ইস্টার সানডে 2024: ইতিহাস ও তাৎপর্য | Easter Sunday 2024: History and Significance

ইস্টার সানডে 2024 (Easter Sunday 2024 Date Time and Significance) 2024 ইস্টার সানডে ইতিহাস এবং জানুন ইস্টার সানডে কেন পালন করা হয়? ইস্টার সানডে তাৎপর্য কি? ভারতীয়দের জন্য ইস্টার সানডে গুরুত্ব কতটা? জানুন সবকিছু এখানে।

বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী দের কাছে তাদের অনুষ্ঠানগুলি খুবই আনন্দের। তেমনি খ্রিস্টানদের কাছে ইস্টার সানডে হল একটি উল্লেখযোগ্য এবং আনন্দদায়ক উৎসব। যেখানে যিশুখ্রিস্টের পুনরুজ্জীবন এর ঘটনা জড়িত রয়েছে। সেই কারণে এই দিনটি তাদের কাছে খুবই আনন্দের।

ইস্টার সানডে ইতিহাস ও তাৎপর্য - Easter Sunday History and Significance
ইস্টার সানডে 2024 ইতিহাস ও তাৎপর্য – Easter Sunday 2024 History and Significance

প্রতিটি উৎসব কোন না কোন একটি নির্দিষ্ট তারিখে পড়ে এবং সেই দিন অনুসারে প্রতিবছর সেই উৎসবটি পালন করা হয়। তবে খ্রিস্ট ধর্মে ইস্টার সানডে কিন্তু তেমনটা নয়, এর পিছনের কারণটি হল চতুর্থ শতাব্দীর শাসনকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, বসন্তের প্রথম পূর্ণিমার দিনের পরের প্রথম রবিবার ইস্টার উদযাপিত করা হবে।

প্রতিবছর ২২ শে মার্চ থেকে ২৫ শে এপ্রিলের মধ্যে এই উৎসব পালন করা হয়। এই তারিখ গুলির মধ্যে যখনই পূর্ণিমা দেখা দেবে, তার সামনের রবিবারটি ইস্টার সানডে হিসাবে পালন করা যাবে।

গুড ফ্রাইডে ইতিহাস ও তাৎপর্য

তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ইস্টার সানডে সম্পর্কে কিছু তথ্য: 

ইস্টার সানডে এর তাৎপর্য 2024:

যেহেতু এটি রবিবার পালিত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে শনিবার রাতে বিভিন্ন গির্জায় উদযাপন শুরু হয়ে যায়। এই দিনটি যা কিনা ইস্টার ভিজিল নামেও পরিচিত। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী দের মধ্যে ইস্টার খুবই আনন্দ এবং সম্প্রীতির সাথে উদযাপন হওয়া একটি উৎসব। এর আগের রবিবার পাম সানডে হিসেবে পালিত হয়। যা জেরুজালেমে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনকে চিহ্নিতকরণ করে থাকে।

এছাড়া এই দিনটিতে সবাই ইস্টার এগ বিনিময় করে থাকেন, অথবা ইস্টার ডিম, এগুলি প্রকৃতপক্ষে ডিমের আকারে চকলেট কিংবা জেলি বিন বা অন্য কোন মিষ্টি, ভেতরে রাখা প্লাস্টিকের রঙিন ডিম।

ডিম পুনর্জন্মের প্রতীক আর সেই কারণে যিশুখ্রিস্টের পুনরুজ্জীবিত হওয়ার এই ঘটনাকে ডিম এর সাথে তুলনা করা হয়। ইস্টারের জন্য ডিমের রঙ দিয়ে লাল করা হয়, তা যীশু খ্রীষ্টের রক্তের রূপক হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া ইস্টারকে স্মরণীয় উপায় এ উদযাপন করতে সকলে অত্যন্ত আনন্দের সাথে এই দিনটি উদযাপন করে থাকেন এবং বিভিন্ন খেলাও থাকে এই দিনে, তাছাড়া এগ ডেকোরেশন, এগ রোলিং এবং অন্যান্য অনেক ধরনের খেলা থাকে। তাছাড়া খ্রিস্টানরা সকলেই তাদের নিজেদের মধ্যে একে অপরকে উপহার আদান প্রদান করেন।

ক্রিসমাস ইতিহাস ও কেন পালন করা হয়?

ইস্টার সানডে হল পুনরুত্থান পার্বণ:

পুনরুত্থান পার্বণ অথবা পূন্য রবিবার বলতে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণের তিনদিন পরে মৃত অবস্থা থেকে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্টের বেঁচে ওঠা এবং এই পুনরুত্থানের অলৌকিক ঘটনাটিকে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর এই ধর্মীয় উৎসবটি পালন করা হয়।

খ্রিষ্টানরা বিশ্বাস করেন যে এটি পুরাতন জীবনের অবসানের পরে নতুন জীবনের শুরু হওয়া। অত্যন্ত প্রাচীন এই অনুষ্ঠানটির সর্বপ্রথম লিখিত উল্লেখ পাওয়া যায় দ্বিতীয় শতকে। তবে সম্ভবত তারও আগেই যীশুর পুনরুত্থানের স্মরণে এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়েছিল এই ইস্টার সানডে হিসাবে।

প্রতিটি চার্চে ঘন্টা বাজে, সেই সঙ্গে সকলে খুবই খুশি ও আনন্দিত থাকে। শিশুদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার শেষ নেই। সবাই একে অপরকে উপহার দিচ্ছে এবং নিচ্ছে, কেক কাটা হচ্ছে, রঙিন ডিম দেখতেও খুবই সুন্দর লাগে এই দিনে। কিংবা বলা যেতে পারে সারা বিশ্বকে দেখা যাচ্ছে উৎসবের রঙে মেতে উঠতে।

