মিউচুয়াল ফান্ড নেবার স্মার্ট উপায় | Smart Ways to take Mutual Funds

যদি আপনি মোটা রকমের টাকা বাঁচাতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই দরকার মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম (Mutual Funds Scheme) যা আপনাকে অনেক বেশি টাকা রিটার্ন দিয়ে থাকে।

আপনারা হয়ত আপনার টাকার এফডি করে বাঙ্কে রাখেন বা আরডি ও অনেকে করেন কিন্তু যদি আপনি বেশি টাকা রিটার্ন পেতে চান তাহলে আপনি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করতে পারেন কারন মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম যত রিটার্ন দেবে তা আপনাকে এফডি ও আরডি (FD/RD) দেবে না।

Smart Ways to take Mutual Funds to Get High Returns
Smart Ways to take Mutual Funds to Get High Returns

বর্তমান সময়ে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম যদি বেশি সময়ের জন্য করেন যেটাকে লং টার্ম ইনভেস্টমেন্ট (Long Term Investment) বলা হয় তাহলে দারুন রিটার্ন পেয়ে জাবেন।

মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নেবার স্মার্ট উপায়:

মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করা এখন খুব সরল কিন্তু কিভাবে স্মার্ট ভাবে ইনভেস্ট করে ভালো রিটার্ন পাবেন সেটা জরুরি।

প্রত্যেক টাকা ইনভেস্ট করার কিছু স্মার্ট টিপস নিচে দেওয়া আছে যা আপনাকে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নিতে সাহায্য করবে।

১. সব টাকা একটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করবেন না:

মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করার সময় মনে রাখবেন কখন কোন একটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে সব টাকা লাগাবেন না। যেমন মনে করুন আপনি মাসে ১৫০০ টাকা জমা করতে পারবেন তাহলেই এই টাকা তিনটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ৫০০ টাকা করে লাগাবেন তাহলে মিউচুয়াল ফান্ডের রিস্ক কম থাকবে।

একবারে ১৫০০ টাকা একটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে লাগাবেন না। যদি আপনি ১৫০০ টাকার বেশি মাসে ইনভেস্ট করতে চান তাহলে মোট টাকাকে ৩-৪ ভাগ করে আলাদা আলাদা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে জমা করবেন।

মোট টাকা = ১৫০০ টাকা

ক) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ১ – ৫০০ টাকা

খ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ২ – ৫০০ টাকা

গ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ৩ – ৫০০ টাকা

২. কোম্পানির কাজ দেখে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নেবেন:

শুধুমাত্র আলাদা আলাদা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে টাকা রাখাটাই জরুরি নয়। মনে রাখবেন সুধু স্কিম আলাধা করলে হবে না মিউচুয়াল ফান্ড কম্পানির (Mutual Fund Company) কাজ কি সেটাও অবশ্যয় দেখবেন।

যেমন মনে করুন আপনি যেই মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নীচে সেই কোম্পানি বাঙ্কিং-এর কাজ করে তাহলে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম বাঙ্কিং থেকে আলাদা নিতে হবে কারন যদি একি কাজ করা কম্পানির মিউচুয়াল ফান্ড নেন তাহলে যদি মার্কেট কম হলে তিনটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম রিক্সে চলে যাবে।

আর যদি আলদা আলাদা কাজের কম্পানির মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নিলে একটা যদি ডাউন হয় অন্য স্কিম বজায় থাকবে।

মোট টাকা = ১৫০০ টাকা

ক) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ১ – বাঙ্কিং সার্ভিস স্কিম  – ৫০০ টাকা

খ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ২ – ম্যানুফ্যাকচারিং স্কিম  – ৫০০ টাকা

গ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ৩ – হাউসিং স্কিম  – ৫০০ টাকা

৩. সময়ের আগে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম বন্ধ করবেন না:

যেহেতু মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম মার্কেটের ওপর নির্ভর করে সেহেতু আপনাকে ধৈর্য রেখে কাজ করতে হবে। অনেক সময় মার্কেট কম হয়ে যাবার ফলে আপনার মিউচুয়াল ফান্ড কম রিটার্ন (Low Returns) দেখাবে সেই সময় ভয় পেয়ে মিউচুয়াল ফান্ড মটেই বন্ধ করবেন না।

মনে রাখবেন মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম যত লম্বা সময়ের জন্য চালাবেন তত বেশি রিটার্ন পাবেন।

