বিশ্বকর্মা পূজা 2023 (Vishwakarma Puja 2023 Date Time and Significance) 2023 বিশ্বকর্মা পূজা ইতিহাস এবং জানুন বিশ্বকর্মা পূজা কেন পালন করা হয়? বিশ্বকর্মা পূজা তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য বিশ্বকর্মা পূজা গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।
বিশ্বকর্মা পূজা সম্পর্কে সকলের কম বেশি একটু হলেও ধারণা রয়েছে। কেননা তিনি হলেন দেবতাদের কর্মকার অর্থাৎ বিশ্বের নির্মাণকর্তা বলা যেতে পারে। সেই কারণেই তো তাকে বিশ্বকর্মা বলা হয়। তাছাড়া অনেকেই বিশ্বকর্মা কে স্বর্গের কারিগর হিসেবেও চিনে থাকবেন। শিল্পী ও নির্মাতাদের দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নকশা তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা।
এছাড়া মহাভারত অনুযায়ী বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পকলার দেবতা। সকল দেবতার প্রাসাদ তৈরি করা থেকে সকল প্রকার অলংকারে নির্মাতা ও তিনিই ছিলেন। বিবরণ অনুযায়ী জানা যায় যে, তার চারটি বাহু অর্থাৎ হাত রয়েছে, মাথায় রাজার মুকুট, হাতে জলের কলস, বই, দড়ির ফাঁস ও অপর হাতে একটি যন্ত্র।
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী বলা যেতে পারে যে, বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের শিল্পী। তিনি দেব শিল্পী নামেও পরিচিত। বৃহস্পতির ভগিনী যোগ সিদ্ধা তার মাতা এবং অষ্টম বসু প্রভাস হলেন তার পিতা। বিশ্বকর্মার বাহন হল হাতি।
বিশ্বকর্মা পূজার ইতিহাস 2023:
বিশ্বকর্মার কিছু অমর সৃষ্টি সম্পর্কে জানা যাক:
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী বিশ্বকর্মার বিভিন্ন নির্মাণ রয়েছে সত্য যুগ থেকে কলিযুগ অর্থাৎ সত্যযুগ, ত্রেতা যুগ, দ্বাপর যুগ, কলিযুগ, এই চার যুগ ধরে ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বকর্মার অমর সক কীর্তি গুলি, যা তিনি তৈরি করেছিলেন।
সত্য যুগে বিশ্বকর্মা তৈরি করেছিলেন স্বর্গলোক, এই স্বর্গলোক অথবা এই দেবতাদের প্রাসাদ থেকে দেবরাজ ইন্দ্র মর্ত্যলোক শাসন করতেন। ত্রেতা যুগে বিশ্বকর্মা সৃষ্টি করেছিলেন সোনার লঙ্কা, যেটা আমরা রাবণের লঙ্কা বলেই চিনি। দ্বাপর যুগে সৃষ্টি করেছিলেন দ্বারকা, কলিযুগে বিশ্বকর্মার অমর সৃষ্টি দুটি হলো হস্তিনাপুর ও ইন্দ্রপ্রস্থ।
2023 বিশ্বকর্মা পূজার শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস ছবি
তো চলুন বিশ্বকর্মার এই সমস্ত সৃষ্টি সম্পর্কে একটু জানা যাক:
সোনার লঙ্কা:
যেহেতু আমরা জানলাম যে, ত্রেতা যুগে রাবণ রাজার রাজধানী ছিল সোনার লঙ্কা, হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী পার্বতীর সঙ্গে বিয়ের পর মহাদেব প্রাসাদ নির্মাণের ভার দিয়েছিলেন বিশ্বকর্মা কে। স্বর্ণ প্রাসাদ অর্থাৎ সোনা দিয়ে তৈরি করতে হবে সেই প্রাসাদ এবং সেই প্রাসাদ তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা।
গৃহ প্রবেশ পূজার জন্য রাবন রাজাকে আমন্ত্রণ জানান মহাদেব। দক্ষিণা হিসেবে মহাদেবের কাছে স্বর্ণলঙ্কা টাই চেয়ে বসেন। রাবণের হাতে স্বর্ণলঙ্কা তুলে দিয়েছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব। আর সেই থেকেই এই স্বর্ণলঙ্কা হয়ে উঠে রাবণের রাজধানী।
দ্বারকা:
এরপর দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের রাজধানী দ্বারকা, বিশ্বকর্মার আরেকটি অমর সৃষ্টি দ্বারকা কৃষ্ণের কর্মভূমি হিসেবে উল্লিখিত এবং পরিচিত। হিন্দুদের অন্যতম দর্শনীয় এবং পূজনীয় শহর হল এই দ্বারকা পুরি অর্থাৎ দ্বারকা শহর।
