ইতিবাচক ভাবনা দিয়ে জীবন বদলে ফেলুন – How Positivity Change Your Life

প্রতিদিন একবার হলেও আমাদের সবারই মনে হয়, পৃথিবীটা অনেক জটিল। এটা আমাদের জন্য নয়। যদি পৃথিবীটা বদলে যেত, বদলে যেত সময়, বদলে যেত মানুষগুলো বা এদের আচরন! কোন আশায় আমরা বেচে আছি! এরকম আরও অনেক কিছু।

কিন্তু পুরো পৃথিবী বদলে দেওয়া তো সম্ভব নয়। আর সত্যি বলতে পুরো পৃথিবী নিয়ে আমাদের চারপাশের পরিবেশ নয়। আমরা কেউই পুরো পৃথিবী জুড়ে বাস করিনা। আর পুরো পৃথিবী বদলানো বা মানুষ বদলানোও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

How Positivity Change Your Life in Bangla
How Positivity Change Your Life in Bangla

তাহলে সমস্যা থেকে মুক্তি কিভাবে পাবেন? খুব সহজ, নিজেকে বদলে ফেলুন। শুনতেই অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এত খুবই সহজ। আসলে এটাই সবচেয়ে কঠিন।

কারও কোন আচরন বা অভ্যাসে কষ্ট পেলেই আমরা ভাবি যে, মানুষটা যদি বদলে যেত! কিন্তু বিষয়টি হচ্ছে, আপনি যদি কারো আচরনে প্রভাবিত না হন তাহলেই আর কোন সমস্যা থাকবেনা।

কিন্তু কি কি করলে নিজেকে বদলানো যায়, যাতে পৃথিবী বদলে যাবে? আমাদের আজকের পোস্ট সাজানো হয়েছে এমন কিছু উপায় নিয়ে, যা অনুসরন করে নিজেকে এতটাই বদলে ফেলতে পারবেন যে দেখবেন চারপাশের মানুষ আর পরিবেশও বদলে যাবে। মনে হবে পৃথিবীটাই বদলে গেছে।

চলুন প্রিয় পাঠক দেরী না করে জেনে নেয়া যাক উপায়গুলো সম্পর্কে। নিজের জীবন ইতিবাচকভাবে বদলে ফেলার পদক্ষেপসমূহঃ

 

১. নিজের ভুলগুলি খুঁজুন ও সাবধান হোন

প্রতিটি মানুষের অসংখ্য ভুল রয়েছে। আর আমরা নিজেদের ভুল সম্পর্কে অনেক সময় জানি, অনেক সময় জানিনা। কিন্তু আগে নিজের ভুলগুলো খুজে বের করুন। সেগুলোর তালিকা লিখে ফেলুন।

তারপর স্টারমার্ক দিয়ে চিহ্নিত করুন যে, কোন ভুলগুলো আগে শোধরানো উচিত। কারন যত সমস্যার সৃষ্টি সবই ভুল থেকে।

হয়ত অনেকেই একই মানুষকে বারবার বিশ্বাস করার ভুল করেন, কেউ বারবার কাজে দেরী করার ভুল করেন। কেউ করেন সঞ্চয়ের অভ্যাস না করার ভুল, কেউ ওজন বাড়ানোর জন্য বেশী না খাওয়ার ভুল করেন।

মানুষ ভেদে ভুলের ধরন ভিন্ন হয়। কিন্তু আপনার জীবনে সেই ভুল শুধরে নেওয়ার ইচ্ছাটাই হচ্ছে আসল। তালিকা করা হয়ত খুব কঠিন হবেনা।

 

২. নেগেটিভিটি ভিতর থেকে সরিয়ে ফেলুন

মানুষ সবসময় সবাইকে ভুল ভাবে কারন প্রত্যেকের কথা এবং কাজকেই আমরা নেতিবাচক হিসেবে দেখি।

মনে করুন, আপনি প্রচুর মোটা হয়ে গেছেন, আগে হয়ত এমন ছিলেন না, এটা দেখে একজন বলে ফেলল যে এত ভুড়ি কিভাবে হল? কয় কেজি চালের ভাত খাচ্ছেন! বলাই বাহুল্য, শুনেই খুব বিরক্ত হবেন।

ওই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ পোষন করবেন। তবে ভেবে দেখুন, ব্যক্তিটি ভুল বলেছে কিনা! আসলেই ভুড়ি।বেড়ে গেছে কিনা।

