Simple Ways to Stay Slim in Bengali: আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রত্যেক মেয়েরাই স্লিম থাকার জন্য সবরকম উপায় অবলম্বন করে থাকেন। নিজেকে আরও বেশি স্লীম ও সুন্দর করে তোলার জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে অনেকের। তাছাড়া বেশিরভাগ সময় স্লিম থাকতে গিয়ে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় সকলকে।
বিশেষ করে চাকরিতে ঢোকার পর অথবা বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তান হওয়ার পর থেকে তো আর কথাই নেই, মোটা হওয়া দিন দিন বেড়েই চলে। ওজন বেড়ে যায় দ্বিগুণ হারে।
কারই বা ভালো লাগে বলুন বেশি ওজন নিয়ে ঘোরাফেরা করতে? ওজন যেন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে করা যায় না, তাই না। নিয়মিত ডায়েট চার্ট মেনে, ব্যায়াম করে, তাও নিয়ন্ত্রণে আন যাচ্ছে না ওজনকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এমন কিছু টিপস মাথায় রাখতে পারেন, যেগুলিতে আপনার স্লিম থাকার স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক টিপস গুলি সম্পর্কে –
১) ডায়েটিং জরুরি :
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অথবা স্লিম হওয়ার জন্য প্রথমত যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল ডায়েট চার্ট। কিন্তু খাবার খাওয়ার মধ্যে বেশি গ্যাপ রাখা যাবে না।
অল্প পরিমাণে খেতে হবে এবং দিনে চার থেকে পাঁচবার খাওয়াটা জরুরি। তবে ভুলেও ডায়েট করতে গিয়ে না খেয়ে থাকার মতো ভুল করতে যাবেন না।
২) নিয়মিত ব্যায়াম করুন :
আমরা সবাই এখন ভীষণ ব্যস্ত, তা বললে তো হবে না, তার ফাঁকে কুড়ি মিনিট অন্তত নিজের জন্য সময় বের করুন, সেই সময়টা শরীরচর্চা অথবা ব্যায়াম করে নিজের শরীরের খেয়াল রাখতে পারেন।
তাতে কিন্তু শরীর এবং মন দুটোই ভাল থাকবে প্রয়োজনে হাঁটতে পারেন। আবার কখনো বারান্দায় দাঁড়িয়ে জগিং করে নিতে পারেন। এতেও আপনার ব্যায়াম হয়ে যাবে।
৩) রাতের খাবার খাওয়ার পর হালকা শরীরচর্চা:
রাতের খাবার খাওয়ার পর অনেকেই সোজাসাপ্টা বিছানাতে শুয়ে পড়েন, এটা কিন্তু একেবারেই ভালো নয় শরীরের পক্ষে। রাতের খাবার খাওয়ার পর হালকা শরীরচর্চা করতে পারেন কিন্তু, খাবার হজম হওয়ার পাশাপাশি আপনার শরীরকে ফিট এবং শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হতে পারবে না।
আবার খাবার খাওয়ার দু’ঘণ্টা পর একটু হালকা হেঁটে নিতে পারেেন। সে ক্ষেত্রে কিন্তু খাবার খাওয়া টা বেশি রাতে করলে হবে না, ন’টার মধ্যে রাতের খাবার সেরে নেওয়াটা শরীরের পক্ষে ভালো। এতে শরীর ঝরঝরে থাকবে।
৪) পরিমাণমতো ক্যালরি গ্রহণ :
শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালরি থাকলে শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে। বিশেষ করে মেয়েদের প্রতিদিন ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ হলো ১০০০ – ১৫০০, এর বেশি না হওয়াই ভাল।
সে তুলনায় পুরুষদের শারীরিক চাহিদা একটু বেশি, তাই তাদের দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ হলো ২০০০। তবে খেয়াল রাখবেন এর চেয়ে বেশি হলে কিন্তু ভুড়ি বাড়তে থাকবে তরতরিয়ে।
৫) উল্টোপাল্টা ব্যায়াম নয় :
