসায়িক নীতি ও সদাচরন
প্রতিটি ব্যবসায়ের কিছু আলাদা নীতি রয়েছে। যেমন বাকি দেওয়া হয় কিনা, একদর কিনা, বিক্রিত পণ্য পরিবর্তনের সুযোগ আছে কিনা, বিক্রীত পণ্যে অসুবিধা থাকলে তা মেরামত করে দেওয়া হবে কিনা, কোন অভিযোগ থাকলে ক্রেতারা কোথায় জানাবেন ইত্যাদি।
এগুলোই একটি ব্যবসায়ের সাথে আরেকটি ব্যবসায়ের সুনাম ও লাভজনকতার ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দেয়। মানুষ শুধু পণ্যের গুনগতমান ও দামই দেখেনা, পণ্যের ক্রয়ের আনুষঙ্গিক নীতিমালা ও বিক্রেতার সদাচরণকেও গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকে।
অনেক বিক্রেতার পণ্যের মান ভাল হলেও আচরণ খারাপ হওয়ার কারণে তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয়ে ক্রেতারা আগ্রহী হয়না। তাই এই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখুন।
৭.প্রতিষ্ঠানের নাম মানানসই হওয়া
নামে কিবা এসে যায়, এই কথাটা পণ্যের ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে একদমই সত্য নয়। পণ্যের মানের সাথে নামে মিল থাকতে হবে। এবং পণ্যের বৈশিষ্ট্য, বাহ্যিক অবয়ব, স্থান বা ঐতিহ্যের সাথে মিল রেখে পণ্যের নামকরণ করতে হবে।
যেমন শাড়ীর দোকান হলে চারুলতা, জামদানী পল্লী, শাড়ী কুটির নামগুলো সুন্দর। কিন্তু যদি গ্রোসারি আইটেম হয় তবে পণ্য কুটির, বাজার-সদাই, হাটবাজার, এরকম নাম দিতে হবে।
নাম সুন্দর ও রুচিশীল না হলে অনেক ক্রেতাই সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু কিনতে আগ্রহ দেখান না। তাই এ ব্যাপারে অবশ্যই সাবধান থাকুন।
৮. মূলধনের যোগান
মূলধনের যোগান একটি ব্যবসায়ের প্রাণ। তবে ব্যবসায় যদি অনলাইনে করতে চান, প্রথমে খুব মূলধন হলেও চলবে।
আর যদি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান নিতে চান, তাহলে প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, ব্যবসায়ের ধরন, পণ্যের যোগান অনুযায়ী কিরকম মূলধন প্রয়োজন এবং কোন মাধ্যম থেকে যোগাড় করবেন, নিজস্ব অর্থ নাকি লোন নেবেন তা অবশ্যই ঠিক করে নিন।
উপসংহার
নতুন ব্যবসায় আরম্ভ করতে চাইলে যে বিষয়গুলো জানা আবশ্যক সে বিষয়ে পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সব কিছুই হয়ত উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু যা কিছু প্রধান একটি ব্যবসায়ের জন্য তা বর্ননা করা হয়েছে। আশা করি নতুন ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত গ্রহনে পোস্টটি উপকারে আসবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ব্যবসা শুরু করতে চাইছি। একজন বিশিষ্ট ব্যবসা বিদ মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাইছি। যিনি ধারণা দেন।