Remove Unwanted Facial Hair: মুখের ত্বক মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশ করে। মেয়েদের মুখের ত্বক থাকা চাই চকচকে আয়নার মত, কিন্তু মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোমের জন্য ত্বক আয়নার মত চকচকে দেখায় না।
ত্বকে লোম বেশী থাকলে কোন ক্রিম বা মেকআপও সহজে বসতে চায়না, ভেসে থাকে। অনেকের মুখেই তেমন লোম থাকেনা, আর যেটুকু থাকে তাতে সমস্যা হয়না। কিন্তু মুখের লোম পরিষ্কার করলে ত্বক আরও বেশী পরিষ্কার ও চকচকে দেখায়।
তবে যাদের মুখে লোমের পরিমাণ বেশী এবং তারা এটা নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন তাদের জন্য রয়েছে ঘরোয়া প্রাকৃতিক সমাধান।
লোমের সমস্যার জন্য এখন আর কষ্টকর ওয়াক্সিং, থ্রেডিং এবং লেজার ট্রিটমেন্ট এর প্রয়োজন নেই। একটু ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা করলে বাড়িতে বসেই লোমের সমস্যার সমাধান মিলবে।
এরজন্য আজকের আয়োজনে থাকছে কার্যকর কিছু ঘরোয়া উপায় যার মাধ্যমে মুখের অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। চলুন প্রিয় পাঠক আর দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার ঘরোয়া উপায়:
১. ঘরোয়া ওয়াক্সিং
মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে ঘরোয়া ওয়াক্সিং করতে পারেন। এটা খুবই কার্যকর উপায়। এরজন্য লেবু ও চিনির মিশ্রণ তৈরি করতে হবে এমনভাবে যাতে চিনি আস্ত না থাকে।
ভালভাবে মিশে গেলে মুখের ত্বকের যেসব স্থানে লোম আছে সেসব স্থানে লাগিয়ে পরিষ্কার পাতলা সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।
১০-১৫ মিনিট পর মিশ্রণটি ত্বকে শুকিয়ে গেলে কাপড়টি জোরে টান দিয়ে তুলে ফেলুন। এই ওয়াক্সিং এ ব্যথা পেলেও খুব সুন্দরভাবে মুখের ত্বকের লোম দূর হয়ে যাবে।
নিয়মিত এভাবে ওয়াক্সিং করলে একসময় লোমের গ্রোথ কমে যাবে আর আপনিও সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
২. বেসনের প্যাক
মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে আরেকটি চমৎকার প্যাক হচ্ছে বেসন ও টকদই ও হলুদের প্যাক।
প্রথমে একটি বাটিতে দুই চা চামচ বেসন, দুই টেবিল চামচ টকদই ও সামান্য হলুদের গুড়া দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে সেটা মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোমের স্থানে ব্যবহার করুন।
তারপর হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজের ফলে অবাঞ্ছিত লোম দূর হয়ে যাবে। নিয়মিত ব্যবহারে মুখের ত্বকে লোম আর গজাবে না।
৩. হলুদের প্যাক
মুখের আবাঞ্চিত লোম দূর করতে আরেকটি কার্যকর প্যাক হচ্ছে দুধ ও হলুদের প্যাক।
এই প্যাকটি তৈরি করতে একটি বাটিতে তিন চা চামচ হলুদ গুড়া নিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
তারপর মুখে অবাঞ্ছিত লোম যেখানে আছে সেখানে প্যাকটি লাগান, এরপর ৫-৭ মিনিট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন।
তারপর আরও ১০ মিনিট রেখে ঘষে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাকটি ব্যবহার করলে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর হয়ে যাবে।
৪. রাইস ক্রিম
বাড়িতে তৈরি করা রাইস ক্রিম নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের লোমের রং পরিবর্তন হতে থাকবে এবং লোম আর গজাবে না।
রাইস ক্রিম বানাতে প্রথমে চাল ভিজিয়ে রাখুন, এরপর চাল সাদা হয়ে গেলে তা থেকে জল ঝরিয়ে পাটায় বেটে গুড়া করে নিন। আর যদি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করতে চান তাহলে জল ঝরাবেন না।
এরপর মিশ্রণটি পাতলা কাপড় বা ছাকুনিতে ছেকে নিন। এরপর তা চুলায় জল মিশিয়ে জ্বাল দিন। তাহলে তৈরি হয়ে যাবে রাইস ক্রিম।
এটা ঠান্ডা হওয়ার পর মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। চাইলে সারারাত মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন। ত্বকের অবাঞ্ছিত লোমসহ সব রকম সমস্যা দূর করবে প্যাকটি।
৫. কফি ও লেবুর স্ক্রাব
কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যাফেইন যা লোমের বৃদ্ধি রোধ করে। দুই চা চামচ কফি নিয়ে, তার মধ্যে এক চা চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু ও চিনি মিশিয়ে স্ক্রাবার তৈরি করে নিন।
এরপর এটা মুখের ত্বকে যেখানে লোম আছে সেখানে লাগান, ৫ মিনিট আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এরপর ১০ মিনিট রেখে ঘষে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
দেখবেন ত্বক এ লোমের পরিমাণ আস্তে আস্তে কমে যাবে। একসময় লোম আর গজাবে না।
৬. ময়দার প্যাক
ময়দা ও টকদইয়ের প্যাক চেহারার লোমের রঙ পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। দুই চা চামচ ময়দা ও এক টেবিল চামচ টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।
তারপর মুখের ত্বকের যেখানে লোম আছে সেখানে ব্যবহার করুন। কিছুক্ষন ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
এই প্যাক চেহারার লোমের রঙ পরিবর্তন করবে, এবং লোমের বৃদ্ধি কমিয়ে দেবে।
উপসংহার
মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট করে। এটা অনেকেই পছন্দ করেন না, ওয়াক্সিং বা,লেজারের সাহায্য নিয়ে থাকেন, যা কষ্টসাধ্য এবং ব্যয়বহুল।
এজন্য ঘরোয়া প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন, যাতে আপনার ত্বকে অবাঞ্ছিত লোম দূর হয়, এবং সেগুলো পুনরায় ফিরে না আসতে পারে।
সুপ্রিয় পাঠক আশা করি আজকের পোস্টটি মুখের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে আপনাকে সাহায্য করবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।