West Bengal Digital Ration Card 2024 (ডিজিটাল রেশন কার্ড 2024): সাধারণত রেশন কার্ড অতি সাধারণ হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ভারত ডিজিটাল রেশন কার্ডের একটি ধারণা চালু করেছে। যে ধারণার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দার রেশন কার্ড টি ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপলব্ধ করা হবে। এই ডিজিটাল রেশন কার্ড বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের নাগরিকরা অনেক বেশি সুবিধা পাবেন।
কারণ হলো পুরনো কাগজের রেশন কার্ড সাথে করে বহন করতে হবে না। এছাড়াও ডিজিটাল রেশন কার্ডের মাধ্যমে সেই বাসিন্দার পক্ষে যেকোনো সময় রেশন কার্ড সরবরাহ করা সম্ভব হবে। রেশন কার্ড কে ডিজিটাল রেশন কার্ড করার এই প্রক্রিয়া দারুন একটি চিন্তা ধারা। যেটা অনেকদিন ধরে ভারতে চলছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই সমস্ত নাগরিকদের জন্য বিশেষ ধরনের কুপনের ব্যবস্থা করেছে। যাদের কাছে এখনো পর্যন্ত ডিজিটাল রেশন কার্ড 2024 (West Bengal Digital Ration Card 2024) এসে পৌঁছায়নি। নাগরিকরা জেলাসদর, বিডিও, এসডিও, অথবা সংশ্লিষ্ট পৌরসভার বিভাগ থেকে এই কুপনের জন্য আবেদন করতে পারেন।
তাছাড়া সরকার লকডাউন এর সময় কালে ভর্তুকিযুক্ত হারে রেশন সরবরাহ করেছে। লকডাউন এর সময় ছয় মাসের জন্য মানুষ রেশন পাবেন প্রতি কেজি রেশন ৫ টাকা করে।
ডিজিটাল রেশন কার্ডের ইতিহাস সম্পর্কে:
অনেকদিন থেকেই রেশন কার্ড ডিজিটাল করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে, ডিজিটাল ইন্ডিয়া (Digital India) কথাটা প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে। ২০২১ সালে ২৭ শে জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল রেশন কার্ড (West Bengal Digital Ration Card) অথবা খাদ্যসাথী প্রকল্পের (Khadya Sathi Scheme) পাঁচ বছর পূর্ণ হল।
আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার খাদ্য সাথী দিবস (Khadya Sathi Day) হিসেবে পালন করছে। পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল রেশন কার্ড অথবা খাদ্য প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার এই মহামারীর সময় লকডাউনে বাংলার ১০ কোটি নাগরিকদের খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে।
তাছাড়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রত্যেককে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রকল্পটি ২০১৬ সালে ২৭ শে জানুয়ারি চালু করা হয়েছিল।
খাদ্যসাথী প্রকল্পের (ডিজিটাল রেশন কার্ড 2024) উদ্দেশ্য:
পশ্চিমবঙ্গের ডিজিটাল রেশন কার্ড অথবা খাদ্য সাথী প্রকল্প (Khadya Sathi Scheme) চালু করার মূল উদ্দেশ্য ছিল ২ টাকা কেজি প্রতি চাল, গম দেওয়া। তবে এ প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গে প্রায় সাত কোটি মানুষের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। হিসেব অনুযায়ী যা পশ্চিমবঙ্গের ৯০ শতাংশ জন সংখ্যা নিয়ে গঠিত।
পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল রেশন কার্ডের সুবিধা:
১) যাদের এপিএল রেশন কার্ড আছে তারাও এর সুবিধা পাবে।
২) পশ্চিমবঙ্গ বিপিএল রেশন কার্ড বেনিফিসিয়ারি।
৩) AAY পারিবারিক রেশন কার্ড।
৪) অন্নপূর্ণা সুবিধাভোগী (PHH ও SPHH)
৫) পশ্চিমবঙ্গ RKSY 1 ও RKSY 2 রেশন কার্ড।
৬) এই রেশন কার্ডের মাধ্যমে সুবিধাভোগী খুব কম দামে সরকারের কাছ থেকে খাদ্যশস্য পাবেন।
৭) সুবিধাভোগী এই রেশন কার্ডের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারবেন।
৮) এই ডিজিটাল রেশন কার্ড, নতুন সনাক্তকরণ করার ক্ষেত্রেও কাজে লাগে। যেমন একটি আধার কার্ড, ভোটার আইডি, অথবা পাসপোর্ট।
৯) এই ডিজিটাল রেশন কার্ডের মাধ্যমে আমরা সরকারের আসন্ন প্রকল্পগুলিতেও অংশগ্রহণ করতে পারি। তার সাথে সাথে সর্বোচ্চ সুবিধা গুলি পেতে পারি।
