আপনি কি জমি বিক্রি করতে চাইছেন? সঠিক দাম পাচ্ছেন না অন্যের কাছে? বর্তমান বাজারমুল্যে জমি বিক্রয় করতে চান? তাহলে জেনে নিন কিভাবে বাজারমুল্যে নিজের জমি বিক্রয় করবেন।
যুগ যুগ ধরেই জমি আমাদের সমাজে একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সম্পদ হিসেবে জমি সব সময়েই গুরুত্বপূর্ন। এই গুরুত্বপূর্ন হবার কারণ হলো জমি থেকে নিয়মিত ফসল বা আয় পাওয়া যায়, সেই সাথে জমির বিক্রয় মূল্য দিন দিন বাড়তে থাকে।
তাই সবাই চায় প্রয়োজনের সময়ে জমি বিক্রি করে ভালো দাম পেতে। কিন্তু অনেক সময়ে প্রয়োজনের সময় উপযুক্ত মূল্যের ক্রেতা পাওয়া যায় না। তখন সেই জমি বিক্রেতাকে কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়। এতে করে বিক্রেতা ন্যায্য মূল্য পায় না।
তাই অনেকেই জমি বিক্রির কথা আসলে সংকিত হন এ ভেবে যে, ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাবে কিনা? অনেকেই বাজার মূল্যে জমি বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন, আবার অনেকেই বাজার মূল্য পান না।
এজন্য আমাদের জেনে রাখতে হবে যে, কিভাবে জমি বিক্রির সময় বাজার মূল্য পাওয়া যাবে। তাহলে আমাদের মত অনেকেই জমি বিক্রি করার সময় সমস্যায় পড়বে না।
আজ আমরা আলোচনা করবো, কিভাবে জমির বাজার মূল্য পাওয়া যাবে তা নিয়ে। এ লেখা থেকে আপনার জমির বাজার মূল্য কিভাবে পাওয়া যায় তার কৌশল জানতে পারবেন।
এতে করে ভবিষ্যতে আপনি জমি বিক্রি করার সময় দাম নিয়ে ঝামেলায় পড়বেন না। সঠিক দামেই ঐ জমি বিক্রি করতে পারবেন। আসুন দেখে নিই, কিভাবে জমি বিক্রি করার সময় বাজার মূল্যে বিক্রি করা যায়।
জমি বাজার দামে বিক্রি করতে হলে কি কি করতে হবে?
আপনাদের জন্য এ সংক্রান্ত কিছু কৌশল নিয়ে নিচে আলোচনা করছি।
১) জমির ক্রেতার সাথে সরাসরি কথা বলা। অনেক সময় জমির ক্রেতা সঠিক দামই পরিশোধ করে থাকে কিন্তু মধ্যসত্তাভোগী ঐ দাম থেকে অংশ নিলে জমি বিক্রেতা কম টাকা পায়।
এ সমস্যা হতে মুক্তি পেতে বিক্রেতাকে অবশ্যই ক্রেতার সাথে কথা বলতে হবে এবং বিক্রেতা নিজে ক্রেতার সাথে কথা বলে দাম ঠিক করবে।
তাহলে মধ্যসত্তাভোগীর সুযোগ নেয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। এভাবে বিক্রেতা বাজার মূল্য পাবার সম্ভাবনা থাকে।
২) কোন সুবিধাজনক ক্রেতা পাওয়া না গেলে বিক্রেতা স্থানীয় পত্রিকায় জমি বিক্রি সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দিতে পারে। এতে করে অনেক মানুষ এই জমি বিক্রির খবর পাবে সেই সাথে ভালো দাম পাবার সম্ভাবনা বাড়বে।
৩) কিছু ক্রেতা পাওয়া গেলে তাদের সাথে সঠিকভাবে বোঝাপড়া করতে হবে এবং দাম ও অন্যান্য বিষয়ে চুক্তি করতে হবে।
৪) স্থানীয় ভালো উকিলের সাথে যোগাযোগ করে জমি বিক্রির বিষয়াদি নিয়ে কথা বলতে হবে।
৫) উকিলের কাছ থেকে প্রথমে জমি বিক্রির দলিলের খসড়া চেয়ে নিন। ভালো করে দেখে নিন এখানে আপনার বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু আছে কিনা।
৬) ট্রেজারী অফিস থেকে ন্যায্য মূল্যে স্ট্যাম্প কিনুন, এতে করে আপনার হাজার খানেক টাকা বেঁচে যাবে। কারণ স্থানীয় ভেন্ডর থেকে স্ট্যাম্প কিনলে অনেক চড়া দাম দিয়ে কিনতে হয়। তাই ট্রেজারী থেকে স্ট্যাম্প কিনে নেবেন।
৭) স্ট্যাম্প পেপারে কি লেখা হয়েছে তা ভালো করে বুঝে নিয়ে স্বাক্ষর করুন।
৮) দলিল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে নিজে যান এবং নিজে সবার সাথে কথা বলে রেজিস্ট্রেশন ফি দিন। অনেক সময় মধ্যসত্তাভোগীরা রেজিস্ট্রেশন করার সময় বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে। তাই নিজে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে সঠিক টাকাটি দিয়েই রেজিস্ট্রেশন করুন।
৯) অভিনন্দন। আপনি জমি বিক্রি করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।
এভাবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আপনি জমি বিক্রি করলে বাজার দাম পাবেন সেই সাথে অন্য কোন ঝামেলা ছাড়াই জমি বিক্রি করতে পারবেন। আজ আমরা আপনাদের সাথে জমি বিক্রি নিয়ে বিষদ আলোচনা করলাম।
এতে করে আপনাদের জমি বিক্রি করার সময় বাজার মূল্য পেতে অসুবিধা হবে না, সেই সাথে কোন মধ্যসত্তাভোগী আপনার জমি বিক্রি টাকা থেকে অংশ নিতে পারবে না। আগামীতে আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো, তাই আমাদের পেজে নিয়মিত চোখ রাখুন।
এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে জমি থেকে আয় করার ব্যবস্থা করতে পারে।