দীপাবলী পুজা 2024: ইতিহাস ও তাৎপর্য | Diwali 2024: History and Significance

2024 দীপাবলী পুজা: 2024 Diwali History & Significance, 2024 দীপাবলীর ইতিহাস ও তাৎপর্য এবং জানুন দীপাবলী কেন পালন করা হয়? বিধি কি? দীপাবলীর পৌরাণিক ইতিহাস ও গুরুত্ব

দীপাবলি 2024 (Diwali 2024) কথাটার মধ্যে আলোময় সৌন্দর্য ফুটে ওঠে চোখের সামনে। এই দীপাবলিতে চারিদিকে আলোতে ভরে ওঠে। অন্ধকার কে দূরে সরিয়ে চারিদিকে ঝলমলিয়ে ওঠে পরিবেশ।

বিভিন্ন ধর্মে দীপাবলীর ইতিহাস: হিন্দু ধর্ম, ও জৈন ধর্ম, শিখ ধর্ম, এবং বৌদ্ধ ধর্মের মতো বহু ধর্ম জুড়েই দীপাবলি উদযাপিত হয়। তবে বিভিন্ন ধর্মীয় পৌরাণিক ধর্মগ্রন্থ অনুসারে উৎসব এর তাৎপর্য ইতিহাসের পার্থক্য রয়েছে।

দীপাবলি 2024 (Diwali):

দীপাবলি উৎসবটি কে আলোর উৎসব বলা যেতে পারে, এবং আরম্ভর এবং বাজি ফাটানো দেশের প্রতিটি অঞ্চলে উদযাপিত হয়। এই দীপাবলি সাধারণত এটি উদযাপিত হয় পাঁচ দিন ধরে।

Diwali History and Significance
Diwali 2024 History and Significance

অনেক অনুষ্ঠানের সাথে আলোকসজ্জা, প্রদীপ, মোমবাতির আলো সমস্ত বাড়িতে, পাশাপাশি পটকা ফাটানো, দীপাবলি, পূজার সঙ্গে জড়িত সম্পদ সৃষ্টির ঈশ্বর, আচার অনুষ্ঠানের প্রতি ইচ্ছা দীপাবলিতে সামিল হয়।

অনিষ্টের উপরে ভালোর জয়, অন্ধকারের উপরে আলোকপাত এবং অজ্ঞতার উপরে জ্ঞান লাভ করা। এই দিনগুলোতে অফিস, মন্দির এবং দোকানপাট, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, সবকিছু আলোয় আলোয় ভরিয়ে তোলা হয়।

কালীপূজার ইতিহাস ও তাৎপর্য, কখন আর কিভাবে শুরু হয়?

ভাই ফোঁটা শুরু হয় কিভাব? ভাই ফোঁটার ইতিহাস ও তাৎপর্য

দীপাবলীর 5 টি বিশেষ দিন:

১) ধনতেরাস (প্রথম দিন)

২) ছোট দিওয়ালি অথবা দীপাবলি (দ্বিতীয় দিন)

৩) লক্ষ্মী পূজা, মূল দীপাবলি দিবস (তৃতীয় দিন)

৪) পদওয়া ও গোবর্ধন পুজা (চতুর্থ দিন)

৫) ভাই দুজ অথবা ভাইফোঁটা (পঞ্চম দিন)

দীপাবলীর ইতিহাস 2024:

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ বিষয় হলো রজনী অর্থাৎ পূর্বদিকে উদয় হওয়া সূর্য, পশ্চিম দিকে অস্ত হওয়ার পর শুরু হয় দ্বীপ জালানো। এই উৎসবকে দেওয়ালি, দীপান্বিতা, দীপালিকা, যক্ষরাত্রি, দীপাবলি, নামে অভিহিত করা হয়।

2024 দীপাবলির শুভেচ্ছা বার্তা ও স্ট্যাটাস ছবি

সন্ধ্যার আগে মাটির প্রদীপ সাজানো হয় অথবা কলাগাছের সতেজ খোল দিয়ে তৈরি করা হয় নৌকা, সেখানে মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে পুকুরে, বড় জলাশয় এ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। চারিদিকে অন্ধকার পরিবেশের মধ্যে এমন অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পড়ার মতো। তবে রামায়ণ অনুসারে দীপাবলীর দিনে ত্রেতাযুগে শ্রী রামচন্দ্র রাবণ বধ করে ১৪ বছরের বনবাস শেষে অযোধ্যায় ফিরে আসেন।

শ্রীরামচন্দ্রের ১৪ বছর পরে রাজ্যে ফিরে আসায় রাজ্যজুড়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রজারা খুশিতে শব্দবাজি ফাটাতে থাকে। অনেকে মনে করেন দীপাবলীর আলোকসজ্জা এবং শব্দবাজি অযোধ্যা রাজ্যে ঘটে যাওয়া সেই অধ্যায় কে সামনে রেখে অন্য সব অঞ্চলে প্রচলিত হয়েছে, পরিচিত হয়েছে, বিস্তৃত হয়েছে।