ক) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম  – ৫ বছর – ভাল রিটার্ন

খ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম  – ১০ বছর – খুব ভাল রিটার্ন

গ) মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম  – ২০+ বছর দুর্দান্ত রিটার্ন

৪. হাই রিটার্ন দেওয়া মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে কম টাকা ইনভেস্ট করবেন:

আমাদের ধারণা থাকে যে হাই রিটার্ন মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা ইনভেস্ট করলে বেশি টাকা পাওয়া যাবে কিন্তু এর মধ্যে অনেক রিস্ক থাকে যা আপনার জেনে রাখা দরকার।

হাই রিটার্ন দেওয়া মিউচুয়াল ফান্ড হাই রিটার্নের (Mutual Funds High Returns) সাথে সাথে হাই রিস্ক দিয়ে থাকে আর এর ফলে টাকা ডুবে যাবার সম্ভবনা বেশি থাকে।

আমরা বলছিনা যে হাই রিটার্ন দেওয়া মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম খারাপ আমরা এটা বলছি যে হাই রিটার্ন দেওয়া মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে কম পরিমানে টাকা ইনভেস্ট করবেন।

৫. কোম্পানির ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করবেন:

যেই কোম্পানির মিউচুয়াল ফান্ড নেবেন তার কম করে ৫ বছরের ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই দেখে নেবেন। এই তথ্য আপনারা মানি কন্ট্রোল ডট কম ওয়েবসাইট থেকে অনায়াসে জানতে পারবেন।

কোন মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করলে পাবেন ভালো ও বেশি লাভ?

আপনাদের উপরের তথ্য দ্বারা মিউচুয়াল ফান্ডে স্মার্ট ভাবে কিভাবে ইনভেস্ট করবেন তার সম্মন্ধে জানতে পারলেন। এবার প্রশ্ন হলো যে কোন কোম্পানি বা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিমে ইনভেস্ট করলে ভালো রিটার্ন পাবেন।

কিভাবে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম চালু করবেন?

আপনারা মিউচুয়াল ফান্ড সম্মন্ধে সমস্ত তথ্য জানতে পারলেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম নিতে চান কিন্তু কিভাবে নেবেন তা বুঝতে পারছেন না। তাহলে জেনে নিন এই কাজ কিভাবে করবেন।

প্রথমে আপনাদের জানিয়ে দি যে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম শুরু করতে আপনাকে অনেক টাকা দিতে হবে না মাত্র ৫০০ টাকা প্রতিমাসে দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম শুরু করতে পারবেন।

আর যখন মন হবে টাকার পরিমান বাড়াতেও পারেন আর যদি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম বন্ধ করতে চান তাহলে যে কোনো সময়ে এই মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম বন্ধ করতে পারবেন। এবার জেনে নিন কিভাবে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম শুরু করবেন।

ক) আপনারা সরাসরি আপনার ব্যাংকে গিয়ে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম ( Mutual Funds SIP) শুরু করতে পারেন।

খ) যদি আপনার অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা মোবাইল ব্যাঙ্কিং থাকে তাহলে সরাসরি ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং ওয়েবসাইটের দ্বারা বা ব্যাংকের মোবাইল অপ দ্বারা মিউচুয়াল ফান্ড শুরু করতে পারবেন।

গ) পেটিএম / গুগল পে / ফোন পে এই ধরণের মোবাইল এপের দ্বারা সহজে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম শুরু করতে পারবেন।

মিউচুয়াল ফান্ড মাসিক টাকা হিসাবে চলে। মিউচুয়াল ফান্ডে প্রতি মাসে টাকা দিতে হয় তাই মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম (Mutual Funds SIP) নেবার সময় দুটি অপশন থাকে

i) প্রতিমাসে অটোমেটিক ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কেটে যাবে 

ii) নিজের থেকে প্রতিমাসে টাকা জমা দেবেন।

আমরা আপনাদের প্রথমের অপশনটি নিতে বলবো কারণ বিভিন্ন কাজে আমাদের মাথা থেকে পেমেন্ট করার কথা বেরিয়ে যার ক্ষতি আপনাদের হতে পারে।

আশা করছি আপনারা মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম সমন্ধে সমস্ত তথ্য জানতে পারলেন। এবার আপনারা সরল ভাবে মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম শুরু করতে পারবেন। যদি আরো কিছু জানতে চান তাহলে নিচে কমেন্ট করতে জানাতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top