Third Wave of Corona in India: করোনা ভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ কতটা ভয়াবহ? বাঁচার উপায়

Third Wave of Corona in India: করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আসছে মানুষকে আবার ভয়াভহ স্থিতিতে পৌঁছানোর জন্য। জানুন কেন আসছে এই তৃতীয় ঢেউ? কি হবে এর ফলে? কতটা ভয়াবহ হতে পারে? এবং বাঁচার উপায়গুলি।

২০২০ থেকে করোনা ভাইরাস এর জেরে জনজীবন একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই করোনা ভাইরাস এর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনো যায়নি, আর তার মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, আবার আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আর এই তৃতীয় ঢেউ যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা নিয়েও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Third Wave of Corona in India: Precaution needed to stay Safe
Third Wave of Corona in India: Precaution needed to stay Safe

করোনা ভাইরাসের কারণে টানা লকডাউন, অসুস্থতা, মৃত্যুর হার, মানুষকে শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ:

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে আমাদের দেশে করোনাভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে চলতি আগস্ট মাস থেকেই। আর সেটি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নেবে অক্টোবর মাসের থেকে। সেই জন্য বিশেষজ্ঞরা দেশবাসীকে বিশেষভাবে সতর্ক তা পালন করার জন্যে বলছেন। আর সেই কারণেই সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে টিকাকরণ এর উপর।

গবেষকদের মতে কোন তৃতীয় ঢেউ সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী রূপ নেবে তখন দেশে প্রতিদিন গড়ে ১ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা আরো দাবি করেন যে, এই সংক্রমনের সংখ্যা যদি ১ লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ হয় তা হলেও অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই।

কেননা করোনা তৃতীয় ঢেউ এতটাই শক্তিশালী হবে বলে জানা যাচ্ছে। গত বছর মে মাস নাগাদ আমাদের দেশের সংক্রমণের সংখ্যা ছিল চার লক্ষেরও বেশি। সেই তুলনায় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমনের সংখ্যা অনেকটাই বেশি যেখানে প্রতিদিন এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন।

করোনা ভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ তে এত আক্রান্ত কেন হবে:

গবেষকদের দাবি যে, কেনো তৃতীয় ঢেউ আটকানো অত সহজ নয়? কেননা প্রথম যখন করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছিল তখন মানুষ ভীষণভাবে ভীত হয়ে পড়েছিলেন কিন্তু এতদিন পর মানুষ আর অতটা ভয় পেয়ে ঘরে বসে নেই, সমস্ত কাজকর্ম, তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে, সেই কারণেই সংক্রমনের সংখ্যাটা এতটাই বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সমস্ত কাজকর্ম চলার পাশাপাশি যেসব মানুষজন লকডাউনে ঘরে বসে ছিলেন তারাও আজ নিজেদের কাজে যোগ দিয়েছেন। ভিড়ের মধ্যেও সবাই নির্ভয় যেতে পারছেন। সেই কারণেই হয়তো করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে।

কি কি কারণে করোনা তৃতীয় ঢেউ আসবে:

করোনার তৃতীয় ঢেউ আসবেই আসবে। কেননা তার একটাই কারণ হলো সাধারণ মানুষজনের অসতর্কতা পূর্ণ ভাবে চলাফেরা। দূরত্ব বজায় রেখে চলার কথা যেখানে বলা হয়েছে সেখানে দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা। সমস্ত কাজে কর্মে মানুষ যোগদান করেছেন, তার সাথে সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, ভিড় কোন কিছুই এড়িয়ে চলছেন না সাধারণ মানুষ আজ।

খুব কম সংখ্যক মানুষের মধ্যে দেখা যায় স্যানিটাইজেশন এর হার অনেক কমে এসেছে। সেই কারণে সবাই করোণা ভাইরাসকে অনেকটাই হালকা হিসেবে নিতে শুরু করেছেন কিন্তু এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাস পুরোপুরিভাবে কাটেনি।

করোনা ভাইরাস এর তৃতীয় ঢেউ ভয়াবহ হতে পারে শিশুদের জন্য:

