বিশ্বকর্মা পূজা 2024 তিথি ও সময় ভারতীয় সময় অনুসারে। কবে পড়েছে এবছরের বিশ্বকর্মা পূজা 2024? বিশ্বকর্মা পূজার শুভ সময় কখন? জানুন 2024 বিশ্বকর্মা পূজার মুহূর্ত ও কেনাকাটার শুভ মুহূর্ত এবং তাৎপর্য।
এই বছরের কবে বিশ্বকর্মা পূজা? জেনে নিন কেনাকাটার পাশাপাশি উৎসবের শুভ সময় ও মুহূর্ত। এছাড়াও বিশ্বকর্মা পূজার তাৎপর্য, পূজা বিধি এবং এই সময় কি কাজ করা উচিৎ ও কি না করা উচিৎ জানুন সবকিছু।
বিশ্বকর্মা পূজা 2024 (Vishwakarma Puja 2024): হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী বলা যেতে পারে যে, বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের শিল্পী। তিনি দেব শিল্পী নামেও পরিচিত। বৃহস্পতির ভগিনী যোগ সিদ্ধা তার মাতা এবং অষ্টম বসু প্রভাস হলেন তার পিতা। বিশ্বকর্মার বাহন হল হাতি।
এই বছর বিশ্বকর্মা পূজা 2024 কবে?
Vishwakarma Puja
16 September 2024
Monday
বিশ্বকর্মা পূজার বাংলায় তারিখ
বিশ্বকর্মা পূজা
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সোমবার
বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পকলার দেবতা। সকল দেবতার প্রাসাদ তৈরি করা থেকে সকল প্রকার অলংকারে নির্মাতা ও তিনিই ছিলেন। বিবরণ অনুযায়ী জানা যায় যে, তার চারটি বাহু অর্থাৎ হাত রয়েছে, মাথায় রাজার মুকুট, হাতে জলের কলস, বই, দড়ির ফাঁস ও অপর হাতে একটি যন্ত্র।
বিশ্বকর্মা পূজার বিধি 2024:
তো চলুন তাহলে, এবার জেনে নেওয়া যাক, বিশ্বকর্মা পূজার বিধি অথবা পদ্ধতি সম্পর্কে:
যেহেতু যেকোনো পূজার জন্য আগে থেকে সমস্ত কিছু উপকরণ জোগাড় করে রাখতে হয়।
- তাই বিশ্বকর্মা পূজা করার জন্য বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলি জোগাড় করার পর আমাদের বিশ্বকর্মা পূজার নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র উচ্চারণ জানতে হবে।
- সবার প্রথমে স্নান সেরে পরিষ্কার এবং শুদ্ধ কাপড় পড়ে ঠাকুর ঘরে ঢুকতে হবে, তারপর বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলি একে একে সাজিয়ে নিতে হবে।
- যেমন ধরুন গঙ্গা জল দিয়ে ঘট ভরার পর ঘটের উপরে আমের পাতা সহ শীষ যুক্ত ডাব রাখতে হবে, তারপর ঘট পাত্রটি যদি মাটির হয় তবে ঘট পাত্রটিকে পাটের দড়ির বোড় এর উপর ঘর রাখতে হবে।
- এরপর খড়ি মাটি দিয়ে পুজোর স্থানে আলপনা আঁকতে হবে।
- তারপরে আতপ চালের নৈবেদ্য সাজিয়ে, তারপর ফুল, বেলপাতা দিয়ে বিশ্বকর্মা পূজার বই পড়ে পূজা শুরু করতে হবে।
- হোম যজ্ঞ করার পর আরতী করতে হয়, তারপরে ব্রাহ্মণকে দক্ষিণা দিয়ে পূজা সম্পন্ন করে পূজার প্রসাদ বিতরণ করতে পারেন।
বিশ্বকর্মা পূজার তাৎপর্য 2024:
বিশ্বকর্মা পূজার তাৎপর্য রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, ওড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খন্ড এবং কর্ণাটকে এই বিশ্বকর্মা পূজা খুবই সাড়ম্বরে পালন করা হয়। কলকারখানা এবং বিভিন্ন কারিগরী শিল্পী, ছুতোর এবং বিভিন্ন ওয়ার্কশপে ও বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়ে থাকে।
শুধুমাত্র তাই নয়, বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কাজের উন্নতি ও সাফল্যের প্রার্থনা করা হয় বিশ্বকর্মা পূজার মধ্যে দিয়ে বিশ্বকর্মার কাছে। পূজার দিনে কল কারখানা এবং বিভিন্ন কাজের জায়গা গুলি ভগবান বিশ্বকর্মের মূর্তির পূজার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ও পূজা করা হয়।
বিভিন্ন বড় বড় মেশিন, যন্ত্রপাতি যেগুলো দিয়ে কোন কিছু তৈরি করা যায় সেগুলিতেও বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়। এছাড়া অনেক কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, অনেকের প্রাণ হানি ঘটে, সেই কারণে এই বিশ্বকর্মা পূজার দিন সেই জায়গাতে কোনরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই প্রার্থনা করে বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।
প্রতিবছর এই বিশ্বকর্মা পূজার দিনে কাজের জায়গা থেকে নেতিবাচক এবং অপশক্তির বিনাশ ঘটাতে ভগবান বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়ে থাকে বলে জানা যায়। কর্ম ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ, ব্যবসাতে উন্নতি এবং কাজে আরও বেশি সুদক্ষ হয়ে ওঠার জন্য বিশ্বকর্মা পূজা সমস্ত কারিগর, ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকরা করে থাকেন।
পুজার দিনে কর্মচারীরা শুধু সাফল্যের প্রার্থনাই করেন না, সেই সঙ্গে মেতে ওঠেন আনন্দে। যাতে আবার পরের দিন থেকে নতুন ভাবে কাজে যোগদান করতে পারেন। এর সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, খাবার দাবার, খাওয়া-দাওয়া তো রয়েছেই।
যেকোনো মেশিনপত্র সেটা হতে পারে সেলাই মেশিন অথবা আপনার প্রিন্টার, সেখানে সিঁদুর, চন্দনের ফোটা দিয়ে বিশ্বকর্মার পূজার দিন এই মেশিনগুলিকে পূজা করা হয়। কেননা এগুলো থেকেও কোনো না কোনো জিনিস তৈরি হয়। অনেক দোকানেই বিশ্বকর্মা পূজা করতে দেখা যায়। পূজার দিন বিকালে ঘুড়ি ওড়ানো, একসাথে হৈ-হুল্লোড় করা, আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন সকলেই।