আপনারা কি ফেম ইন্ডিয়া-II প্রকল্প সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনেছেন? যদি এখনো না জেনে থাকেন, তাহলে আমাদের আজকের পোস্ট থেকে এখনি বিস্তারিত জেনে নিন।
ফেম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় প্রকল্পটি হচ্ছে ভারতে প্রকল্পটির দ্বিতীয় ধাপ যেখানে হাইব্রিড এবং ইলেকট্রিক যানবাহনের দ্রুত উন্নয়ন এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা প্রনয়ন ও তার বাস্তবায়ন করা হবে।
ভারত সরকার বৈদ্যুতিক যানবাহনের বিকাশের জন্য একটি প্রকল্প চালু করেছে। বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রচেষ্টা বিবেচনা করে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য ভারত সরকার এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বের জন্য ১০০০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে।
জাতীয় বিদ্যুৎ গতিশীলতা মিশন পরিকল্পনার (এনইএমএমপি) লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল।
প্রথম পর্যায়টি ২০১৫ থেকে ২০১৯ অবধি স্থায়ী হয়েছিল এবং ফেমের দ্বিতীয় ধাপটি ২০১৯ সালে চালু হয়েছিল এবং ২০২২ সালের মধ্যে এটি শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুপ্রিয় পাঠক, ডিজিটাল ভারত গঠনে দেশের পরিবেশগত দিক খেয়াল রেখে যানবাহন ব্যবস্থার উন্নয়নে যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আমরা আজ সেই প্রকল্পটি সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ফেম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় প্রকল্প:-
ফেম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় ভাগের বরাদ্দ ও উদ্যোগঃ
ফেম ভারত পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের কাজ বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা চলছে। ফেম দ্বিতীয় স্কিমের কয়েকটি মূল বৈশিষ্ট্য নীচে দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ৩ বছরের জন্য ১০,০০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য যানবাহনের গতি বৃদ্ধি এবং সেই সাথে পরিবেশ দূষণ রোধ করা।
ইলেকট্রিক যানবাহনে কালো ধোঁয়া বা বিষাক্ত গ্যাস উৎপাদন হয়না ফলে পরিবেশ দূষন হয়না।
পরিবেশ যদি দূষণ এবং ধোয়া মুক্ত থাকে তাহলে তা জনস্বাস্থ্য এবং দেশের জলবায়ু ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখবে। গ্রীন হাউজ গ্যাস থেকে দেশকে বাচানো সম্ভব হবে।
ইলেকট্রনিক যানবাহনগুলো চলে বৈদ্যুতিক ব্যাটারির সাহায্যে। আর এই ব্যাটারি নিয়মিত চার্জ দিতে হয় নির্দিষ্ট সময় পর পর। এরজন্য স্থাপন করা হয়েছে চার্জিং স্টেশন।
বৈদ্যুতিক যানবাহনের জন্য চার্জিং স্টেশন স্থাপনের জন্য এক হাজার কোটি টাকা আলাদা রাখা হয়েছে।
এটি প্রতিটি বৈদ্যুতিক বাসের জন্য ১ টি স্লো চার্জিং ইউনিট এবং ১০টি বৈদ্যুতিক বাসের জন্য ১ টি ফাস্ট চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার আনুমানিক ৫ লক্ষ থ্রি হুইলার,৭০০০০০ বৈদ্যুতিক বাস এবং ৩৫,০০০ ফোর হুইলার্স গাড়ি কেনার প্রনোদনা সৃষ্টি করবে।
আপনারা যদি ফেম ইন্ডিয়া স্কিম ll সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান তাহলে ফেম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় স্কিমের জন্য অফিসিয়াল সাইট ভিজিট করুন:- https://fame2.heavyindustry.gov.in/
ফেম ইন্ডিয়া প্রকল্পের দ্বারা শিল্প বিকাশঃ
ভারী শিল্প বিভাগ, ভারী শিল্প ও পাবলিক এন্টারপ্রাইজ মনিটরিং কর্তৃপক্ষ বৈদ্যুতিক যানবাহনকে আরও সাশ্রয়ী করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে।
বৈদ্যুতিক যানবাহন আরও সাশ্রয়ী করতে কেন্দ্রীয় সরকার নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের উন্নয়নের সাথে জড়িত নির্মাতাদের উৎসাহ দেওয়া হবে।
লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক মোটর বিকাশের সাথে জড়িত নির্মাতাদের উৎসাহ দেওয়া হবে।
উৎসাহ অর্থ নগদ অর্থ প্রনোদনা, কর ও শুল্ক ফেরত ইত্যাদি। কেন্দ্র, রাজ্য গুলিকে নীতিমালা তৈরি করতে এবং নির্মাতাএবং ক্রেতাদের ইনসেনটিভ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।
ফেম এর দ্বিতীয় স্কিমের উদ্দেশ্যগুলি কী?
দেশে ইলেকট্রনিক যানবাহনের চাহিদা সৃষ্টি করা, যাতে তা পরিবেশবান্ধব হয়। ইলেকট্রনিক যানবাহন প্রযুক্তির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যাতে এটা সবার মাঝে জনপ্রিয় হয়, এই সংক্রান্ত শিল্প ও কল-কারখানা গড়ে ওঠে।
এতে করে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ফলে বেকারত্ব হ্রাস পায়। দেশের অর্থনীতিতে ইলেকট্রনিক যানবাহন যেন একটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে এজন্য মূলত এর দ্বিতীয় স্কিম চালু করা হয়েছে।
চার্জিং সেন্টার তৈরিতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তা সরবরাহ করার জন্য নতুন গবেষণা ও প্রযুক্তির নতুন বিকাশকে উৎসাহিত করবে ফেম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় প্রকল্পটি।
এর আগের যানবাহনগুলিতে প্রচুর জ্বালানী তেল লাগত যা বিদেশ থেকে আমদানী করতে হত, তাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হত।
এছাড়া এসব জ্বালানী তেল পুড়ে অনেক ক্ষতিকর ধোঁয়া ও গ্যাস উৎপন্ন হত যা পরিবেশের জন্য এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ ছিল।
কিন্তু এটা দূর করে পরিবেশবান্ধব এবং দূষমুক্ত, স্বাস্থ্যকর যানবাহন দেশকে সুন্দর ধোঁয়ামুক্ত রাখতে সাহায্য করবে।
শেষ কথা
সমৃদ্ধ ও ডিজিটাল ভারত গঠনে যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেগুলোর উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ সাধন।
ডিজিটাল ভারত গঠনের স্বপ্ন তখনই সত্য হবে যখন সবার হাতের নাগালে তথ্য ও প্রযুক্তি এবং নাগরিক সেবা পৌছে যাবে।
জনগণের জীবনযাত্রার মানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন সাধন করাও প্রতিটি প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
ফেম ইন্ডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে দেশকে দূষনমুক্ত যানবাহনের মাধ্যমে যাতায়াতকে আরও উপভোগ্য করে তোলা সম্ভব।
এতে দেশে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন হবে, চার্জিং স্টেশন স্থাপিত হবে। এতে দেশের মানুষের কর্মসংস্থান এবং প্রকারান্তরে সর্বস্তরের মানুষের উপকার করা।
আশা করি ফেম ইন্ডিয়া প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।
কেন্দ্র সরকারের সমস্ত যোজনা | Click Here |
পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত প্রকল্প | Click Here |
বাংলাভুমি হোম | Click Here |