হস্তিনাপুর:
এছাড়া কলিযুগে কৌরব ও পাণ্ডবদের রাজধানী হস্তিনাপুর ও ইন্দ্রপ্রস্থ ও নির্মাণ করেছিলেন বিশ্বকর্মা। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির কে হস্তীনাপুরে অভিষিক্ত করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।
ইন্দ্রপ্রস্থ:
এরপর পান্ডবদের শহর ইন্দ্রপ্রস্থ নির্মাণ করেছিলেন বিশ্বকর্মাই। পান্ডবদের থাকার জন্য এক টুকরো জমি দিয়েছিলেন ধৃতরাষ্ট্র আর সেই জায়গাতে ভাইদের সঙ্গে থাকতেন যুধিষ্ঠির। পরে পান্ডব দের ইন্দ্রপ্রস্থ রাজধানী নির্মাণ করার জন্য বিশ্বকর্মা কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। তৈরি করা হয় ইন্দ্রপ্রস্থ।
এই ইন্দ্রপ্রস্থ ছিল মায়া নগরী প্রাসাদের মাটি দেখলে মনে হতো যেন স্বচ্ছ জল টলটল করছে। পুকুরের স্বচ্ছ জলের মধ্যে দিয়ে আয়নার মতো চকচক করতো মাটি। প্রাসাদ তৈরির পর পান্ডবদের নিমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য ইন্দ্রপ্রস্থে যান কৌরবরা।
এরপর মায়া নগরের মায়া বুঝতে না পেরে পুকুরের জলে পড়ে যান দুর্যোধন। তাকে পড়ে যেতে দেখে হেসে উঠেছিলেন দ্রৌপদী, এবং দুর্যোধনকে এই বলে অপমান করেছিলেন দ্রৌপদী যে, “অন্ধ বাবার অন্ধ ছেলে”। এই ঘটনা থেকেই সূত্রপাত হয়েছিল কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের। সত্যি, যেকোনো বড় ঘটনার শুরুটা কিন্তু ছোটই হয়, তাই না ! আর যদি সেটা অপমানজনক কিছু হয়ে থাকে, তাহলে তো আর কথাই নেই।
বিশ্বকর্মার আরো সৃষ্টিগুলি সম্পর্কে জানা যাক:
বিশ্বকর্মা বিশ্বভুবন নির্মাণ করেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিবের ত্রিশূল, কুবেরের অস্ত্র, ইন্দ্রের বর্জ্য, কার্তিকের শক্তি, প্রভৃতি তিনিই তৈরি করেছেন। শ্রী ক্ষেত্রর প্রসিদ্ধ জগন্নাথ মূর্তিও কিন্তু নির্মাণ করেছিলেন বিশ্বকর্মা। এক কথায় বলা যেতে পারে তিনি হলেন দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার।
বিশ্বকর্মা পূজা হিন্দুদের একটি ধর্মীয় উৎসব। দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার আশীর্বাদ কামনা করে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বিভিন্ন জায়গায়। বিভিন্ন কলকারখানায়, প্রধানত যে সমস্ত জায়গায় কোন কিছু সৃষ্টি করা হয়, কোন মেশিনপত্র, কোন কিছুর তৈরীর কারখানাতে এই বিশ্বকর্মার পূজা খুবই সাড়ম্বরে করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে যেখানে কোন কিছু তৈরি সমন্ধিত বিষয় থাকে সেখানেই বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
ভাদ্র মাসের সংক্রান্তির দিন বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বড় বড় কলকারখানায় খুবই ধুমধাম ভাবে বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই দিন সবকিছু কাজ বন্ধ থাকে, অন্যান্য দেবদেবীর মতোই মূর্তি গড়ে অথবা ঘটে, পটে বিশ্বকর্মার পূজা করা হয়।
এছাড়া ছুতোর মিস্ত্রিদের মধ্যেও এই পূজার প্রচলন বেশি মাত্রায়, তবে স্বর্ণকার, কর্মকার এবং দারুশিল্প, স্থাপত্য শিল্পকর্মে, নিযুক্ত ব্যক্তিও নিজেদের কর্মে দক্ষতা অর্জনের জন্য বিশ্বকর্মা পূজা করে থাকেন। এই সময় প্রত্যেকের ঘরেই বিশেষ খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং কোথাও কোথাও এই পূজা উপলক্ষে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতাও হয়ে থাকে।
