মাঘ বিহু 2025: ইতিহাস ও তাৎপর্য | Magh Bihu 2025: History and Significance

মাঘ বিহু 2025 (Magh Bihu 2025 Date Time and Significance) 2025 মাঘ বিহুর ইতিহাস এবং জানুন মাঘ বিহু কেন পালন করা হয়? মাঘ বিহুর তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য মাঘ বিহুর গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।

বিভিন্ন রকমের উৎসবের মধ্যে মাঘ বিহু (Magh Bihu) হল একটি উৎসব, যা কিনা অসমে পালিত হতো। পৌষ মাঘ মাসের সংক্রান্তির দিন মাঘ বিহু উদযাপন করা হয়।

মাঘ বিহু ইতিহাস ও তাৎপর্য - Magh Bihu History and Significance
মাঘ বিহু 2025 ইতিহাস ও তাৎপর্য – Magh Bihu 2025 History and Significance

মাঘ বিহু এর আরেকটি নাম হল ভোগালী বিহু। তাছাড়া এই উৎসব তিনদিন ধরে পালন করা হয়।

পৌষ পার্বণ ইতিহাস ও তাৎপর্য

মাঘ বিহুর ইতিহাস 2025: 

প্রতিটি উৎসবের কোন না কোন ইতিহাস তো থাকেই, কোন সময় থেকে শুরু হয়েছে, সেটাও একটা বিষয়। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন ধরনের উৎসবের সাথে জড়িত। আহোম রাজত্বকালে রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই বিহু পালন করা হয়েছিল বলে জানা যায়।

বিহুর সময় রংঘর প্রাঙ্গণে বিভিন্ন রকমের খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। আহোম রাজা সেখানে উপস্থিত থেকে এই উৎসব খুবই ভালোভাবে উপভোগ করতেন। সেই সময় থেকে অসমে মহিষের যুদ্ধ, মোরগ লড়াই ইত্যাদির প্রচলন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

বিহু:

সকালে স্নান করে মেঝেতে আগুন লাগানো হয়, আগুন জালানোর পর মন্ত্র উচ্চারণ করে ঘি, চাল, মুগ ডাল, ইত্যাদি সেই আগুনে অর্পণ করা হয় অগ্নিদেবকে প্রসন্ন করার জন্য। এই প্রথা চলে আসছে অনেকদিন থেকে। তারপর ভোজ ভাত খাওয়া হয়। গুরুদেব এবং ভক্তদের ঘরে নিমন্ত্রণ করে নতুন ধান দিয়ে প্রস্তুত করা খাবার দিয়ে আশীর্বাদ নেওয়া হয়।

মকর সংক্রান্তি ইতিহাস ও তাৎপর্য

উরুকা:

বিহুর দিন বিশেষ করে যুবকরা খড় দিয়ে একটা ঘর মতো তৈরি করে, যাকে মেজিঘর বলা হয়। সবাই একসাথে ভোজন করে ও বিহুর গান গাইতে থাকে, এই ঘর কে হারলি ঘর বা ভেরাঘর ও বলে।

উরুকায় মাছ ধরার পরম্পরা:

মাঘ বিহুর ঊরুকা দিনে সবাই একসাথে কোন নির্দিষ্ট পুকুর, খাল, দীঘি অথবা কোন জলাশয় থেকে মাছ ধরেন। জাতী, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মাছ ধরে আনন্দ উপভোগ করেন।

এই প্রথার মাধ্যমে সকল ব্যক্তি পুকুর, খাল বা অন্য কোন জলাশয় থেকে যে মাছ ধরেন সেই মাছ দিয়ে সেই দিনের রাতের ভোজন সম্পন্ন করা হয় অর্থাৎ রান্নাবান্নার আয়োজন করা হয়।

উরুকার রাত্রের পরম্পরা: 

উরুকার দিনে রাতে যুবকদের অন্যের ঘর থেকে শস্য, ক্ষেত থেকে ফসল চুরি করার পরম্পরা রয়েছে। যার মধ্যে দিয়ে অনেক খানি আনন্দ উপভোগ করা যায়। আর এটিকে তারা খুবই উপভোগ ও করেন।

কোনরকম চুরির দায়ে কাউকে শাস্তিও দেওয়া হয় না। কারণ এটিও বিহু উৎসবের একটি অংশ। এছাড়া চুরি করার প্রথা থাকার জন্য এই বিহু কে চোর বিহু নামেও জানা যায়।

চৈত্র নবরাত্রি ইতিহাস ও তাৎপর্য

বিহুর খাদ্য: 

মাঘ বিহু কে ভোগালী অর্থাৎ ভোজনের উৎসব বলা হয়। অসম বাসীরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা, জলপান, নাড়ু ইত্যাদি প্রস্তুত করেন। তিলের পিঠা, মাঘ বিহুর প্রধান পিঠা বলে মনে করা হয়।

মাঘ বিহুর সময় প্রস্তুত করা বিভিন্ন ধরনের পিঠার মধ্যে রয়েছে জিলাপিঠা, সুতুলি পিঠা, চুঙ্গা পিঠা, হেঁচা পিঠা, ডেকা পিঠা, ভুরভুরি পিঠা, আরো বিভিন্ন রকমের পিঠা। এছাড়াও কোমল চাল, ভাজা চাল, চিড়ে, মুড়ি, সন্দেশ, খই, ইত্যাদি জলপানের জন্য তৈরি করা হয়।

এছাড়া অসমের জাতীয় উৎসব এই মাঘ বিহু উৎসব। বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিহু গান দিয়ে তারা এই উৎসবটি খুব সুন্দর ভাবে উদযাপন করেন।

“বিহুর এ লগন মধুর এ লগন আকাশে বাতাসে লাগিল রে, চম্পা ফুটিছে, চামেলি ফুটেছে, তার সুবাসে ময়না আমার ভাসিলো রে..” কি নিশ্চয়ই চেনা চেনা লাগছে, তাই তো ! এছাড়াও অনেক রকম বিহুর গান দিয়ে তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপন করেন। তার সাথে সাথে খাওয়া-দাওয়া, নতুন পোশাক পরিচ্ছদ পরে ঘোরা, এই দিনটিকে আরো বেশি স্মরণীয় করে তোলে।

অসমে নারীরা শাড়ি, চুড়িতে আর তাদের ট্রাডিশনাল সাজে সেজে এই দিনটিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আনন্দ মূখর করে তোলে এই বিহু উৎসবের দিনটি। যেহেতু এই উৎসবটি পৌষ মাঘ মাসের মাঝামাঝিতে হয় তাই এই উৎসবে বিভিন্ন রকমের পিঠা যেকোন মানুষের মনকে ভরিয়ে তুলতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top