শিশু দিবস 2023 (Childrens Day 2023 Date Time and Significance) 2023 শিশু দিবস ইতিহাস এবং জানুন শিশু দিবস কেন পালন করা হয়? শিশু দিবস তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য শিশু দিবস গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।
প্রতিটি শিশুই কিন্তু ভবিষ্যৎ এই দেশের জন্য। তার পাশাপাশি নবজাগরণে শিশুরাই আগামী দিনের আলো বলা যেতে পারে, আর পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে দেশকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য বর্তমান শিশুদের গুরুত্ব দেওয়াটা বিশেষভাবে প্রয়োজন। শিশুদের সমস্ত দিক থেকে উজ্জীবিত করতে এবং তাদের অধিকার, সুরক্ষা ও শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়ার জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে পালন করা হয়।
তবে শুধুমাত্র শিশুদের উদ্দেশ্যে এই দিনটি উদযাপন করা হয় না, এই দিনে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু কেও স্মরণ করা হয়, কেননা তিনি ১৪ ই নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর ১৪ ই নভেম্বর শিশু দিবস অথবা চিলডেন্স ডে পালন করা হয়।
পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু ১৮৮৯ সালের ১৪ ই নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। শিশু দের প্রতি তার গভীর স্নেহ এবং ভালোবাসার কথা আমরা সকলেই কিন্তু জানি। তার শিশুদের প্রতি ছিল খুবই স্নেহ ও ভালবাসা, তিনি শিশুদের ভীষণই ভালোবাসতেন, যে কারণে তিনি তাদের কাছে চাচা নেহেরু নামেও পরিচিত ছিলেন।
এছাড়া তিনি বলেছিলেন শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। আর সেই কথা আজও প্রযোজ্য, তিনি সর্বদা শিশুদের শিক্ষা এবং তাদের কল্যাণের উপর নজর দিয়ে তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করতেন। আর তাইতো তাকে স্মরণ করতে প্রতিবছর তারই জন্মদিনে ভারতে পালিত হয় শিশু দিবস। আর এছাড়াও ভারতে এই দিনটি বাল দিবস (Bal Diwas) নামেও পরিচিত।
শিশু দিবসের ইতিহাস 2023:
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
শিশু দিবসের ইতিহাস অনুসারে জানা যায় যে, রাষ্ট্রসংঘ ১৯৫৪ সালের ২০ শে নভেম্বর শিশু দিবস হিসাবে পালন করার জন্য ঘোষণা করেছিল। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ভারতীয় পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই ২০ নভেম্বর দিনটি শিশু দিবস হিসেবে পালিত হতো।
2023 শিশু দিবস শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস ছবি
কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে নেহেরুর মৃত্যুর পর তাঁকে উপযুক্ত সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে একটি বিল পাস করা হয়। যেখানে বলা হয়েছিল তার জন্মবার্ষিকী এবং শিশু দিবস একসাথে পালন করা হবে। সেই থেকেই ১৪ ই নভেম্বর ভারতের শিশু দিবস অথবা বাল দিবস পালিত হয়ে আসছে। তার সাথে সাথে তার জন্মবার্ষিকীও পালন করা হয়ে যায়।
শিশু দিবসের গুরুত্ব 2023:
শিশু দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম, একটা শিশুকে কিভাবে আপনি উপযুক্ত করে গড়ে তুলবেন সেটার জন্য সংকল্প গ্রহণ করা হয় এই দিনে শিশু দিবসের পাশাপাশি স্বাধীন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর জন্ম জয়ন্তীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এর পাশাপাশি এই দিনে শিশুদের সামাজিক অবস্থার বৃদ্ধি করা, তাদের অধিকার ও শিক্ষা তাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর করার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে অনেকেই। জন্মগ্রহণ করলে মৃত্যু বরন তো করতেই হবে, তাই শিশুরা ভবিষ্যৎ হবে এই দেশের।
সেই কারণে আজকে যারা উপযুক্ত ব্যক্তি তারা যখন এই পৃথিবীতে থাকবেন না, তাদের দায়িত্ব গুলি পালন করার জন্য এই শিশুরাই একদিন উপযুক্ত হয়ে সেই জায়গা নিতে পারবে। তবে তার জন্য তো তাকে উপযুক্ত হয়ে তৈরি হতে হবে, তাই না ! এছাড়া কোন কিছু যেন তাদের উপরে খারাপ প্রভাব না ফেলে, সেদিকেও বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