কোন কোন জায়গায় বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়:
সমগ্র ভারতবর্ষে তো নয়ই, তবে বিশ্বকর্মা পূজা মূলত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, দেরাদুনের কিছু কিছু অঞ্চলে বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। ভারতবর্ষের বিশ্বকর্মা একটি দলিত সম্প্রদায়ের নাম।
বিশ্বকর্মা সেই সম্প্রদায়ের আদিম সভ্য পুরুষ। বিশ্বকর্মা পিছিয়ে পড়া একজন জনজাতির ঐতিহাসিক এবং অপ্রতিরোধ্য প্রতিভার বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত।
বিশ্বকর্মার লিখিত গ্রন্থ:
বিশ্বকর্মা শুধুমাত্র একজন ইঞ্জিনিয়ার অথবা কিছু তৈরি করার কর্মে সুদক্ষই ছিলেন তা কিন্তু নয়, তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ লিখে গিয়েছেন তার উত্তরসূরীদের জন্য। এবার জানা যাক বিশ্বকর্মার লেখা গ্রন্থ গুলি সম্পর্কে।
বিশ্বকর্মা রচিত স্থাপত্য শিল্প বিষয়ক গ্রন্থটির নাম “বাস্তুশাস্ত্রম”, “মানসার” এবং “ময়মতম” এই গ্রন্থে বস্তু ও বাস্তু শব্দ দুটিকে সমার্থক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। “বাস্তু” শব্দের অর্থ হলো পৃথিবী, ব্যাপক অর্থে সমস্ত প্রাণীর আবাসস্থলকে বাস্তু বলা হয় অর্থাৎ স্রষ্টার যে কোন সৃষ্টিকেই বাস্তু বলা হয়।
শুধু মানুষের গৃহই নয়, দেবতাদের থেকে শুরু করে পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী দের আবাসস্থলকে বস্তু বলে। এই শিল্পকে শুধুমাত্র নির্মাণ শিল্পকে না বুঝিয়ে পরিকল্পনা, চিত্র, নির্মাণ, স্বর্ণ- চর্ম – বয়ন শিল্প, অলংকার, অস্ত্র শিল্প, মূর্তি নির্মাণ, পোতনির্মাণ, প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিব্যপ্ত রয়েছে।
এছাড়া পূরণে উল্লেখ আছে যে, চারটি বেদের মতো চারটি উপবেদও রয়েছে। ধনুর্বেদ, গন্ধর্ববেদ, আয়ুর্বেদ এবং স্থাপত্যবেদ। এই উপবেদ স্থাপত্যবিদ্যা অথবা বাস্তুবিদ্যা রচয়িতা হলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। তাই এক্ষেত্রে বলা যেতেই পারে যে, তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রধান বাস্তুকার। তার রচিত অন্তত দশটি পুঁথি এই পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে।
বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ:
বিশ্বকর্মা পূজার জন্য যে সমস্ত উপকরণ গুলি অবশ্যই অবশ্যই প্রয়োজন পড়বে সেগুলি হল:-
সিঁদুর, পুরোহিত বরণ একটি, হরিতকি, তিল, পঞ্চগুড়ি, পঞ্চগব্য, পঞ্চ শস্য, পঞ্চরত্ন, পঞ্চ পল্লব, একটি ঘট, কুণ্ড হাড়ি একটি, তেকাটা একটি, দর্পণ একটি, চারটি তীর, ঘট আচ্ছাদন গামছা, একটি বরণডালা, শীষযুক্ত ডাব একটি, এক সরা আতপ চাল, ফুল, দুর্বা ঘাস, তুলসী, বিলল্ব পত্র, ধুপ, ধূনা, প্রদীপ, বিশ্বকর্মার ধুতি একটি, আসনআঙ্গুরীয়ক একটি, মধু, পার্কর বাটি, ঘি, দই, মধু, নৈবেদ্য একটি, কুচানো নৈবেদ্য, চন্দ্র মালা, ফুলের মালা একটি একটি করে, একটি থালা, একটি পিতলের ঘটি, পান, পানের মসলা, কাঠ, বালি, খোড়কে, গব্যঘৃত একপোয়া, পূর্ণ পাত্র একটি, আরতি এবং দক্ষিণা।
বিশ্বকর্মা পূজার বিধি বা পদ্ধতি 2023:
তো চলুন তাহলে, এবার জেনে নেওয়া যাক, বিশ্বকর্মা পূজার বিধি অথবা পদ্ধতি সম্পর্কে:
যেহেতু যেকোনো পূজার জন্য আগে থেকে সমস্ত কিছু উপকরণ জোগাড় করে রাখতে হয়।