সবার শরীর সমান ধাঁচে তৈরী নয়, তেমনি সবার শরীরে সমান ব্যায়াম কার্যকর নাও হতে পারে, সে ক্ষেত্রে নিজের শরীর অনুযায়ী ব্যায়াম করুন।
এলোপাথাড়ি ব্যায়াম না করে নিজের শরীরের সাথে মানানসই ব্যায়াম বেছে নেওয়াটা জরুরি। সেই সাথে আরেকটা জরুরি কথা, বাজার থেকে সস কিনে খাওয়া টা বাদ দিন। এতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো নয়।
৬) ওজন মাপুন :
আপনি যদি স্লিম হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে প্রথমত ওজন মাপার মেশিন ঘরে রাখতে পারেন, প্রতি সপ্তাহে একদিন নিজের ওজন মাপুন এবং সেই দিনটি যেন একই দিন একই সময় হয়ে থাকে। এই অভ্যাস কিন্তু আপনাকে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে আরও বেশি সতর্ক করে তুলবে।
৭) সঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়া করুন :
স্লিম থাকার জন্য অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া একেবারেই নয়। ঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাবার খেতে হবে। এটা কিন্তু হজম ক্ষমতা যেমন সচল ও সঠিক রাখে, তেমনি শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমতে পারে না।
৮) ব্রেকফাস্ট জরুরি :
অনেকের ধারণা আছে রোগা হওয়ার জন্য না খেয়ে থাকাটা সবচেয়ে বেস্ট অপশন। তবে এই ধারণা আপনার শরীরকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। রোগা হওয়ার পরিবর্তে ওজন বাড়তে পারে এবং শরীর অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
প্রতিদিন ব্রেকফাস্ট খাওয়াটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পেট দীর্ঘক্ষন খালি রাখবেন না একেবারেই। এতে শরীরের মেটাবলিজম কমে যাবে এবং ওজন বাড়বে খুব তাড়াতাড়ি।
সেইসাথে ভাজাপোড়া খাবার ইচ্ছা জাগলে সপ্তাহে একদিন সীমিত পরিমাণে খেতে পারেন। তবে প্রতিদিনের মত খাওয়ার অভ্যাস টা ত্যাগ করতে হবে। চেষ্টা করবেন সকালের ব্রেকফাস্ট টা যেন একটু ভারী হয়।
৯) খাবার প্লেট এর আকার :
একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন খাবার প্লেট যত বেশি ছোট হবে ততো কিন্তু আপনার খাবার পরিমাণ টা সঠিক পরিমাণে থাকবে। খাবার প্লেট বড় হলে খাবারের পরিমান টাও বেড়ে যায়।
তাই শরীরকে স্লিম রাখার জন্য খাবার প্লেট ছোট করুন এবং একবারে খাওয়ার জায়গায় দুই থেকে তিনবার করে অল্প পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। খাবার একবারই প্লেটে তুলবেন না।
১০) কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার :
পর্যাপ্ত পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকার পাশাপাশি ওজনটাও থাকে আপনার হাতের মুঠোয়। যেমন ডায়েট চলাকালীন আলু, ভাত, রুটি, খেতে পারেন পরিমাণমতো। তবে লাল চালের ভাত ও লাল আটার রুটি বেশি উপকার এক্ষেত্রে।
নিজেকে স্লিম করে তোলার জন্য একেবারে না খেয়ে থাকার চেয়ে বারবার অল্প অল্প করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। তবে খেয়াল রাখবেন যত ভালোই পছন্দের পদ রান্না হোক না কেন, খাবার পরিমাণ টা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়। দরকার হলে দুই থেকে তিন বার ধরে অল্প পরিমাণে খান।
সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে খাবার খাওয়ার ফলে শরীর সুস্থ থাকার পাশাপাশি আপনাকে কেমন স্লিম লাগবে সেটা আপনি নিজের চোখেই দেখতে পাবেন।