জুমাতুল বিদা 2023 (Jamat Ul-Vida 2023 Date Time and Significance) 2023 জুমাতুল বিদা ইতিহাস এবং জানুন জুমাতুল বিদা কেন পালন করা হয়? জুমাতুল বিদা তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য জুমাতুল বিদা গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।
ইসলাম ধর্মাবলম্বী দের কাছে শুক্রবারের গুরুত্ব অনেকখানি। এই দিনটি যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন না তারাও কিন্তু নামাজ পড়ে দোয়া করার জন্য মসজিদে হাজির হন। তেমনি একটি বিশেষ দিন হল জুমাতুল বিদা।
জুমাতুল বিদা একটি আরবি শব্দ, আরবীতে “বিদা” শব্দের অর্থ হলো “শেষ”। জুমাতুল বিদার অর্থ হল শেষ শুক্রবার অথবা শেষ জুম্মা। এছাড়া রমজান মাসের শেষ জুম্মার দিনটি ইসলাম সমাজে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত।
জুমাতুল বিদার ঐতিহাসিক কাহিনী:
জুম্মা অর্থাৎ শুক্রবার এমন একটি দিন, যে দিনে মুসলিম পুরুষদের মধ্যে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে জুম্মার নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
এই জামাতের নামাজে মহিলারা উপস্থিত হতে পারেন, তবে তাদের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এই জামাতের প্রমাণ স্বরূপ আল কুরআনে ৬২ তম সূরা, নবম তম আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে যদিও ইসলামে কোন নির্দিষ্ট শুক্রবারকে পবিত্র দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় মুসলমানরা এটিকে রমজান মাসের দ্বিতীয় পবিত্রতম দিন এবং বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। জুমাতুল বিদার এই দিনে কিছু মুসলমান তাদের দিনের একটি বড় অংশ ইবাদতের জন্য ব্যয় করে থাকেন।
জুম্মার নামাজ:
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে জুম্মার নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি শুক্রবারে মসজিদে গিয়ে এই জুম্মার নামাজ পড়ে থাকেন। রমজান মাসের শেষ জুম্মাবার অর্থাৎ শুক্রবার চলাকালীন ইসলাম অনুসারীরা জুমাতুল বিদা পালন করেন।
এই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ তাদের কাছে। সারা বিশ্বের মুসলমানরা মসজিদে একত্রিত হয়ে নামাজ পড়েন, পবিত্র কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করেন এবং সাদকা করে থাকেন, যেটাকে বাংলা ভাষায় দান বলা হয়।
অনেক গরিব দুঃখী দের দান করে থাকেন এই দিনে। বিপুল সংখ্যক রোজাদার মুসলমান দেশের বিভিন্ন মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন। আর এই দিনে জুম্মার নামাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা এবং রহমত কামনা করে দোয়া করে থাকেন।
জুমাতুল বিদার গুরুত্ব কি?
এই বিশেষ দিনে ধর্মীয় সমাবেশের কথা কোরআন শরীফে উল্লেখ করা রয়েছে। জুমাতুল বিদার দিনে ছোট বড় প্রতিটি মসজিদে মুসলমানদের ভিড় চোখে পড়ার মত। জমাতুল বিদার মধ্যে দিয়ে পবিত্র মাহে রমজানকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয় খুবই কষ্টের সাথে। জুম্মার নামাজের জন্য প্রত্যেক মুসলমানরাই খুবই উচ্চশিত এবং আনন্দিত হয়ে থাকেন।
জুমাতুল বিদা স্মরণ করিয়ে দেয় যে, রোজার শেষ প্রান্তে এর চেয়ে ভাল দিন আর কখনোই পাওয়া যাবে না, অর্থাৎ রমজান মাসের শেষ শুক্রবার যেটা প্রতিটি মুসলমানের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, পরের বছর হয়তো এমন দিন তার ভাগ্যে আছে কিনা, তাই সেই কারণে কোন মুসলমানই এই দিনটি হাতছাড়া করতে চান না।
জুম্মা এত বিশেষ কেন ইসলাম ধর্মে?
