আম অনেক সুস্বাধু বলে ইতিমধ্যে বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় ফল হিসেবে মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে। কেউ কেউ তো বলে থাকেন “ফলের রাজা আম”। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় আম গাছ হয়ে থাকে।
কিছু কিছু এলাকায় আমের ভালো চাষ হয়ে থাকে। এতে করে আম কৃষকরা অনেক লাভবান হয়, সেই সাথে আমাদের ঘরে ঘরে আম খাওয়ার উৎসব হয়ে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু সময় আম চাষীরা প্রাকৃতিক ও রোগবালাইয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে।
সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে রোগবালাই থেকে আম গাছকে রক্ষা করা যায়। আম গাছের সঠিক পরিচর্যা করলে আমাদের অনেক আমচাষী ক্ষতির স্বীকার হতে হবে না।
আজ আমরা আপনাদের সাথে আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করবো। এতে করে আপনারা সহজেই আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এটি আপনাদের আমের পারিবারিক চাহিদা মেটবে এবং আম চাষীরা আয় করার সুযোগ লাভ করবেন। আসুন দেখে নিই আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত
-
যে কোন লোনের জন্য আবেদন করুন অনলাইনে 👇
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন -
লিচু চাষের সঠিক এবং সহজ পদ্ধতি
-
-
-
আমের মুকুল ও আম রক্ষা করার উপায়
আম চাষের সময় সঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে সার, পোকামাকড় দমন ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা না করলে আমের মুকুল ও আম ঝরে যায়। এতে করে আমের উৎপাদন ব্যাহত হয়। আমের মুকুল ও আম ঝরা রোধের জন্য কিছু উপায় নিচে দেয়া হলো।
১) প্রতিবছর আম ফল সংগ্রহের পর জুলাই-আগষ্ট মাসে গাছের মরা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা, পরগাছা ও শাখা-প্রশাখা ছেটে দিতে হবে। আম গাছকে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
২) সেপ্টেম্বর মাসের শেষে সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের মাত্রা নিচের টেবিলে দেয়া হলো।
সারের নাম |
গাছের বয়স ( বছর ) |
|||||
১-৪ |
৫-৭ |
৮-১০ |
১১-১৫ |
১৬-২০ |
২০ এর ঊর্দ্ধে |
|
গোবর (কেজি) |
২৬.২৫ |
৩৫ |
৪৩.৭৫ |
৫২.৫০ |
৭০ |
৮৫.৫০ |
ইউরিয়া (গ্রাম) |
৪৩৭.৫০ |
৮৭৫ |
১৩১২.৫০ |
১৭৫০ |
২৬২৫ |
৩৫০০ |
টিএসপি (গ্রাম) |
৪৩৭.৫০ |
৪৩৭.৫০ |
৮৭৫ |
৮৭৫ |
১২১২.৫০ |
১৭৫০ |
এমওপি(গ্রাম) |
১৭৫ |
৩৫০ |
৪৩৭.৫০ |
৭০০ |
৮৭৫ |
১৪০০ |
জিপসাম(গ্রাম) |
১৭৫ |
৩৫০ |
৪৩৭.৫০ |
৬১২.৫০ |
৭০০ |
৮৭৫ |
জিংক সালফেট(গ্রাম) |
১৭.৫০ |
১৭.৫০ |
২৬.২৫ |
২৬.২৫ |
৩৫ |
৪৩.৭৫ |
বরিক এসিড(গ্রাম) |
৩৫ |
৩৫ |
৫২.৫০ |
৫২.৫০ |
৭০ |
৮৭.৫০ |
৩) আমের মুকুল আসার ১ সপ্তাহের সময় আমের হপার পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড (ইমিটাফ, টিডো, কনফিডর) ৭০ ডব্লিউ জি প্রতি লিটার জলে ০.২ গ্রাম হারে অথবা সাইপারমেথ্রিন (রেলোথ্রিন, কট, রিপকর্ড) ১০ ইসি প্রতি লিটার জলে ১ মিলি হারে বা অন্যান্য অনুমোদিত কীটনাশক এবং এথ্রাকনোজ রোগ দমনের জন্য ম্যানকোজেব (ইন্ডোফিল, ডাইথেন, কম্প্যানিয়ন) এম-৪৫ প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম হারে একত্রে মিশিয়ে আমের মুকুল, পাতা, শাখাপ্রশাখা ও কান্ড ভালোভাবে জলে ভিজিয়ে স্প্রে করে দিতে হবে।
৪) মাটির রস শুকিয়ে গেলে নিয়মিত গাছের চারপাশে সেচ দিতে হবে। বৃষ্টিপাত শুরু হবার আগ পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে।
৫) ফুল ফোটা অবস্থায় জিবেরেলিক এসিড প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে স্প্রে করলেও আমের গুটি ঝরা কমে যায়। এছাড়া প্রতি মুকুলে আমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ফুল ফোটার ১০ দিন অন্তর ১০ লিটার জলে ছয় গ্রাম করে বরিক এসিড স্প্রে করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
আম পরিপূর্নরূপ নিতে কয়েকটি পর্যায় অতিক্রম করে থাকে। প্রতিটি পর্যায়েই আমের যত্ন নিতে হবে। তবে বিশেষ করে আমের মুকুল আসার আগে ও পরে বেশি করে যত্ন নিতে হবে। কারণ, আমের মুকুল নষ্ট হবার কারনেই আমের ফলন অনেক কমে যায়।
গাছে মুকুল আসার আগে যেমন স্প্রে করার প্রয়োজন নেই তেমনি মকুল ফোটা অবস্থায় কোনোভাবেই স্প্রে করা ঠিক হবে না। কেননা এই সময় প্রচুর সংখ্যক উপকারী পোকা আম বাগানে আসে এবং পরাগায়ণে সহযোগিতা করে। মনে রাখতে হবে যে, গাছে মুকুল আসার পর সঠিকভাবে দুইবার স্প্রে করতে পারলেই গাছে প্রচুর আম থাকবে।
আজ আমরা আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আগামীতে আপনাদের সাথে আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ নিয়ে আরো কিছু আলোচনা করবো, তাই আমাদের পেজে নিয়মিত চোখ রাখুন।
এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমের মুকুল ও আম ঝরা রোগ প্রতিরোধ করে সঠিকভাবে আম চাষ করে আয় করার ব্যবস্থা করতে পারে।
কৃষি নিয়ে আরো অনেক লেখা পেতে আমাদের সাইটের অন্য লেখাগুলি দেখুন। আমাদের লেখা ভালো লাগলে বা যেকোন মন্তব্য আমাদের ফেসবুক পাতায় লিখুন। আমরা আপনার মন্তব্যের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবো।