পৈতৃক সম্পত্তি আইনত ভাবে কীভাবে আপনার নামে করবেন?

পৈতৃক সম্পত্তি আইনগতভাবে তার উত্তরাধিকারীরা প্রাপ্য হলেও পূর্বসুরির মৃত্যুর পরে খুব সহজেই এই সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তন হয় তা নয়। এই সম্পত্তির মালিকানা পরিবর্তনের সময় বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হয়। তাই আমাদের সবারই জেনে নিতে হবে, কিভাবে এই পৈতৃক সম্পত্তি আইনগতভবে আপনার নামে করা যায়। 

 

তা না হলে প্রিয়জনের মৃত্যুর পর, মৃত্যুশোক মুছে যাবার আগেই এই সকল সম্পত্তি বিষয়ক জটিলতায় পড়তে হবে। এই পৈতৃক সম্পত্তি বিষয়ক সবকিছু জানা থাকলে আপনাকে আর এ সংক্রান্ত জটিলতায় পড়তে হবে না। এজন্য এই বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। 

 

আমাদের বাংলাভূমি সাইটে আমরা নিয়মিতভাবে আপনাদের জন্য জমি সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। এতে করে আপনারা খুব সহজেই জমি সংক্রান্ত নানা জটিল বিষয়গুলি জেনে নিতে পারেন।। যা আপনাদের জীবনের জমি সংক্রান্ত জটিলতায় সহায়তা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায়, আজ আমরা আপনাদের সাথে পৈতৃক সম্পত্তি কিভাবে আইনগতভাবে নিজের নামে আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করছি। এতে করে আপনারা, খুব সহজেই পৈতৃক সম্পত্তি আইনগতভাবে নিজের নামে করে নিতে পারবেন। 

 

পৈতৃক সম্পত্তি কি নিজের অর্জিত সম্পদ? নাকি পূর্ব পুরুষ হতে প্রাপ্ত সম্পদ? সম্পত্তির মালিনাকানা নির্ধারনের জন্য কোন উইল করা আছে কিনা? সম্পত্তির বৈধ উত্তরাধিকার কতজন? ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপরে নির্ভর করে পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্ভর করে থাকে। 

 

শুধু তাই নয়, উত্তরাধিকারীগন শুধুমাত্র মালিকানা লাভ করাটাই যথেষ্ট নয়, জমির সরকারী নিবন্ধনে নতুন মালিক হিসেবে নিবন্ধন করতে হয়। একই সাথে, উত্তরাধিকারীগন সম্পত্তির মালিকানার সাথে সাথে অন্য বিষয়গুলি যেমন, উক্ত জমি সংক্রান্ত পূর্বের ঋন পরিশোধ করা, সরকারী কোন ট্যাক্স বকেয়া থাকলে তা পরিশোধ করা। 

 

হিন্দু আইন ও অন্যান্য ধর্ম

ভারতীয় আইনে সকল ধর্মের উত্তরাধিকার আইন একই নয়। হিন্দু ধর্মের অনুসারীগন ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন (হিন্দু) অনুযায়ী উত্তরাধিকারীদের মাঝে সম্পত্তি বন্টন হবে। তেমনিভাবে অন্য ধর্ম অনুসারীগনও তার নিজ নিজ ধর্মের আইন অনুযায়ী উত্তরাধিকার সম্পদ বিভাজিত হবে। 

 

হিন্দু আইন অনুযায়ী সম্পত্তির সকল বৈধ উত্তরাধিকারী তার জম্নের ফলেই সম্পত্তিতে অধিকার লাভ করে থাকে। পূর্বসুরী উইল না করে গেলে, মৃত্যুর পর তার সকল অর্জিত সম্পত্তি ও পৈতৃক সম্পত্তির মালিকানা তার বৈধ উত্তরসুরিগন লাভ করবেন।


হিন্দু উত্তরাধিকারী আইন ১৯৫৬ অনুযায়ী, কন্যা সন্তান পুত্র সন্তানের সমানভাবে সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করবেন, এমনকি কন্যা সন্তানের বিবাহের পরও এই উত্তরাধিকার দাবি বিবেচিত হবে। 

সম্পত্তি কিভাবে আইনগতভাবে নিজের নামে আনবেন? 

পূর্বসুরির মৃত্যুর পর সম্পত্তি আইনগতভাবে নিজের নামে আনার জন্য কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

মৃতব্যাক্তি উইল করে গেলে উইল অনুযায়ী মালিকানা পেতে নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। 

১) মৃত্যুসনদ। 

২) উইলের কপি।

৩) সম্পত্তির বিবরন সংক্রান্ত কাগজপত্র।

 

এই উইলে কোন দূর্বলতা থাকলে অন্য কেউ এই উইল নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে। তাই উইলকে অবশ্যই সরকারীভাবে নিবন্ধন করতে হবে, এবং কোন দক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে এই উইলের সকল শর্তগুলি লিখিতভাবে উল্লেখ করতে হবে। তা না হলে, উইলের কার্যকারীতা নাও হতে পারে। 

 

সম্পত্তি উইল না করা থাকলে উত্তরধিকারীগন, একটি সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে। উইল না করা থাকলে এবং সমঝোতা চুক্তিও না থাকলে, উত্তরাধিকারী আইন অনুযায়ী সকল সম্পত্তি বন্টন করা হবে। 

 

সম্পত্তিকে মিউটেশনের মাধ্যমে আইনগতভবে আপনার নিজের নামে সরকারীভাবে নিবন্ধিত করে নিতে হবে। মিউটেশান করা হলে কোন ব্যাক্তি সম্পত্তি বিক্তি বা মালিকানা হস্তান্তরের অধিকার লাভ করবে। 

 

আজ আমরা পৈতৃক সম্পত্তি আইনগতভাবে কিভাবে নিজের নামে করা যায়, তা নিয়ে অনেক আলোচনা করলাম। জমি বিভক্ত করার বিভিন্ন নিয়মগুলি জানতে পারলাম। এতে করে আপনারা পরবর্তী সময়ে জমি বিভক্তি নিয়ে নানা সমস্যার মোকাবেলা করতে পারবেন। পরবর্তী লেখায় আরো বিস্তারিত লেখা থাকবে।


তাই আমাদের পেজে নিয়মিত চোখ রাখুন। এই লেখাটি অনেকের কাজে লাগতে পারে তাই লেখাটি যতটুকু সম্ভব শেয়ার করুন, যাতে করে অনেকে এই লেখা থেকে শিক্ষা নিয়ে জমি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। 

1 thought on “পৈতৃক সম্পত্তি আইনত ভাবে কীভাবে আপনার নামে করবেন?”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top