নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী 2024: ইতিহাস ও তাৎপর্য | Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti 2024: History and Significance

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী 2024 (Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti 2024 Date Time and Significance) 2024 নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী ইতিহাস এবং জানুন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী কেন পালন করা হয়? নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।

নেতাজি জয়ন্তী অথবা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী, তার জন্মদিন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, ঝাড়খন্ড, আসাম, ওড়িশা রাজ্যের একটি সরকারি ছুটির দিন হল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী, এই দিনটি। ২৩ শে জানুয়ারি নেতাজি জয়ন্তী পালিত হয়।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী ইতিহাস ও তাৎপর্য - Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti History and Significance
2024 নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস জয়ন্তী ইতিহাস ও তাৎপর্য – 2024 Netaji Subhash Chandra Bose Jayanti History and Significance

ভারতের অন্যান্য রাজ্য তেও এই দিনটি সমানভাবে মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। এছাড়া এটি দেশপ্রেম দিবস হিসেবেও অনেকেই জানেন। নেতাজির অন্তর্ধনের পাঁচ মাস পর রেঙ্গুনে অভিনব এবং জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে নেতাজি জয়ন্তী পালিত হয়েছিল।

নেতাজি জয়ন্তী উপলক্ষে কলকাতায় এই দিন নেতাজির বাড়ি নেতাজি ভবনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নেতাজি পরিবারের আদি বাসস্থান দক্ষিণ ২৪ পরগনা সুভাষগ্রামেও বিশেষ ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কলকাতার রেড রোডের নেতাজি মূর্তির সামনে বিশেষ কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী ইতিহাস ও তাৎপর্য

এই দিনটি একটি ছুটির দিন এবং সারা ভারত ফরোয়ার্ড ব্লক ও সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবার নেতাজির জন্মদিনটি ভারতের দেশপ্রেম দিবস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দিনটিকে দেশ নায়ক দিবস এবং জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছেন, কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেই দাবি দুটো আজও পূরণ করা হয়নি।

তবে সেটা না হলেও ২০২১ সালের ১৯ শে জানুয়ারি ভারত সরকার ঘোষণা করেছে যে, এটি প্রতিবছর পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করা হবে। তাই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর পরিবার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বাম দলগুলো সদস্যরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল।

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর এই উক্তিগুলি যেমন:- “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” অথবা “দিল্লি চলো, দিল্লি চলো” সেই কতদিন আগে থেকে এই কথাগুলি আজও ভারতবাসীর মনে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতবর্ষের সমস্ত যুবক দের অনুপ্রেরণা বাড়িয়ে দিয়েছিল এই সমস্ত উক্তিগুলি।

জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর ছোট ছেলে নেতাজি নামেই পরিচিত সকলের কাছে। আজ তাঁরই জন্মদিন উপলক্ষে নেতাজি জয়ন্তী পালন করা হয়। তাছাড়া এমন মহান প্রানের বিনাশ কখনোই সম্ভব নয়, এমনটাই বিশ্বাস করেন তার অনুরাগীরা।

নেতাজির আদর্শে আজও অনুপ্রাণিত হয় দেশের মানুষ। তার আদর্শ জাগিয়ে তুলে মানুষের সমাজ চেতনাকে। তিনি ছিলেন একজন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী, মাতৃভূমির প্রতি সুভাস ভালবাসা জানিয়েছিল বিশেষ ভাবে।

প্রজাতন্ত্র দিবস ইতিহাস ও তাৎপর্য

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জয়ন্তীর ভিডিও:

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রিয় খাবার:

তিনি বাঙালি খাবার খেতে খুবই পছন্দ করতেন। ডাল, ভাত, লুচি, তরকারি, দই, কলা, ছিল তার বাঙালি খাবারের মধ্যে প্রিয় খাবার। তাছাড়া সিদ্ধ ভাত, খিচুড়ি, এবং মুগ ডালও পছন্দ করতেন তিনি। আসলে তিনি আগা গোড়াই ছিলেন বাঙালি।

তবে তার পছন্দের খাবারের মধ্যে পছন্দ গুলি ছিল খুবই সাধারণ। রসগোল্লা, পিঠে পুলি, চমচম এবং সন্দেশের মতো মিষ্টি তিনি খুবই পছন্দ করতেন। এর পাশাপাশি বেশিরভাগ সময় চা এবং লেবুর শরবত খেতে ভালোবাসতেন।

তিনি চা খেতে এতটাই ভালবাসতেন যে দিনে কুড়ি থেকে ত্রিশ কাপ চা ছিল সুভাষচন্দ্র বসুর স্বাভাবিক চা পানের কোটা। নারকেল দিয়ে তৈরি চিনির পুলি, মনোহরা, নারকেল নাড়ু, রসকরা, ছাতুর বরফি, মোয়া, মুড়ির নাড়ু, তিলের নাড়ু এবং তিলের চাকতি ছিল তার বেশ পছন্দের খাবার গুলির মধ্যে অন্যতম।

গান্ধী জয়ন্তী ইতিহাস ও তাৎপর্য

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাণী ও উক্তি:

“তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাকে স্বাধীনতা দেব।”
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত এই উক্তি যা কখনোই ভোলার নয়।

“যখন আমরা দাঁড়াই আজাদ হিন্দ ফৌজকে গ্রানাইটের দেয়ালের মতো হতে হবে,
আমরা যখন মিছিল করি তখন আজাদ হিন্দ ফৌজকে স্টিম রোলার এর মত হতে হবে।”

“আলোচনার মাধ্যমে ইতিহাসের কোন বাস্তব পরিবর্তন কখনোই অর্জিত হয়নি।”

“রাজনৈতিক দর কষাকষির রহস্য হলো আপনি আসলে যা আছেন, তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী দেখায়।”

“শুধুমাত্র নিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ এবং নিখুঁত ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে ভারতীয় মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা যেতে পারে।”

“একজন ব্যক্তি একটি ধারণার জন্য মারা যেতে পারে, কিন্তু সেই ধারণাটি তার মৃত্যুর পরে হাজার জীবনে অবতীর্ণ হবে।

স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা কখনোই ভোলার নয়, আজাদ হিন্দ বাহিনীর মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তার মৃত্যু নিয়েও বিশেষ মতভেদ রয়েছে। এমন এক বীর যোদ্ধা দেশের জন্য নিজের জীবনটাকে উৎসর্গীকৃত করে গিয়েছেন।

তাই এমন মহান ব্যাক্তির জন্ম তিথিকে বিশেষ ভাবে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করার জন্য নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস জয়ন্তী অথবা নেতাজি জয়ন্তী পালন করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় নেতাজির মূর্তিতে মালা পরিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়ে থাকে।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ২৩ শে জানুয়ারি এই জন্মতারিখ টি নেতাজি জয়ন্তী হিসেবে সারা ভারতে পালিত হয়ে আসছে। এই দিনটি ছুটি হিসেবে সমস্ত সরকারি কাজকর্ম স্কুল, কলেজ, বন্ধ থাকে। তার পাশাপাশি এই দিন উপলক্ষে অনেক জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top