দীপাবলি মূলত ৫ দিনব্যাপী উৎসব। দীপাবলীর আগের দিনের চতুর্দশী কে বলা হয় নরক চতুর্দশী। শ্রীকৃষ্ণ এবং তার স্ত্রী সত্যভামা নরকাসুর বধ করেছিলেন। চতুর্দশীর পরের অমাবস্যা তিথি দীপাবলি উৎসবের দ্বিতীয় দিন কিন্তু এই দিন হিসেবে উদযাপিত হয়, তবে এই দিন রাতে শাক্তরা শক্তির দেবী কালীর পূজা করেন। তাছাড়া এই দিনে লক্ষ্মী পুজোও করা হয়।

কথিত আছে যে এই দিনে ধন-সম্পদের দেবী লক্ষী বরধাত্রী রূপে ভক্তের মনোকামনা পূরণ করেন। বিষ্ণু পুরাণ মতে বিষ্ণুর বামন অবতার অসুর বালি কে পাতালে পাঠান। এই দিনে পৃথিবীতে এসে অন্ধকার ও অজ্ঞতা দূর করতে ভালোবাসা ও জ্ঞানের শিক্ষা জ্বালাতে অসুর বালি কে পৃথিবীতে পাঠানো হয়।

গোবর্ধন পূজার ইতিহাস এবং কেন এই পুজা করা হয়? জেনে নিন

দীপাবলীর অর্থ:

দেওয়ালি অথবা দীপাবলি সমগ্র ভারত বর্ষ এ উদযাপিত হয় এবং এর আলাদা আলাদা রয়েছে ধর্মীয় ঐতিহ্য।

অন্ধকার এবং অশুভ শক্তিকে দূর করার জন্য প্রদীপের আলোয় এবং অন্যান্য আলোতে সাজিয়ে তোলা হয় চারিপাশ।

দীপাবলি রঙ্গলি ও আলপোনা:

দীপাবলি উৎসব চলাকালীন রঙ্গলির একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এটি তৈরি করা হয় রং, ফুল এবং ছাঁচ দিয়ে ডিজাইন এবং সজ্জা আকারে প্রতিটি বাড়ির প্রবেশদ্বারে। রঙ্গোলী তৈরির উদ্দেশ্যটি কেবল সজ্জা নয়, প্রতিটি বাড়ির ভিতরে দেবী লক্ষী এবং অন্যান্য অতিথিদের স্বাগত জানানোও বটে।

এগুলো ছাড়াও দীপাবলীর সময় রঙ্গলি তৈরি করা বাড়িতে এবং বাড়ির সদস্যদের জন্য সৌভাগ্য এবং সম্পদ আনারও ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্ন নকশার রঙ্গলি আঁকা এবং এর উপকরন গুলি কেবলমাত্র নিজের ধারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এর মধ্যে রয়েছে রং, ক্ষুদ্রতর থিম, পাতা, ফুল, ল্যাম্প, প্রদীপ এর ব্যবহার এবং অন্যান্য উপকরণ।

দীপাবলীর তাৎপর্য 2024:

প্রত্যেক সার্বজনীন আনন্দের উৎসব মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর জয় কে উদযাপন করে। আলোকসজ্জার এই দীপাবলিতে অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলো জ্বালানোর দিন নিজের ভিতর বাহিরে সকল অজ্ঞতা ও অহংকার দূর করার দিন।

প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসার চিরন্তন শিখা জ্বালিয়ে তোলার দিন। দেশ থেকে দেশে, অঞ্চল থেকে অঞ্চলে, এই দিনের মাহাত্ম্য। ভিন্ন ভিন্ন মূলকথা হলো এক আর আধ্যাত্মিকতার গভীর দর্শন এইদিন আত্মাকে প্রজ্বলিত করে। পরিশুদ্ধ করে সেই পরম ব্রহ্মের নীল হওয়ার দিন। কার্তিক মাসের অমাবস্যার মধ্যরাতে মহাদেবীর এই ভূমন্ডলে আবির্ভাব হয়। এটাই তাঁর আবির্ভাব তিথি।

দীপাবলি বা দেওয়ালি এর যাত্রাতে আলোকমালায় প্রজ্বলিত করে নিজেদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে যাওয়ার নাম হল দীপাবলী (Diwali)। আলোর মাধ্যমে শক্তি-সাধনা, নিজেকে পূর্ণ মনে করে তোলাই জগতের মূল শক্তি সাধনা। মূলকথা হলো দীপাবলি সবার জীবনে সুখ নিয়ে আসুক। ঘুঁচে যাক সকল অন্ধকার, সকল যন্ত্রণা, জ্বলুক শান্তির প্রদীপ ভালোবাসার প্রদীপ।

দীপাবলীর পৌরাণিক তাৎপর্য:

এছাড়াও সমস্ত ধর্ম জুড়ে পৌরাণিক তাৎপর্য প্রাচীন যুগে ভারতে এই উৎসবগুলির মিশ্রণের সাথেও দীপাবলি জড়িত। প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থ এ যেমন দীপাবলি বর্ণিত হয়েছে পদ্মপুরাণ এবং স্কন্দপুরাণ, উভয়ই প্রথম সহস্রাব্দ থেকে খ্রিস্টাব্দ।

দীপাবলীর দিনে শ্রীরামচন্দ্রের অযোধ্যায় আগমন হয়। তাই অনেকেই মনে করেন দীপাবলীর মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। তবে এই ধারনা সঠিক কিনা তা নিয়ে মতবিরোধ আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top