১০) নতুন সিম কার্ডড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এই সমস্ত ডকুমেন্টস গুলি তৈরি করার সময় কিন্তু এই রেশন কার্ডের প্রয়োজন পড়ে।
১১) রেশন কার্ড সরকারি বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তি করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়।
রেশন কার্ড সম্পর্কে বেশ কিছু নির্দেশাবলী:
১) তাছাড়া ই-রেশন কার্ড 2024 (WB e-Ration Card 2024) পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর এর দেওয়া একটি প্রিন্টেড কপি। এই ই-রেশন কার্ড এবং অরিজিনাল ডিজিটাল রেশন কার্ড (Digital Ration Card) এর বৈধতা কিন্তু সমান।
২) আপনার গ্রামের নির্দিষ্ট ন্যায্যমূল্য রেশন দোকানে রেশন দ্রব্য এর পাশাপাশি কেরোসিন নেওয়ার জন্য আপনার এই ই-রেশন কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবেন।
৩) গ্রাহকদের রেজিস্টারড মোবাইল নাম্বারে পাঠানো এই ই-রেশন কার্ডের সফটকপি অরিজিনাল রেশন কার্ডের প্রমানপত্র হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এবং তার সাথে ন্যায্যমূল্য এর রেশন দোকান গুলি সেই ব্যক্তিকে রেশন নায্যমূল্যে নির্দিষ্ট রেশন দিতে বাধ্য থাকবে।
৪) রেশন কার্ড পশ্চিমবঙ্গের অফিশিয়ল খাদ্য সরবরাহ দপ্তর ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটটি হল: wbpds.gov.in / wbpds.wb.gov.in/ food.wb.gov.in
৫) আর একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রেশন দ্রব্য নেওয়ার সময় গ্রাহকের রেজিস্টার্ড মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি পাঠানো হয়, সেই ওটিপি রেশন ডিলারকে দিয়ে নির্দিষ্ট দ্রব্যের রেশন গ্রাহক নিতে পারবে।
এক কথায় বলতে গেলে এই রেশন কার্ডের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ আমাদের ডিজিটাল রেশন কার্ড দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করার জন্য প্রতিনিয়ত কার্ডের বারকোড গুলি এবং তথ্যগুলি মুছে যেতে থাকে। একটা সময়ে গিয়ে দেখা যায় পুরো রেশন কার্ড টাই সাদা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সেই রেশন কার্ড দিয়ে রেশন দ্রব্য নেওয়ার সময় খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
আপনার কাছে যদি এই ই-রেশন কার্ড (e-Ration Card) থাকে তাহলে আপনাকে অরিজিনাল রেশন কার্ড টি বারবার রেশন দোকানে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই ই-রেশন কার্ডের সাহায্যে আপনি আপনার রেশনের সমস্ত দ্রব্য পেয়ে যাবেন অনায়াসেই।
সবশেষে বলা যায় যে, এই ডিজিটাল খাদ্য সুরক্ষা কার্ডের মাধ্যমে অথবা রেশন কার্ডের মাধ্যমে একদিকে যেমন আমরা রেশনের সমস্ত দ্রব্য পেয়ে থাকি যেমন- চাল, ডাল, আটা, চিনি, কেরোসিন, ইত্যাদি তেমনি অন্যদিকে এই খাদ্য সুরক্ষা কার্ড টি কে আমরা আমাদের পরিচয় পত্র হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি।
যেমন ধরুন, আপনি অনলাইনে প্যান কার্ডের জন্য আবেদন করবেন, সেক্ষেত্রেও কিন্তু আপনি আপনার পরিচয় পত্র হিসেবে আপনার এই খাদ্য সুরক্ষা কার্ড টিকে ব্যবহার করতে পারেন।
তাছাড়াও আধার কার্ডের জন্য আপনি আবেদন করবেন সেক্ষেত্রেও কিন্তু আপনার এই ডিজিটাল রেশন কার্ড অনেকটাই সাহায্য করবে। এই রেশন কার্ড দিয়েও আপনি আধার কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই ডিজিটাল রেশন কার্ড আপনার কত রকম কাজ করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে।
তবে এই ডিজিটাল রেশন কার্ড যদি আপনার না থাকে, তাহলে অনলাইনে খুব সহজেই আবেদন করতে পারবেন আপনি আপনার মোবাইল থেকে খুব সহজে। সহজ কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করে এই ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
Official Website | https://wbpds.wb.gov.in/ |