বৃষ্টি থেমে আকাশ হয়েছে পরিষ্কার, নীল আকাশের মাঝে সাদা পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভেসে চলেছে। পুজোর গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। আর কটা দিন পরেই পূজার সাজে সেজে উঠবে সকলেই। তবে সকলের সাথে বাচ্চা ছেলেদের ফ্যাশন টাও পুজোতে কম যায় না। তারাও নিত্য নতুন পোশাকে সেজে উঠবে পুজোর কটা দিন।
পুজো মানেই চুটিয়ে গল্প, ছুটি, খেলাধুলা, খাওয়া-দাওয়া, আর তার সাথে নিত্য নতুন জামাকাপড়। বড়দের কাছে হয়ত হাজার ব্যস্ততার মাঝে পুজোটা ততটাও গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে, তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই পুজোটা সারা বছরের অপেক্ষার অবসান বলতে পারেন। দেদার আড্ডা, হইচই, আনন্দ, নতুন জামা-কাপড়, সব কিছুই সম্পুর্ন ভাবে উপভোগ করতে পারে শুধুমাত্র বাচ্চারাই।
কারণ তাদের মধ্যে থাকে না কোন দায়িত্ব, থাকে না কোন কিছু নিয়ে চিন্তা ভাবনা। পুজোর কটা দিন তারাই বেশি উপভোগ করে। দিনবদলের সাথে সাথে অনেক কিছু বদলে যায়, তবে এখনো পর্যন্ত একটা জিনিস কিন্তু বদলে যায়নি, সেটা হল বাচ্চাদের পুজোতে নতুন জামা কাপড় পাওয়ার আনন্দ।
পুজোর কটা দিন আরো বেশি আনন্দময় করে তুলতে, বাচ্চা ছেলেদের কিছু পোশাক সম্পর্কে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক –
১) চেক শার্ট কার্গো প্যান্ট :
বড়দের মতোই বাচ্চাদেরও চেক শার্ট এ বেশ মানায়। তার সাথে একটা সুন্দর কিউট ও ফ্যাশনেবল লুক থাকে। যা দিয়ে পুজোর কটা দিন বড়দের সাথে সাথে বাচ্চা ছেলেরাও পাল্লা দিয়ে ফ্যাশন দিতে পারে।
২) ধুতি কুর্তা :
বনেদি বাড়ি অথবা ঐতিহ্যবাহী লুক আনার জন্য ছোট বাচ্চা ছেলেদের ধুতি কুর্তা পরিয়ে পুজোতে সাজাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কিন্তু তাদের মধ্যে স্টাইলিশ লুক ধরা দেবে। তার সাথে বড়দের মতো ধুতি কুর্তা পরতে পেরে তাদেরও আনন্দের সীমা থাকবেনা।
অষ্টমীতে মায়ের সাথে অঞ্জলি দেওয়া এবং কার অঞ্জলীর ফুল কতদূর যেতে পারে সেই লড়াই, এই ধুতি কুর্তা পরে বেশ জমে উঠবে, কি বলেন?
