শিরোনাম পড়ে কি অবাক হয়েছেন পাঠক? ভাবছেন শ্যাম্পু করার আবার সঠিক নিয়ম কি? সারাজীবনই তো চুলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হয় বলেই সবাই জানে। এর আবার সঠিক নিয়ম কি?
চুলে শ্যাম্পু করার অবশ্যই সঠিক নিয়ম রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, শ্যাম্পু করার পরও চুল অনুজ্জ্বল, তেলতেলে, শুষ্ক দেখাচ্ছে, প্রচুর চুল ঝরছে এবং চুল ঘাসের মত দেখাচ্ছে। সঠিক নিয়মে শ্যাম্পু করলে চুল দেখাবে ঝলমলে, ঝরঝরে, মাথার ত্বকে কোন তেলতেলে ভাব থাকবে না, এবং চুলও কম ঝরবে।
এখন নিশ্চয়ই জানার আগ্রহ হচ্ছে, যে শ্যাম্পু করার সঠিক নিয়মগুলো কি? যেভাবে শ্যাম্পু করলে চুল সুন্দর দেখাবে। সুপ্রিয় পাঠক, আজ আমরা শ্যাম্পু করার সঠিক উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
শ্যাম্পু করার সঠিক নিয়ম
১. চুল আচড়ে নিন
অনেক সময় চুল না আচড়েই আমরা জট বাধা চুলে শ্যাম্পু করি। ফলে চুলের গোড়ায় ময়লা থেকেই যায়, চুলে আরো জট ধরে, ফলে শ্যাম্পু করার পর চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে অনেক চুল পড়ে যায়। তাই চুলে শ্যাম্পু করার আগে, চুল ভালভাবে আচড়ে জট ছাড়িয়ে নিন।
২. চুল ভিজিয়ে নিন
চুল না ভিজিয়ে শুকনা চুলে শ্যাম্পু দেওয়া মোটেও উচিত নয়। এতে করে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। চুলে কোন ফেনা হয়না, এবং ময়লাও পরিষ্কার হয়না ভালভাবে। তাই চুলে শ্যাম্পু দেওয়ার আগে চুল ভালভাবে ভিজিয়ে নিয়ে তারপর শ্যাম্পু লাগান।
৩. দুইবার শ্যাম্পু লাগান
ভেজা চুলে শ্যাম্পু লাগানোর পূর্বে শ্যাম্পুর সাথে একটু জল মিশিয়ে নিন। এতে শ্যাম্পু হালকা হবে, এবং চুলের গোড়ায় সহজে পৌছাবে। চুলে প্রথমবার শ্যাম্পু লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট আলতো করে ম্যাসাজ করুন।
এতে করে ভাল ফেলা হবে, চুলের ময়লা দূর হবে। মাঝে মাঝে হালকা জল ছিটিয়ে নিন। এরপর চুল ধুয়ে ফেলুন। প্রথমবার চুলে শ্যাম্পু করার পর অনেকক্ষণ ম্যাসাজ করার ফলে চুল থেকে সেবাম বা অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়।
তাই চুলে দ্বিতীয়বার শ্যাম্পু লাগান, এবার অনেকক্ষণ ম্যাসাজ করবেন না। ফেনা তৈরি করে চুল ধুয়ে ফেলুন।
৪. সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার
সবার চুলের ধরন এক নয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চুলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনার পাওয়া যায়। নিজের ধরন বুঝে হারবাল, এন্টি এজিং, থিক এন্ড লং, ব্ল্যাক সাইন, প্রোটিন শ্যাম্পু ইত্যাদি শ্যাম্পু নির্বাচন করুন।
সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের উপর চুলের উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য নির্ভর করবে। এছাড়া সঠিক শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার চুলের অন্যান্য সমস্যাও দূর করবে।
৫. কন্ডিশনার ব্যবহারের নিয়ম
কন্ডিশনার ব্যবহার করা হয় শ্যাম্পু করার পর চুলের রুক্ষতা দূর করে চুল নরম করার জন্য। চুলে শ্যাম্পু করার পর মাথার ত্বক বাদ দিয়ে চুলের নিচের দিক দিয়ে কন্ডিশনার লাগান, তারপর ১ মিনিট রেখ্ব ধুয়ে ফেলুন।
কোনভাবেই মাথার ত্বকে কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। এতে করে চুলের গোড়া নরম হয়ে চুল পড়ে যাবে। কন্ডিশনার চুলের নরমভাব ধরে রাখবে। চুল দেখবে সফট ও সিল্কি।
৬. চুল শুকানোর নিয়ম
চুলে শ্যাম্পু করার পর মোটা তোয়ালে দিয়ে ভালভাবে মুছে ফেলুন, যাতে চুলে পানি না থাকে। তবে চুলে বাড়ি দিবেন না, এতে চুলের আগা ফেটে যায়। এরপর চুল হালকা রোদে বা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নিন। ড্রায়ার একটু দূর থেকে ব্যবহার করুন।
সপ্তাহে দুদিনের বেশী হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। ড্রায়ার না থাকলে ফ্যানের বাতাসে চুল ছড়িয়ে রাখুন। শুকিয়ে যাবে। চুল শুকানোর পর আচড়ে নিন। ভেজা অবস্থায় চুল আচড়াবেন না।
উপসংহার
শ্যাম্পু করা হয় চুলের ময়লা দূর করে চুল ঝলমলে ও সুন্দর করতে। কিন্তু সঠিক উপায়ে শ্যাম্পু না করলে শ্যাম্পুন করার পর চুল আরো বেশী অনুজ্জ্বল ও রুক্ষ দেখাতে পারে।
এছাড়া ভালভাবে শ্যাম্পু না করলে চুল থেকে প্রাকৃতিক তেল বা সেবাম নিঃসৃত হয়, যার ফলে মনে হয় চুলে তেল দেওয়া হয়েছে। তাই সঠিক নিয়মে শ্যাম্পু করুন। চুলের সমস্যা দূর হওয়ার সাথে সাথে চুলের উজ্জ্বলতা, ও সফটনেস বৃদ্ধি পাবে। চুল দেখাবে আকর্ষণীয়।
আশা করি পোস্টটি সঠিক নিয়মে শ্যাম্পু করতে আপনাকে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করতে পারেন। আমরা অবশ্যই তথ্য জানিয়ে আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।