কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম (KAPILA: Kalam Program for IP Literacy and Awareness) চালু করা হয়। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী ডাঃ এপিজে আবদুল কালামের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম কর্মসূচি চালু করেন।
কপিল কালাম প্রচার আইপি (বৌদ্ধিক সম্পত্তি) সাক্ষরতা এবং সচেতনতার জন্য কালাম প্রোগ্রামের একটি সংক্ষিপ্ত রূপ কপিলা।
কপিলা প্রোগ্রামটি কার্যত চালু হয়েছিল ২০২০ সালের ১৫ ই অক্টোবর, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, শ্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশঙ্ক’ এটি চালু করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম কর্মসূচির মাধ্যমে ভারত সরকার পেটেন্টিং ও উদ্ভাবনের সচেতনতা এবং গুরুত্ব প্রচারের কাজটি করে থাকে।
এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশের কল্যাণে নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কারের উৎসাহ সৃষ্টি হবে ফলে দেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উন্নতি লাভ করবে৷ আর পেটেন্ট সংরক্ষণের ফলে কার আবিষ্কার এবং কোন দেশের তা সম্পর্কে সবাই জানতে পারবে, ফলে আবিষ্কার চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
সুপ্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা, চলুন দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক। প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম সম্পর্কে জেনে নিন:
প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম কি?
এই প্রচারের অধীনে উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা তাদের আবিষ্কারের প্যাটেন্টসহ সঠিকভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করা প্রক্রিয়া সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন।এবং তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবেন।
এই প্রোগ্রামটি কলেজ এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে পেটেন্ট দাখিল করতে উৎসাহিত করবে। এই ক্ষেত্রের সচেতনতা বাড়াতে মন্ত্রণালয় ১৫ ই অক্টোবর থেকে ২৩ শে অক্টোবর পর্যন্ত ‘বৌদ্ধিক সম্পত্তি সাক্ষরতা সপ্তাহ’ হিসাবে পালন করে।
দেশের উচশিক্ষার হার বৃদ্ধি ও গবেষণাকে উৎসাহিত করতে প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
ক্পিলা কালাম প্রোগ্রামের লক্ষ্য
ক্যাপিলা কালাম কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার আবিষ্কারের পেটেন্টিংয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষামূলক কর্মসূচির সহায়তায় ভারতকে স্বনির্ভর করার দিকে পরিচালিত করার জন্য সচেতনতা ছড়িয়ে দেবে।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মাঝে আবিষ্কারের উদ্যম ছড়িয়ে দেয়া যাতে তারা বেশি বেশি নতুন জিনিস উদ্ভাবনে আগ্রহী হয়। এবং তাদের এই আবিষ্কারের পেটেন্টিংয়ের মাধ্যমে আবিষ্কার চুরি এড়ানো সম্ভব হয়। পেটেন্ট না করলে কার আবিষ্কার তা সম্পর্কে কোন ধারণা পরবর্তীতে পাওয়া যায়না।
তাই সকল আবিষ্কার তার আবিষ্কারকের নামসহ এবং যে দেশের আবিষ্কারক তা আবিষ্কার করেছেন সেই সকল বিস্তারিত জানতে পেটেন্টিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম – অন্যান্য সম্পর্কিত তথ্য
ইনস্টিটিউশন ইনোভেশন কাউন্সিলের (আইআইসি ২.০) বার্ষিক প্রতিবেদনও কপিল কালাম প্রচারের উদ্বোধনী দিনে উপস্থাপন করা হয়েছিল। আইআইসি ৩.০ চালু করা হয় এবং এর ওয়েবসাইটও ঘোষণা করা হয়েছিল।
ইনস্টিটিউশন ইনোভেশন কাউন্সিলটি ২০১৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রায় ১৭০০ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইআইসি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এগুলি আইআইসি ৩.০ এর অধীনে ৫০০০ উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এভাবে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইআইসি প্রতিষ্ঠার ফলে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। একটি দেশের উন্নতি এবং সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে সে দেশের তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবন শক্তি ও কর্মদক্ষতার উপর।
তারাই পারে দেশকে বিশ্বের দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে। যখন আমাদের দেশের উদ্ভাবনকৃত পণ্য বিশ্বের কাছে সমাদৃত হবে তখন দেশ হিসেবে ভারত অর্থনৈতিক উন্নতি ও উদ্ভাবনশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ করবে।
নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি এবং নতুন আবিষ্কার যখন অন্যান্য দেশে রপ্তানি করা হবে তখন বৈশ্বিক প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্ব বৃদ্ধি পাবে,সেই সাথে আসবে প্রচুর অর্থ। যা দ্বারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতের উন্নয়ন সম্ভব হবে।
দেশের শিক্ষার্থীদের এজন্যই উদ্ভাবন খাতে বেশী বেশী উৎসাহিত করা প্রয়োজন যাতে তারা নিজদের পেটেন্ট এ বিভিন্ন জিনিস আবিষ্কার করায় মনোযোগী হয়।
শেষ কথা
একটি দেশের প্রাণ হচ্ছে সে দেশের তরুণ প্রজন্ম। তাদের দক্ষতা, মেধা ও প্রাণশক্তির উপরই আমাদের সাফল্য নির্ভর করে। কারণ নতুন আবিষ্কার, নির্মাণ, উৎপাদন এবং সৃষ্টিশীল ক্রিয়া এগুলো নতুন প্রজন্ম তথা শিক্ষার্থীদের দ্বারাই সম্পন্ন হয়ে থাকে।
কিন্তু তাদেরকে যদি এ কাজে সঠিকভাবে উদ্বূদ্ধ না করা যায় বা সুবিধা প্রদান না করা হয় তাহলে তারা এ কাজে সফল হবেনা। এজন্য আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে তারা নতুন আবিষ্কারের জন্য গবেষণা, ও উদ্ভাবনে নিজস্বতা বজায় রাখতে পারে।
এজন্যই প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের নতুন গবেষনা ও পেটেন্ট সংরক্ষনের গুরুত্ব সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে নিয়মিত বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন করা হচ্ছে।
আশা করা যায় এসব উদ্যোগের ফলে দেশের শিক্ষার্থীরা নতুন পণ্য আবিষ্কারে আরো উৎসাহিত হবে। এবং দেশ অনেক বেশী উপকৃত হবে তাদের মাধ্যমে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী কপিলা কালাম প্রোগ্রাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দিতে পেরেছি।
সুপ্রিয় পাঠক, আমাদের লেখার উদ্দেশ্য থাকে ভারত সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প এবং তার অগ্রগতি সম্পর্কে আপনাদের জানানো, যাতে সেগুলো সম্পর্কে আপনারা অবগত হতে পারেন এবং সুবিধাসমূহ উপভোগ করতে পারেন।
কেন্দ্র সরকারের সমস্ত যোজনা | Click Here |
পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রকল্প | Click Here |
বাংলাভুমি হোম | Click Here |