- তাই বিশ্বকর্মা পূজা করার জন্য বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলি জোগাড় করার পর আমাদের বিশ্বকর্মা পূজার নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র উচ্চারণ জানতে হবে।
- সবার প্রথমে স্নান সেরে পরিষ্কার এবং শুদ্ধ কাপড় পড়ে ঠাকুর ঘরে ঢুকতে হবে, তারপর বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণ গুলি একে একে সাজিয়ে নিতে হবে।
- যেমন ধরুন গঙ্গা জল দিয়ে ঘট ভরার পর ঘটের উপরে আমের পাতা সহ শীষ যুক্ত ডাব রাখতে হবে, তারপর ঘট পাত্রটি যদি মাটির হয় তবে ঘট পাত্রটিকে পাটের দড়ির বোড় এর উপর ঘর রাখতে হবে।
- এরপর খড়ি মাটি দিয়ে পুজোর স্থানে আলপনা আঁকতে হবে।
- তারপরে আতপ চালের নৈবেদ্য সাজিয়ে, তারপর ফুল, বেলপাতা দিয়ে বিশ্বকর্মা পূজার বই পড়ে পূজা শুরু করতে হবে।
- হোম যজ্ঞ করার পর আরতী করতে হয়, তারপরে ব্রাহ্মণকে দক্ষিণা দিয়ে পূজা সম্পন্ন করে পূজার প্রসাদ বিতরণ করতে পারেন।
বিশ্বকর্মা পূজার তাৎপর্য 2023:
বিশ্বকর্মা পূজার তাৎপর্য রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এ, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, ওড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খন্ড এবং কর্ণাটকে এই বিশ্বকর্মা পূজা খুবই সাড়ম্বরে পালন করা হয়। কলকারখানা এবং বিভিন্ন কারিগরী শিল্পী, ছুতোর এবং বিভিন্ন ওয়ার্কশপে ও বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়ে থাকে।
শুধুমাত্র তাই নয়, বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং কাজের উন্নতি ও সাফল্যের প্রার্থনা করা হয় বিশ্বকর্মা পূজার মধ্যে দিয়ে বিশ্বকর্মার কাছে। পূজার দিনে কল কারখানা এবং বিভিন্ন কাজের জায়গা গুলি ভগবান বিশ্বকর্মের মূর্তির পূজার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ও পূজা করা হয়।
বিভিন্ন বড় বড় মেশিন, যন্ত্রপাতি যেগুলো দিয়ে কোন কিছু তৈরি করা যায় সেগুলিতেও বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়। এছাড়া অনেক কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, অনেকের প্রাণ হানি ঘটে, সেই কারণে এই বিশ্বকর্মা পূজার দিন সেই জায়গাতে কোনরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই প্রার্থনা করে বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়।
প্রতিবছর এই বিশ্বকর্মা পূজার দিনে কাজের জায়গা থেকে নেতিবাচক এবং অপশক্তির বিনাশ ঘটাতে ভগবান বিশ্বকর্মা পূজা করা হয়ে থাকে বলে জানা যায়। কর্ম ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ, ব্যবসাতে উন্নতি এবং কাজে আরও বেশি সুদক্ষ হয়ে ওঠার জন্য বিশ্বকর্মা পূজা সমস্ত কারিগর, ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকরা করে থাকেন।
পুজার দিনে কর্মচারীরা শুধু সাফল্যের প্রার্থনাই করেন না, সেই সঙ্গে মেতে ওঠেন আনন্দে। যাতে আবার পরের দিন থেকে নতুন ভাবে কাজে যোগদান করতে পারেন। এর সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, খাবার দাবার, খাওয়া-দাওয়া তো রয়েছেই।
যেকোনো মেশিনপত্র সেটা হতে পারে সেলাই মেশিন অথবা আপনার প্রিন্টার, সেখানে সিঁদুর, চন্দনের ফোটা দিয়ে বিশ্বকর্মার পূজার দিন এই মেশিনগুলিকে পূজা করা হয়। কেননা এগুলো থেকেও কোনো না কোনো জিনিস তৈরি হয়। অনেক দোকানেই বিশ্বকর্মা পূজা করতে দেখা যায়। পূজার দিন বিকালে ঘুড়ি ওড়ানো, একসাথে হৈ-হুল্লোড় করা, আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন সকলেই।