জুম্মা হল শুক্রবার, যে দিনটি সকল মুসলমান নামাজ পড়ে, দোয়া করে থাকেন নিজের জন্য এবং পরিবারের জন্য। জুম্মার দিনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি মুসলমানের কাছে অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে চাওয়া প্রতিটি ইচ্ছা পূরণ হয়ে থাকে।
শুক্রবারে করা যে সমস্ত দান ধ্যান, অন্য কাজ এবং আরো অন্যান্য যেগুলি ভালো কাজ রয়েছে, সেগুলি অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। বিশেষত এই দিনটিতে অভাবী এবং দুঃখী মানুষদের, দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করে থাকেন অনেকেই। বিশ্বাস করা হয় যে, জুম্মার দিন এই সমস্ত কাজ করলে অনেকখানি সওয়াব অথবা পূন্য অর্জন করা যায়।
জুমাতুল বিদা হল রমজান মাসের বিশেষ একটি দিন, যে দিনটি মুসলিম সম্প্রদায় দ্বারা পালন করা দ্বিতীয় পবিত্রতম রাত। ঈদুল ফিতরের আগের শুক্রবার হল শেষ শুক্রবার। এই শুভ উপলক্ষটি সমৃদ্ধি এবং শান্তি কামনায় উদযাপন করা হয়ে থাকে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের জন্য প্রতি শুক্রবারকে শুভ এবং পবিত্র বলে মনে করা হয়ে আসছে অনেকদিন আগে থেকে। তবে বিশেষ করে রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বা জুম্মার দিনটি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
ইসলাম ধর্ম অনুসারে বিশ্বাস করা হয় যে, জামাতুল বিদার দিনে আল্লাহর একজন দূত অথবা ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং সমস্ত মানুষের প্রার্থনা শোনার জন্য এবং মনোযোগ দেওয়ার জন্য মসজিদে যান। এটাও বিশ্বাস করা হয় যে, ফেরেশতারা ইমামদের কথা শুনেন এবং সাধারণ মানুষের সমস্ত মনের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য আল্লাহর কাছে সেই সমস্ত মানুষের কথা বলে থাকেন।
সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবারকে অধিক বরকতময় (সমৃদ্ধি) বলে দিন বলে মনে করা হয়। তাই নামাজ ও নামাজ পড়ার জন্য মানুষ মসজিদে বিপুল পরিমাণে ভিড় জমিয়ে থাকেন। ঈদ উদযাপনের আগে শেষ শুক্রবার বা জুম্মা বেশি প্রাধান্য পায় সাধারণ শুক্রবারের থেকেও।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুসারে এই দিনে প্রার্থনা কখনোই বিফলে যায় না। যদি তারা আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকেন, তাহলে তাদের করা অতীতের ভুলগুলি ক্ষমা করে দেন আল্লাহ, এবং জামাতুল বিদাতে মসজিদে বড় বড় জামাত দেখা যায়, সেখানে সমস্ত অভাবী দরিদ্র মানুষের জন্য খাবার দান করার ব্যবস্থা করা হয়।
জুমাতুল বিদা উদযাপন:
এই দিনটি খুবই পবিত্রতা আর উৎসাহের সাথে পালন করা হয়। এই দিন মুসলমানরা খুবই ভোরবেলা ওঠে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নামাজ পড়ে এবং পবিত্র কোরআন শরীফ পাঠ করে থাকেন।
নতুন পোশাক পরিধান করে মসজিদের বাইরে জোহরে অর্থাৎ দুপুরে বড় বড় জামাতে মানুষ জড়ো হন এই শুভদিনে আল্লাহর পছন্দের আশীর্বাদ কামনা করার জন্য। আবার অনেকের বিশ্বাস অনুসারে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) জামাত উল বিদার দুপুরের নামাজের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন, তাই সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনটি খুবই সুন্দর ভাবে উদযাপন করেন।