কেননা এই দিনটি খুবই বিশেষ দিন, যা কিনা ইস্টার সানডে নামে পরিচিত। তবে এই উৎসব প্রমাণ করে যে, ঈশ্বরের শরীর কে ধ্বংস করা যায় কিন্তু তার পবিত্র আত্মাকে ধ্বংস করা যায় না, সাধারণত দিনটি রবিবার পড়ে।

জন্মাষ্টমী ইতিহাস ও তাৎপর্য

ইস্টার সানডে এর ইতিহাস 2024:

এই দিনটি যিশুখ্রিস্টের অলৌকিক ঘটনা গুলির মধ্যে একটি বিশেষ ঘটনা বলে মনে করা হয়। গুড ফ্রাইডে যীশু কে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ক্রুশে ঝুলানো হয়েছিল। তৃতীয় দিনে তিনি আবার জীবিত হয়েছিলেন, আর সেই দিনটি ছিল রবিবার।

আর এটাই প্রমাণ করে যে, সত্যকে কখনো ধ্বংস করা যায় না। খ্রিস্টানদের এই উৎসব বড়দিনের মতো পালিত না হলেও, এর গুরুত্ব রয়েছে অনেকখানি। ইস্টার হল যীশুর পুনরুত্থানের উৎসব।

যেখানে লোকেরা শোক পালন করে এবং গুড ফ্রাইডে উদযাপন করে। সেখানে তাদের পুনরুত্থান ইস্টার উদযাপন করা হয়। যেখানে মানুষ গির্জা এবং বাড়িতে মোমবাতি জ্বালায় আর এই দিনে লর্ড সাপারের আয়োজন করা হয়।

যীশু খ্রীষ্ট ছিলেন ঈশ্বর পুত্র, তার অলৌকিক কাজ গুলিতে সকলেই খুবই রেগে গিয়েছিলেন। তারা একসঙ্গে জেরুজালেম পর্বতে যীশু খ্রীষ্ট কে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল। বাইবেল অনুসারে জানা যায় যে, এই দিনটি ছিল খুবই দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক। সেদিন যীশুকে চাবুক দিয়ে মারধর করা হয়েছিল।

তার মাথায় কাঁটার মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার কাছে থেকে তার নিজের ক্রুশ কেড়ে নিয়ে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাদের হাতের নখের আঘাত ছিল যীশুর গায়ে। তারপর ভয়ংকর আঘাত এবং নরকীয় অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল যীশুকে।

কিন্তু তা সত্বেও যীশুর কপালে একটা রেখা ও ছিল না, তিনি বললেন যে, “হে ঈশ্বর তুমি এদের ক্ষমা করো, কারণ ওরা জানে না যে ওরা কি করছে”। এইভাবে কিন্তু যীশু পৃথিবীকে পাপ মুক্ত করার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।

চৈত্র নবরাত্রি ইতিহাস ও তাৎপর্য

কিভাবে পুনরুত্থান হয়েছিলেন যীশুর:

যীশুকে সকলেই খুবই ভালোবাসতেন, শুধুমাত্র কয়েকজন শত্রু ছাড়া, যারা  মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল যীশুকে। যারা মন দিয়ে ভালোবেসেছিল তারা দুঃখে কাঁদতে শুরু করে। যীশুকে ক্রুশে ঝুলতে দেখে ঈশ্বরের কাছে বারবার প্রার্থনা করতে থাকেন তারা। তারপর যীশুকে সমাধিস্থ করার জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই ঘটনার তিনদিন পর কিছু মহিলা যখন যিশুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন তারা সেখানে পাথরটিকে সরানো দেখতে পান, আর দেখেন যে কবরটা খালি। কবরের ভিতরে আরও দুজন মানুষ কেউ দেখতে পান তারা। যিনি যিশু খ্রিস্টের অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।

এরপর সকলে যিশুকে দেখে আশীর্বাদ নেন।  সেদিন ছিল সকল মানুষের জন্য একটি আনন্দের দিন। এরপর যিশুর শিষ্যরা তার নতুন ধর্ম সর্বত্রই ছড়িয়ে দেন। এই ধর্মই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে বর্তমানে পবিত্র-খ্রিস্টান ধর্ম নামে পরিচিত।

সীতা নবমী ইতিহাস ও তাৎপর্য

ইস্টার উৎসবে ডিমের গুরুত্ব:

ইস্টার সানডে এই উৎসবের প্রধান প্রতীক হল একটি ডিম। ইস্টার পৃথিবীতে বসবাসকারী মানুষ এবং প্রতিটি মানুষের জন্য পুনর্নবীকরণ, উদযাপন, পুনর্জীবন, অগ্রগতির প্রতিক হিসেবে পরিচিত। কাহিনী অনুসারে জানা যায় যে, পাখি যেভাবে তার নীড়ে ডিম পাড়ে ঠিক তখনই সেখান থেকে একটি ছানা জন্ম নেয়। একই ভাবে একজন যিশু কিন্তু পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে শুভ ও শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন। সেই কারণে যিশুখ্রিস্টের পুনরুজ্জীবিত হওয়ার এই ঘটনাটি ডিমের সাথে জড়িত।

সব দিক থেকে বিচার করে দেখা যায় যে, ইস্টার সানডে খ্রিস্ট ধর্মের অনুগামীদের জন্য খুবই আনন্দ উৎসবের দিন। কেননা এই দিন যিশু খ্রীষ্ট মৃত থেকে আবার জীবিত হয়ে উঠেছিলেন সকলকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য এবং বিভিন্ন ধরনের উপদেশ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের জীবনকে সুসজ্জিত করে গিয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top