ঈদে মিলাদুন্নবী 2024: ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়? | Eid Milad-un-Nabi 2024: History and Significance

ঈদে মিলাদুন্নবী 2024 (Eid Milad-un-Nabi 2024 Date Time and Significance) 2024 ঈদে মিলাদুন্নবী ইতিহাস এবং জানুন ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পালন করা হয়? নবী দিবস তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য নবী দিবস গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।

প্রতিটি ধর্মে একজন বিশেষ ব্যক্তি যেমন থাকেন, তেমনি ইসলাম ধর্মে নবী জী কে খুবই সম্মানের সাথে দেখা হয়। তাছাড়া ইসলাম ধর্মে নবী দিবস অথবা ঈদে মিলাদুন্নবী একটি বিশেষ উৎসব। এটি শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে উৎসর্গ করে পালন করা হয়। যেটি নবী দিবস হিসাবে পালন করা হয়ে থাকে। হযরত মুহাম্মদকে (সাঃ) ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বলে মনে করা হয়।

ঈদে মিলাদুন্নবী 2023: ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?
ঈদে মিলাদুন্নবী 2024: ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

এই দিনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া, কুরআন শরীফ পাঠ করা এবং দোয়া করার অনুষ্ঠান এর আয়োজন করে থাকেন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয় এবং অনেক জায়গায় শোভাযাত্রার আয়োজনও করা হয়।

বকরি ঈদ ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

নবী দিবসের ইতিহাস 2024:

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, নবী দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে:

ইসলাম ধর্ম অনুসারে বিশ্বাস করা হয় যে, হযরত মুহাম্মদ ৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ইসলামিক বর্ষপঞ্জি তৃতীয় মাস রবিউল আউয়াল এর ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সর্বশেষ নবী তিনি সৌদি আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর এই উৎসবটি প্রথমে মিশরে পালন করা হতো। ১১ শতাব্দীতে ঈদে মিলাদুন্নবী খুবই জনপ্রিয় একটি উৎসবের পরিণত হয়।

হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে মিলাদুন্নবীর প্রচলন শুরু হয়েছিল রাসুল, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এর জন্মদিন হিসাবে। এই সবের মূল প্রবর্তক ছিলেন খলিফা আল মুইজু লি দীনিল্লাহ। এখানে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, মিশরের এইসব অনুষ্ঠানগুলি তখনও মুসলিম বিশ্বের অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়েনি।

পরবর্তীতে যিনি ঈদে মিলাদুন্নবীকে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, তিনি হলেন ইরাক অঞ্চলের প্রদেশের আবু সাঈদ কুকবুরী। সেই হিসাব থেকেই জানা যায় যে, সপ্তম হিজরী থেকে আনুষ্ঠানিক মিলাদুন্নবী উদযাপন শুরু হয়ে যায়। মিলাদের উপর সর্বপ্রথম গ্রন্থ রচনা করা হয় আবুল খাত্তাব ওমর ইবনে হাসান এবনে দেহিয়া আল কালভী।

ঈদুল ফিতর ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

নবী হজরত মুহাম্মদ:

যে নবীজিকে নিয়ে এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করা হয় সেই নবীজি আসলে কে ছিলেন তা হয়তো অনেকেই জানেন না। নবী মোহাম্মদের পুরো নাম হল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তিনি হলেন ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং আল্লাহ পাকের দ্বারা প্রেরণ করা সর্বশেষ নবী যিনি পৃথিবীতে এসে ইসলাম ধর্মকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

নবী জিকে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগর এর কুরাইশ গোত্রের বনি হাসিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি পবিত্র গ্রন্থ কুরআনের প্রচার করেছিলেন।

জুমাতুল বিদা ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

নবী দিবস উদযাপন: 

এই দিনটি খুবই বিশেষ দিন, সমস্ত মুসলমানদের জন্য। এই দিনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের ঘর সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখেন। সমস্ত মসজিদ গুলিও সুন্দর ভাবে সেজে ওঠে ফুল ও আলোক সজ্জায়।

দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের মধ্যে অনুদান এবং বস্ত্র বিতরণ, খাবার বিতরণ, করা হয়। মসজিদে মসজিদে নামাজ পড়া হয় এবং কোরআন শরীফ পাঠ করা হয়। যারা মসজিদে যেতে পারেন না তারা কিন্তু এই নবী দিবস উপলক্ষে ঘরেতেই নামাজ আদায় করে থাকেন।

মহরম ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থাৎ নবী দিবস এর গুরুত্ব:

নবী দিবসের গুরুত্ব ইসলাম ধর্মাবলম্বী দের কাছে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই দিনটি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। ইসলামের নবী মুহাম্মদের জন্মদিন বলে কথা, যিনি ইসলাম ধর্মের শেষ নবী এবং এই ধর্মের প্রবর্তক।

এই দিন উপলক্ষে সম্মেলন এবং রাস্তাঘাট বাড়ি ঘর গুলি সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো হয়, তার সাথে সাথে অনেকেই বাড়িতে মিলাদ রাখেন। গরিব দুঃখীদের মধ্যে খাবার, বস্ত্র, টাকা পয়সার বিতরণ করা হয়। অনেকেই পরিবারের মৃত সদস্যদের উদ্দেশ্যে দোয়া করে থাকেন।

তাছাড়া নবীজিকে সম্মান জানাতে তাকে স্মরণ করে রাখার জন্য এই দিনটি খুবই সুন্দর ভাবে পালন করা হয়। বাড়িতে বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন করা হয়, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়া, সবার মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা এই উৎসবে প্রধান লক্ষ্য। অনেকেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েন, বা বাড়িতেও নামাজ পড়ে থাকেন।

দোয়া করে থাকেন নিজের জন্য এবং পরিবারের আরও অন্যান্য সদস্যদের জন্য। খুবই উৎসব ও উদ্দীপনের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় এই দিনটি। যা কিনা সবার মুখে মুখে নবী দিবস নামে পরিচিত। এই দিনটি উপলক্ষে অনেকেই অনেক ভালো কাজ করার জন্য সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকেন।

পবিত্র আশুরা ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

একজন ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের কাছে নবীজির কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তা শুধুমাত্র একজন মুসলমানই জানেন, আর তাইতো নবীজিকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে প্রতি হিজরী বছর এর রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে এই দিবসটি পালন করা হয় বিশ্বের সমস্ত জায়গায়, যেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বসবাস করেন।

যে সমস্ত জায়গায় ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা অনেক বেশি পরিমাণ আছেন, সেখানে রাস্তা-ঘাট, বড় বড় দোকান, বাড়িঘর সুন্দর আলোক সজ্জায় সেজে ওঠে। এর পাশাপাশি বাচ্চা থেকে বড় সকলেই নবী দিবসের আনন্দে মেতে ওঠেন।

উপহার আদান-প্রদান ও করা হয়, আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধব দের মধ্যে। বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় ক্ষীর, পায়েস, মিষ্টি এবং আরও অন্যান্য লোভনীয় খাবার। মুসলমান দের কাছে এই নবী দিবস খুশির ঈদের মতোই একটি আনন্দময় উৎসব। যেটি তাদের প্রাণপ্রিয় নবীজির উদ্দেশ্যে পালন করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top