কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা 2023 তিথি ও সময় ভারতীয় সময় অনুসারে। কবে পড়েছে এবছরের কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা? কোজাগরী লক্ষ্মী পুজার শুভ সময় কখন? জানুন কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো মুহূর্ত ও কেনাকাটার শুভ মুহূর্ত এবং তাৎপর্য।
দুর্গাপুজো (Durga Puja) কেটে যাওয়ার সাথে সাথেই বিজয় দশমীর (Vijaya Dashami) পর মানুষের মন একেবারে ভারাক্রান্ত। তবে সামনে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা আছে। সেই আশায় অনেকেই খুশি টাকে বজায় রেখেছে।
আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা আরাধনা করা হয় বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে। এক চিরন্তন প্রার্থনা, প্রায় প্রতি ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা (Devi Lakshmi Puja) হয়ে থাকে। লক্ষ্মী হলেন ধন-সম্পদের দেবী। ধন-সম্পদের আশায় ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা হয়ে থাকে।
নারীপুরুষ নির্বিশেষে এই পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। সকলেই প্রায় সারা বছর প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজো করে থাকেন। এছাড়াও আশ্বিন সংক্রান্তি, পৌষ সংক্রান্তি, চৈত্র সংক্রান্তিতে, এবং পূর্ণিমা তে লক্ষী পূজা হয়।
লক্ষ্মী হলেন খারিফ শস্য, রবি শস্য কোন সময় হয়, ঠিক সেইসময় বাঙালি হিন্দু ঘরে ঘরে শুরু হয় লক্ষ্মীর আরাধনা।
এই বছর কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা 2023 কবে?
Kojagari Lakshmi Puja
28 October 2023
(Saturday)Purnima Muhurat Start
4:10 AM on 28 October 2023
Purnima Muhurat End
1:50 AM on 29 October 2023
কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার বাংলায় তারিখ
কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা
28 অক্টোবর 2023
(শনিবার)পূর্ণিমার মুহুর্ত শুরু
28 অক্টোবর 2023 তারিখে সকাল 4:10 টা
পূর্ণিমা মুহুর্ত শেষ
29 অক্টোবর 2023 তারিখে সকাল 1:50 টা
কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার তাৎপর্য 2023:
শোনা যায় দেবী লক্ষ্মী নাকি খুবই চঞ্চলা, তবে ক্রোধী দেবী নন, তাই যেকোনো গৃহস্থলীকে লক্ষ্মী ঝাঁপি করে লক্ষ্মীর কৃপা দেন। গৃহকোণে প্রতি বৃহস্পতিবার সামান্য ফুল বাতাসা তে চাল গুঁড়োর আলপনা সেটাই একটু বড় আকারের করা হয়, এই কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে।
গবেষকদের মতে অনুসারে, বাংলার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে কৃষি সমাজের গভীর প্রভাব। অবশ্য তার প্রমাণ মেলে পুজোর উপকরণ আর আচার-অনুষ্ঠান দেখে। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে একেবারে জড়িয়ে আছে আলপনা, পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে লক্ষ্মী পূজার আলপনায় দেখা যায় আঞ্চলিকতার প্রভাব।
কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার ইতিহাস 2023:
কাহিনী অনুসারে, জগৎশেঠ অল্প বয়সে বিদ্বান হয়ে উঠেছিলেন এবং সেই কথা দিল্লীশ্বর এর কানে পৌঁছায়। তিনি তখন তাকে দেখতে চান। এরপর জগৎশেঠ দিল্লি চলে গেলে রাজা তার কথাবার্তায় খুশি হয়ে তাকে দিল্লিতে থাকতে বলেন। জগৎশেঠও দিল্লিতে থেকে যান।
কিছুদিন পরে রাজা তাকে বলেন তোমার উপর আমি অত্যন্ত প্রীত। তুমি যা চাইবে আমি তোমাকে তাই দান করব। তখন জগৎশেঠে বাড়ি ফিরে মাকে সব বললেন। বুদ্ধিমতী জগৎশেঠের মা, সন্তানের মঙ্গল কামনার জন্য আগে রাজাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করিয়ে নিয়ে তারপর জানাতে যে, কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে দিল্লিতে কোন গৃহস্থবাড়িতে যেন আলো না জালায়।
সেইমতো রাজার নির্দেশে ওই রাতে কেউ আলো জ্বালাই নি। কিন্তু জগৎশেঠের মা নিজের ঘরে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলেন এবং ঘরের দরজা খুলে অপেক্ষা করতে থাকলেন, যথাসময়ে দেবী লক্ষ্মী সাধারণ নারী রূপে এসে বললেন, আমি খুব পরিশ্রান্ত, আমাকে একটু আশ্রয় দেবে? জগৎশেঠের মা দেবীর ছলনা বুঝতে পারলেন।
তিনি দেবীকে ঘরে আশ্রয় দিলেন এবং বললেন, আমি নদীতে স্নান করতে যাচ্ছি, ফিরে না আসা পর্যন্ত আপনি এখানেই থাকবেন, দেবী তাতেই রাজি হলেন। এবার জগৎশেঠের মা নদীতে স্নান করতে গিয়ে প্রাণ ত্যাগ করলেন। ফলে সেদিন থেকে দেবী জগৎশেঠের ঘরে থেকে গেলেন।
আজও ধন-সম্পদের দেবী লক্ষ্মী কে পাওয়ার জন্য গৃহস্থবাড়িতে সারারাত ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালানো হয়।
এই বছরের কবে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা? জেনে নিন কেনাকাটার পাশাপাশি পূজার শুভ সময় ও মুহূর্ত। এছাড়াও কোজাগরী লক্ষ্মী পুজার তাৎপর্য, পূজা বিধি এবং এই সময় কি কাজ করা উচিৎ ও কি না করা উচিৎ জানুন সবকিছু।