ভুড়ি কমলে আপনার লাভ, নাকি ওই ব্যক্তির লাভ? অবশ্যই আপনার লাভ। তাই সবকথা ইতিবাচকভাবে নেওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের সমস্যার সমাধানও হবে। আর সবার সাথে সম্পর্কও ভাল থাকবে।

 

৩. নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে শিখে নিন

আমরা সবাই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি, কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা। আপনার হয়ত রোগা হওয়া দরকার।

কিন্তু আপনি কিছুতেই খাওয়া কমাতে পারছেন না। বিরিয়ানি,  আইস্ক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস, পিজ্জা, বার্গার খেয়েই চলেছেন। এভাবে চললে কি আপনি ফিট হতে পারবেন? অবশ্যই না।

লক্ষ্য অর্জন আর সমস্যার মধ্যে একটিই বাধা, আপনি নিজেই নিজের উদ্দেশ্য পূরনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। তাই যেকোন কিছু বদলাতে নিজেকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করুন।

আত্মনিয়ন্ত্রণ হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ যার ফল সবসময়ই মিষ্টি হয়।

 

৪. নিজের প্রত্যাশ্য সীমার ভিতর রাখুন

কারো জন্য যদি কিছু করেন তাহলে বিনা স্বার্থে করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন আপনি যা করছেন তা হয়ত ফিরে আসবেনা। কারন সবাই হয়ত আপনার মত মহৎ নয়।

তাই যে কারো কাছ থেকে প্রত্যাশা রাখবেন না। জানি বলা সহজ, করাটা অনেক কঠিন, কিন্তু তবুও প্রত্যাশা থেকে অপ্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি থেকেই যাবতীয় সমস্যার শুরু। তাই নিজেকে সকল প্রত্যাশা থেকে দূরে রাখার অভ্যাস করুন।

আমরা যদি কিছু মানুষের প্রতি প্রত্যাশা আর না রাখি, দেখবেন জীবনের অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। খুব অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছি আমরা।

তাই কে কি করল আর কে কি প্রতিদান দিল তা নিয়ে হিসাব নিকাশ যত কম হবে ততই মংগল। এভাবেই নিজে বদলালে অন্যের বদলে যাওয়া আর আপনাকে প্রভাবিত করতে পারবেনা।

 

৫. কঠোর পরিশ্রমী হোন

পৃথিবী বদলেছে আর বদলাচ্ছে কিছু পরিশ্রমী মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে। যাদের উচ্চাকাঙ্খা রয়েছে বড় কিছু করার তারাই পৃথিবীটা বদলে দিতে পারে।

আর যারা অলস, শুধু খাওয়া পরা জুটলেই হয়, তারা নিজেদের যেমন উন্নতি করতে পারেনা তেমনি তারা অন্যের ভাল দেখতে পারেনা। তারা অন্যের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়, আর ঝগড়া বা অশান্তি সৃষ্টি করে।

তাই নিজে পরিশ্রম করুন, নিজের কাংখিত লক্ষ্যে পৌছাতে। আর উচ্চাকাঙ্খা আপনার কাজের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করবে। এটাই আপনাকে কঠোর পরিশ্রমে বাধ্য করবে।

৬. উদার এবং বিনয়ী হও্যার চেষ্টায় মগ্ন থাকুন

সবার জন্য কিছু না কিছু করুন। উদার এবং বিনয়ী হন। এর মানেই যাকে তাকে সুযোগ দেয়া বা তোষামোদ নয়। সবার সাথে ভাল ব্যবহার করুন।

মানুষ বুঝে তাকে আবার কিছু করার সুযোগ দিন। আপনি বয়স এবং অভিজ্ঞতার সাথে সাথে বুঝে যাবেন কাদের সুযোগ দেয়া উচিত, কাদের নয়।

তাই নিজের বিনয় দিয়ে মানুষের মন জয় করুন, এতে সবাই আপনাকে সুনজরে দেখবে। কঠিন কাজও সহজ হয়ে যাবে এভাবে।

 

উপসংহার

পৃথিবী বদলাতে অনেককিছু বদলাতে হয়না, সবাইকে বদলানোরও প্র‍য়োজন পড়েনা, নিজেকে বদলে ফেলুন, দেখবেন সবার আচরণ বদলে যাবে।

বদলে যাবে পরিবেশ। তখন সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হবে। হতাশা, ব্যর্থতা, গ্লানি দূর হয়ে যাবে। আশা করি পোস্টটি নিজেকে বদলাতে আপনাদের উপকারে আসবে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে  বা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে

1 thought on “ইতিবাচক ভাবনা দিয়ে জীবন বদলে ফেলুন – How Positivity Change Your Life”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top