প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ সম্পত্তির মালিক সরকারকে তার সম্পত্তির খাজনা বা Poperty Tax দিতে হতে হয়। আপনি সম্পত্তির খাজনা আগে দিন বা বিলম্ব করে দিন, আপনাকে সবক্ষেত্রেই আপনাকে জানতে হবে সম্পত্তির খাজনা কিভাবে গণনা করা হয়। বিভিন্ন প্রকার সম্পত্তির বিভিন্ন প্রকার খাজনা হার হওয়ায়, সম্পত্তির খাজনার ব্যপারটা কিছুটা জটিল।
জমির খাজনার হার না জানার কারনে অনেক সময়ই আমাদের অতিরিক্ত খাজনা বা Property Tax দিতে হয়। আর এই অতিরিক্ত খাজনার হার থেকে বাঁচার জন্যই আমাদের সবারই সম্পত্তির খাজনা বা Property Tax এর গগনা করা শিখতে হবে।
এতে করে আপনি জানতে পারবেন কোন সম্পত্তিতে খাজনা কত টাকা এবং সেই সম্পত্তির খাজনা সঠিক নিয়মে দিয়ে আপনি ঝামেলা মুক্ত হতে পারবেন।
কিভাবে সম্পত্তির খাজনার হিসাব করা হয়?
সম্পত্তির খাজনার বেলায়, জমিটি কোন কাজে ব্যবহার হচ্ছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ন। উদাহরন সরূপ, আপনার একটি খালি জমির খাজনার চেয়ে একটি ভবনের মূল্য বেশি হয়ে থাকে। তাই পাশাপাশি এই ভবনের সম্পত্তির খাজনাও অবশ্যই বেশি হবে।
যদি কোন সম্পত্তিতে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা যেমন; পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি সুবিধা থাকে তাহলে ঐ জমির খাজনা বা Property Tax বেশি হবে।
শুধু তাই নয়, সরকার যদি মনে করে এই এলাকায় ভবিষ্যতে উন্নয়ন হবে তাহলেই সম্পত্তির খাজনা বেড়ে যেতে পারে। সম্পত্তির খাজনার পরিমান সম্পত্তির মোট মূল্যের একটা শতকরা হার অনু্যায়ী হয়ে থাকে।
কি কি ভাবে সম্পত্তির খাজনা বা Property Tax নির্ধারন করা হয়?
সম্পত্তির খাজনা বা Property Tax বিভিন্ন ভাবে নির্ধারন করে হয়ে থাকে। এই খাজনা সম্পত্তির বাজার মূল্য, ঐ নির্দিষ্ট এলাকায় আয়ের উপর নির্ভর করে ঠিক করা হয়ে থাকে।
আসুন নিচে সম্পত্তির খাজনা নির্ধারনের কয়েকটি প্রক্রিয়া বর্ননা করা হলো।
১) বিক্রয় মূল্য বিবেচনা করে
সম্পত্তির বিক্রয় মূল্য বিবেচনা করে অনেক সময় সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করে থাকে। সম্পত্তিটি কোন এলাকায় অবস্থিত, সেই এলাকা কেমন উন্নত, ঐ এলাকায় ভবিষ্যত উন্নয়ন কেমন হবে এসকল বিষয় বিবেচনা করে সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করা হয়।
২) সম্পত্তির ব্যয়ের উপর নির্ভর করে
সম্পত্তি তৈরি করতে যা যা ব্যয় হয়, তার উপর নির্ভর করে সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করা হয়। সেই সাথে সম্পত্তি কত বছর আগে তৈরি, এখন প্রতি বছর কত পার্সেন্ট হারে মূল্য হ্রাস হচ্ছে তা বিবেচনায় আনা হয়।
সম্পত্তির ডিজাইন কেমন পুরোনো নাকি আধুনিক তাও বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সম্পত্তি নতুন হলে কি কি আধুনিক মালামাল ব্যবহার হয়েছে, দেখতে কেমন এসব বিবেচনা করেই সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করে থাকে।
৩) সম্পত্তি হতে আয় কেমন তা বিবেচনা করে
একটি সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করার পিছনে সম্পত্তি হতে কেমন আয় হয় সেটাও বিবেচ্য বিষয় হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় সম্পত্তি হতে আয়, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় ব্যয়, কত বছরে মূল টাকা ফেরত আসবে, সম্পত্তির Insurance প্রিমিয়াম ইত্যাদি বিবেচনা করে সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করা হয়ে থাকে।
কোন সম্পত্তি খালি পড়ে থাকলে তার খাজনা কম হয়ে থাকে, সম্পত্তিতে আবাসিক বাসা হলে সেখানে খাজনা কিছুটা বেশি হবে। আর সম্পত্তিতে বানিজ্যিক স্থাপনা হলে সেখানকার খাজনা অবশ্যই বেশি হয়ে থাকবে। এভাবে সম্পত্তি হতে আয়ের উপর জমির খাজনা অনেকটা নির্ভর করে থাকবে।
সম্পত্তির খাজনা নির্ধারন করার সময়, সম্পত্তির মূল মূল্য, এসেসমেন্ট ভ্যালুর সাথে ভাগ করে খাজনা নির্ধারন করা হয়ে থাকে।
এই সম্পত্তি খাজনা নির্ধারন সাধারনত ৫ বছর পর একবার নির্ধারিত করা হয়ে থাকে। তাই একবার সম্পত্তির খাজনা নির্ধারিত হলে আপনার সম্পত্তির খাজনা আগামী ৫ বছর পর্যন্ত একই থাকবে।
৫ বছর পর সরকার নির্ধারিত কর্মকর্তারা এই সম্পত্তির মূল্যায়ন করে পুনরায় খাজনা নির্ধারিত করবে। এখন ভারতের অনেক স্থানেই সম্পত্তির খাজনা অনলাইনে জমা দেয়া যায়। তাই অনেকটা ঝামেলামুক্ত ভাবেই এই সম্পত্তির খাজনা দিতে পারবেন।
আজকের এই লেখা হতে আমরা জানতে পারি, জমির খাজনা বা Property Tax কিভাবে নির্ধারন করা হয়। তাই এ নিয়ে আমাদের মাঝে আর কোন প্রশ্ন থাকলো না। এতে করে আমরা সবাই জমির খাজনা দেয়ার বিষয়ে ভালো করে বুঝতে পারবো।