৩) জিন্স টি-শার্ট :
হাফ জিন্স হোক অথবা ফুল জিন্স, বাচ্চা ছেলেদের জিন্সে কিন্তু দারুন লাগে। পুজোর কটা দিনের মধ্যে যেকোনো একদিন জিন্স টিশার্টে সাজাতে পারেন আপনার ছোট্ট ছেলেটাকে।
টি-শার্ট ফুলহাতা হলে বেশ ভালই হয়। জিন্স প্যান্ট তার সাথে বেল্ট তাকে একটা কিউট লুক উপহার দেবে।
৪) পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি :
ছোট্ট শিশুদের পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি তে দারুন লাগে, এটাও কিন্তু হতে পারে পুজোর পোশাক। তবে অবশ্যই শিশুদের জন্য কিনছেন, সে ক্ষেত্রে কাপড়ের কোয়ালিটি অবশ্যই দেখে নেবেন।
যার কারণে সেই পাঞ্জাবি অথবা শেরওয়ানি পরে থাকতে অসুবিধা না হয়। হালকা কাজ করা পাঞ্জাবির সঙ্গে নকশা করা কোটও পরাতে পারেন।
৫) স্যুট-কোট :
বাচ্চা ছেলেদের স্যুট কোট এ সবচেয়ে বেশি স্টাইলিশ দেখায়। এছাড়া শিশুদের সাদা রংয়র শার্ট এর সঙ্গে ছোট্ট একটা বো- টাই লাগিয়ে দিতে পারেন। আপনার ছোট্ট বাচ্চা ছেলের ফ্যাশান দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।
৬) গেঞ্জি-প্যান্ট :
শিশু দের গেঞ্জি প্যান্ট আরামদায়ক হতে পারে। যেহেতু বেশ কিছুক্ষণ পড়ে থাকতে হবে তাদের। সুন্দর হালকা রঙের গেঞ্জি প্যান্ট অল্প কাজের উপর অথবা অল্প ছাপার উপর পছন্দ করতে পারেন আপনার ছোট্ট শিশু ছেলেটির জন্য।
৭) জুতো :
কোলে নেওয়া বাচ্চা শিশু থেকে হাঁটতে পারা শিশুদের জন্য সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক এবং ফ্যাশনেবল হল বুট জুতো অথবা কিটো জুতো।
তাদের হাটতে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি হঠাৎ করে খুলে গিয়ে কোথাও পড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকবে না।
৮) চেন দেওয়া টি-শার্ট ও ন্যারো কাটিং জিন্স :
পুজোতে বড়দের পছন্দের সাথে সাথে ছোটদের পছন্দ কিন্তু সমান তালে তাল মেলায়। তাদের আবার পছন্দ টা একটু বেশি।
সেক্ষেত্রে কিন্তু টি-শার্ট আর ন্যারো কাটিং জিন্সে শিশুদের ফ্যাশনেবল দেখাতে সাহায্য করবে। তার সাথে সাথে কম্ফোর্টেবল ফিল থাকবে এই সব ধরনের পোশাকের মধ্যে।
৯) বাবা স্যুট :
শিশুদের পোশাকের মধ্যে বাবাস্যুট কিন্তু একটি এমন পোষাক যা অনেক আগে থেকেই এর জনপ্রিয়তা বেশ অনেক। শিশুদের এই পোশাকে মানায়ও। তাই বিভিন্ন দোকান, শপিং মল, ভিড়ে ঠাসাঠাসি। ঐতিহ্যবাহী পোশাক থেকে ফ্যাশনেবল পোশাক কেনার জন্য শুধুমাত্র বাচ্চাদের কেনাকাটায়।
কেনাকাটা কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর, সেদিন থেকেই আর দেরি সহ্য হয়না শিশুদের। সেই নতুন জামা কাপড় পরার জন্য পুজো আসতে দু তিন দিন বাকি থাকলেও কেনাকাটা কমপ্লিট হওয়ার সাথে সাথেই সেই জামা কাপড় গুলো আয়নার সামনে কতবার গায় দিয়ে দেখা হয়ে যায়, তার ঠিক নেই।
প্রতিদিন একবার করে জামা পরেও যেন মন মানে না। কবে পুজোতে সবার সাথে, আনন্দের সাথে এই জামাগুলো পরতে পারবে, সেই অপেক্ষায় দিন গোনে তারা। তাইতো ছোটদের আনন্দ আরো বাড়িয়ে তুলতে দিনদিন বড়দের মতোই শিশুদের পোশাকেও আসছে নিত্যনতুন বৈচিত্র।
জামা কাপড় যাই কিনুন না কেন, আপনার ছোট্ট শিশুটির জন্য, সে ক্ষেত্রে রং, কাপড় কোয়ালিটি সবকিছু কিন্তু দেখেশুনে কিনবেন। সেক্ষেত্রে শিশুর অস্বস্তি হওয়ার কারণ যেন না হয় তার ফ্যাশনেবল পোশাক। পুজোর কটা দিন নিজের শিশু থাকুক সবচেয়ে বেশি স্টাইলিশ ও আনন্দিত, তার পছন্দের পোশাকের সাথে।
শিশুর শরীরের গঠন অনুযায়ী পোশাক বাছাই করতে পারেন, সেক্ষেত্রে মানানসই লাগার পাশাপাশি তার পরতেও অসুবিধা হবে না। আপনাদের সাথে সাথে আপনার শিশুদেরও পুজো কাটুক ভীষন আনন্দে।