মাথাব্যথা খুব সাধারণ একটি উপসর্গ, এটা সকলেরই হয়ে থাকে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা মাথাব্যথায় বেশী ভোগেন। যেহেতু সাধারণ একটি অসুখ, তাই আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেই না এটাকে। কিন্তু সবসময়ই এমন করা উচিত নয়। কারণ কোন উপসর্গই অকারনে দেখা দেয় না। মাথাব্যথার দীর্ঘমেয়াদি রোগের নাম হচ্ছে মাইগ্রেন।
এটা কিছু বিশেষ কারনে হয়ে থাকে। এই ব্যথা মাথার দুপাশেই হয়ে থাকে, এবং নড়াচড়া, শারীরিক পরিশ্রম, এবং অন্যান্য কারনে মাথাব্যথা বেড়ে যায়।
আমরা সাধারণত নিজেদের জীবনে নিয়মতান্ত্রিক হওয়াকে খুব একটা গুরুত্ব দেই না, ভাবি যে জীবনের রুটিনের পরিবর্তন হওয়াটা এমন কোন বড় বিষয় নয়, কিন্তু আসলে সময়ের কাজ সময়ে না করে অসময়ে করলে যে সেটা আমাদের শরীর নিতে পারেনা, সেটা আমরা বুঝি না।
আজ আমরা এই পোস্টটিতে মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ ও এর প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। চলুন প্রিয় পাঠক দেরী না করে আলোচনা শুরু করা যাক।
মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয় জেনে নিন
১. অনিয়মিত আহার
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
আমাদের ব্যস্ত জীবনে সবসময় রুটিনের মধ্যে অনেকেই থাকতে পারেন না। ক্লাস, পরীক্ষা, অফিসের প্রেসার, ফ্রিল্যান্সিং, ঘরের কাজ বা অন্যান্য যেকোন প্রেসারের কারণে খাবার যথাসময়ে খেতে পারেন না অনেকেই।
আবার অনেকে অলসতা করে খাবারে অনিয়ম করেন। এ ধরনের অনিয়মের কারনে দেখা দেয় দীর্ঘমেয়াদি মাইগ্রেন সমস্যা।
২. দীর্ঘসময় ডিভাইস ব্যবহার
আপনি যদি দীর্ঘসময় ল্যাপটপ, বা মোবাইল ব্যবহার করেন তাহলে ডিভাইসের উচ্চমাত্রার আলো আপনার চোখের উপর প্রেসার দেয়। ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হয়।
এভাবে যদি নিয়মিত ফোন বা ল্যাপটপ বা টিভি দেখেন তাহলে মাইগ্রেন দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় রুপ নেবে।
৩. অতিরিক্ত ঘুম বা কম ঘুম
আপনি যদি রাতে দেরীতে ঘুমান এবং সকালে দেরীতে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে।
আবার যদি প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমান তাহলেও মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। এর কারন হচ্ছে ঘুম কম হলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়।
৪. অতিরিক্ত মানসিক প্রেসার
অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা ও মানসিক প্রেসারের কারনে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়, নার্ভে ঠিকমত কাজ করেনা। ফলে বেশী দুঃশ্চিন্তা করলে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়।
৫. নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন
যারা নিয়মিত নেশা করেন, যেমন সিগারেট, ফেন্সিডিল, ইয়াবা বা অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহনে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে।
৬. দীর্ঘ ভ্রমণ ও মৌসুম পরিবর্তন
দীর্ঘ ভ্রমণে অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক প্রেসার পড়ে। এছাড়া হঠাৎ মৌসুম বা আবহাওয়া পরিবর্তনে শরীরে হরমোনের মাত্রা ও উষ্ণতার পরিবর্তন ঘটে। এসব কারনে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মাইগ্রেনের প্রতিকারে করণীয়
১. নিয়মিত আহার করুন। যে বেলার খাবার সে বেলায় খান। নিয়মিত পানি পান করুন। মাইগ্রেনের সমস্যা কমে যাবে।
২. প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ ঘন্টা ঘুমান। দেরী করে ঘুমানো ও দেরীতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৩. দীর্ঘক্ষন টিভি, ল্যাপটপ বা মোবাইল ব্যবহার করবেন না। চোখের উপর তীব্র আলোতে প্রেসার পড়ে। ডিভাইস ব্যবহার কমিয়ে দিলে আস্তে আস্তে মাইগ্রেনের সমস্যা কমে যাবে।
৪. নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। তাহলে শুধু মাইগ্রেন নয়, কিডনি, ফুসফুস ও হার্টের সমস্যা থেকে ও পরিত্রান পাবেন।
৫. অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা পরিহার করুন। এতে করে শুধু মাইগ্রেন নয় হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বেশী চিন্তা না করে রিল্যাক্স থাকুন।
৬. উচ্চ শব্দ, আলো, কোলাহলের ভিতর প্রয়োজন ছাড়া যাবেন না। এসবের জন্যও মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়।
৭. মাইগ্রেনের সমস্যায় আইবুপ্রোভেন, প্যারাসিটামল, এসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করুন। ব্যথা সামান্য হলে ঔষধ না সেবন করে কি জন্য ব্যথা হচ্ছে সেই কারনগুলো খুঁজে বের করুন, এবং অভ্যাস পরিবর্তন করুন।
উপসংহার
মাইগ্রেন পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশী হয়, এবং ১৫-৪৫ বছরের নারীরাই বেশী ভুগে থাকেন। উপরিউক্ত অভ্যাসগুলো ত্যাগ করলে এবং প্রতিকারের উপায় অনুসরন করলে মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আবার হাজির হব নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
ধন্যবাদ সবাইকে।