একেতো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভালো করে সামলে ওঠা যায়নি, তার মধ্যেই তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। মানুষ একেবারে নাজেহাল অবস্থার মধ্যে পড়েছে। সবথেকে চিন্তার বিষয় হলো এই তৃতীয় ঢেউ তে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হতে পারে শিশুরা।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বলছেন যে,  তৃতীয় ঢেউতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার কারণ হল ভ্যাক্সিনেশন হচ্ছে শুধুমাত্র ১৮ বছর বয়সীদের থেকে তার বেশি বয়সীদের, সে ক্ষেত্রে শিশুদের কিন্তু ভ্যাক্সিনেশন হচ্ছে না। আর এই কারনেই শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থেকে যায়।

বর্তমান সময়ে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। চিকিৎসকদের দাবি যে, প্রথম ঢেউয়ের সময় ১২ বছরের বয়সী যারা করুণায় আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছিল তাদের মধ্যে একটি বিশেষ ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছিল। যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয়, মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লামেটরি সিনড্রোম। যার উপসর্গ অনেকটা কাওয়াসাকি ডিজিজ এর মত।

করোনার তৃতীয় ঢেউ কি আটকানো যাবে:

একের পর এক করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ছে সবার মধ্যে। তবে একটাই প্রশ্ন করোনার এই তৃতীয় ঢেউ কি কোন ভাবেই আটকানো যাবেনা? সেটা আগামী ১০০ থেকে ১২৫ দিনের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে। এমনই সতর্কবার্তা দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

সতর্কবার্তায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, “করোনার তৃতীয় ঢেউ আটকানোর জন্য আগামী ১০০ থেকে ১২৫ দিন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ সবাইকে সচেতনতার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে।”

কেন্দ্রীয় নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক এর সদস্য ভি কে পাল বলেন, “সংক্রমণের হার যে গতিতে কম ছিল তা হঠাৎ করেই এক জায়গায় থমকে গিয়েছে। আর এই থমকে যাওয়া টা হল একটা বিপদ সংকেত। ভারতে করোনার বিরুদ্ধে লড়ার পরবর্তী ১০০ থেকে ১২৫ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আশার আলো:

তবে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে যতটাই আতঙ্কিত পরিস্থিতি তৈরি হোক না কেন, এর কিন্তু একটা পজেটিভ দিকও আছে। প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR)  এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকে তৃতীয় ঢেউ এর প্রকোপ অনেক কম হবে।

ICMR  এর তরফ এ ডক্টর সমীরণ পান্ডা জানান সারা দেশে কবে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে তা আগে থেকে বলা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তবে তিনি আরোও বলেন যে, গোটা ভারতের সাথে সাথে রাজ্যগুলির দিকেও বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত।

করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে সর্তকতা অবলম্বন:

স্কুল, কলেজগুলোর খোলার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো একদমই নয়। এমনটাই জানিয়েছেন সমীরন পান্ডা। তিনি বলেন যে, “চতুর্থ ন্যাশনাল সেরোসারভেে” অনুযায়ী দেশের ৫০ শতাংশেরও বেশি শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাই স্কুল খোলার ক্ষেত্রে একটু সর্তকতা পূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

তার সাথে সাথে করোনা বিধি নিষেধ সঠিকভাবে পালন করা এবং নিজেকে পজিটিভ এনার্জিতে ভরিয়ে রাখা, মাস্ক ব্যবহার করা বাইরে বেরোনোর ক্ষেত্রে, পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ খাবার খাওয়া উচিত। তার সাথে সাথে সকল মানুষকে টিকাকরণ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রেও করোনার তৃতীয় ঢেউ অনেকাংশে আটকানো যাবে। এখনো করোনার কোন নতুন ভেরিয়েন্ট তৈরির বিষয়টি সামনে আসেনি।

অযথা আতঙ্কিত না হয়ে করোনা বিধি সঠিকভাবে মেনে চলার চেষ্টা করুন এবং প্রথম দিকে যেমন ভাবে সচেতনতা পূর্ণ ভাবে চলাফেরা করেছেন তেমনটাই বজায় রাখুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top