তাদের শিক্ষা, স্কুল এবং খেলাধুলার উপরেও গুরুত্ব প্রভাব সকলের কাছে পরিষ্কার ভাবে জানাতে হবে, যাতে তারা উপযুক্ত হয়ে পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন দায়িত্বভার গ্রহণ করতে পারে। সেই অনুযায়ী শিশু দিবস অথবা children’s ডের গুরুত্ব অপরিসীম।
শিশু দিবসের তাৎপর্য 2023:
শিশুদের প্রতি স্নেহ, ভালবাসার পাশাপাশি তাদেরকে সঠিকভাবে বড় করার ব্যাপারেও তিনি অনেক বেশি জোর দিতেন। তিনি এও বলেছিলেন যে, “আজ আমরা যেভাবে শিশুদের বড় করব কাল তারা সেভাবেই দেশ চালাবে”।
তাই শিশুদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময়, সম্প্রীতি বোধ, বোঝাপড়া এবং বাচ্চাদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা, তাদের সঠিক পথ দেখানো, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শেখানো উচিত প্রতিটি বাবা-মায়ের। তাছাড়া বাবা মায়েদের সাথে সাথে আশেপাশের পরিবেশ এবং পরিবারের আরো অন্যান্য সদস্যরা, তাদেরকে সঠিক পথ দেখাতে সাহায্য করাটা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
তবে আজও দেশের কোথাও কোথাও অবহেলিত থেকে যাচ্ছে শিশুরা। সেখানে দেখা যায় শিশু শ্রমিক হিসাবে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে, হাতে বইয়ের পরিবর্তে তুলে দেওয়া হচ্ছে নানান ধরনের কাজের সমস্ত রকম সামগ্রী।
তাই এই শিশু দিবসে প্রত্যেক শিশুকে স্কুলমুখী করে তুলতে হবে, শিক্ষার আলোয় উজ্জ্বল করতে হবে তাদের ভবিষ্যৎ, দেখাতে হবে সঠিক পথ, তবেই কিন্তু সফল হবে শিশু দিবস পালন করা, সফল হবে পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর দেখা সেই সমস্ত স্বপ্ন গুলি।
শিশু দিবস অথবা চিলডেন্স ডে উপলক্ষে এই দিন স্কুল কলেজ এবং আরো অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থায় বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশু দের জন্য থাকে অনেক রকমের প্রতিযোগিতা এবং ইভেন্ট। শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে থাকেন এবং এই দিন উপলক্ষে মিষ্টি, বই, চকলেট এবং আরো অন্যান্য উপহার বিতরণ করা হয় ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের মধ্যে। কোথাও কোথাও শিশুদের চলচ্চিত্র উৎসবেরও আয়োজন করা হয়।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অভিভাবকরাও নিজের বাড়িতে পালন করে থাকেন এই শিশু দিবস। শুধুমাত্র বিদ্যালয় তেই শিশু দিবস পালন করা হয় না, যেসব শিশুরা রাস্তায় থাকে এবং অনাথ, তাদের মুখেও হাসি ফোটানোর জন্য অনেক রকম প্রচেষ্টা চালানো হয়।
বিভিন্ন রকম সংস্থা থেকেও তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এই শিশু দিবস উপলক্ষে উপহার প্রদান করা হয় তাদের। শিশুদের সঙ্গে জহরলাল নেহেরু সম্পর্ক ছিল খুবই মধুর এবং স্নেহের, সেই কারণেই তো এই দিনে শিশু দিবস এবং তার জন্ম বার্ষিকী উৎসব একই সাথে পালন করা হয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশু দিবস পালিত হয়, বিভিন্ন সময়ে ১ লা জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক শিশু দিবস। তবে প্রতিবছর ভারতে শিশু দিবস পালিত হয় ১৪ ই নভেম্বর। এই বিশেষ দিনে শিশুদের সুরক্ষা, তাদের অধিকার এবং তারা যেন সঠিক শিক্ষা পায় এবং সঠিক পুষ্টি পেয়ে বড় হয়, সেই দিকটা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
তবেই কিন্তু এই দিনের গুরুত্ব বজায় থাকবে। স্কুল ও শিক্ষা ক্ষেত্র গুলিতে পড়াশোনার পরিবর্তে বিশেষ অনুষ্ঠান, কুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদির আয়োজন করা হয়। এই বিশেষ দিনে শিশুদের জন্য থাকে উপহার এবং বিভিন্ন ধরনের পছন্দের খাবার দাবার।
বর্তমানে বিভিন্ন শপিং মল, বিনোদন পার্ক, রেস্তোরাতে থাকে শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন, এমনকি কিডস আইটেম কেনাকাটায় থাকে বিশেষভাবে ছাড়। আর তাই শিশুরাও ভীষণভাবে আনন্দিত থাকে এই দিনে, কেননা এই দিনটি সম্পূর্ণরূপে তাদের জন্য।
এই দিনে কারো কাছ থেকে কোনো রকম বকাঝকা না খেয়ে শুধুমাত্র স্নেহ ভালোবাসা পেতে থাকে তারা। আপনার শিশুকে অবশ্যই এই সমস্ত বিষয়ের দিক থেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন, ভালো থাকুন পৃথিবীর সমস্ত শিশু। সকলকে জানাই শিশু দিবসের প্রীতি – শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালবাসা।