প্রাচীনকাল থেকে ঘি এর গুরুত্ব একেবারে সর্বপ্রথম এ। খাঁটি গাওয়া ঘি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি হাড়ের গঠন, শারীরিক সৌন্দর্য, সুস্থতা, এবং তারুণ্য বজায় রাখতে পারে। সেই কারণে অনেক আগে থেকেই মানুষ ঘিয়ের কদর করে আসছে।
তবে একটা কথা সবার ধারণায় ছিল যে, যে বাড়িতে প্রতিনিয়ত ঘি খাওয়া হয়, সেই বাড়ীতে এক ঐতিহ্য বজায় থাকে, এবং সেটা ভীষণ বড় ব্যাপার হিসেবে মনে করা হতো।
তাহলে বুঝতেই পারছেন ঘিতে কত রকমের উপকারিতা পাওয়া যায়। অনেকে আবার এটাও মনে করতেন যে বহুদিন পেটে ঘি না পড়লে শরীরের রোগের বাসা তৈরি হতে থাকে।
ঘি দিয়ে ভাত মাখিয়ে খেতে সকলেরই কিন্তু ভালো লাগে। আবার অনেকেই পছন্দ করেন না। ঘি তে কত রকমের উপকারিতা রয়েছে তা হয়তো গুনে শেষ করা যাবে না।
অনেক আগে মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত যে “ধার করে হলেও ঘি খাও”। অনেকে আবার গরম পড়েছে বলে ঘিয়ের থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন। ঘি খেলে গরমের সময় যদি কোনো অসুবিধা হয়!
₹ হোম লোন • ₹ পার্সোনাল লোন • ₹ বাইক লোন • ₹ কার লোন • ₹ বিজনেস লোন • ₹ শিক্ষা লোন
তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সারাবছর খেতে পারেন আপনি ঘি। শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং ঠিক রাখতে সাহায্য করে ঘি। ঘি তে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সহ ভিটামিন এ ও সি।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে-
১) ভীষণ উপকারী চর্বি :
তবে এই চর্বি নাম শুনে ঘাবড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। যারা মোটা হয়ে যাচ্ছেন তারা হয়তো এই চর্বি আছে শুনে ঘি খাওয়া তো দূরের কথাা, ঘিয়ের নাম পর্যন্ত মুখে আনেন না।
তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ঘি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার কাজে লাগে। উন্নত মানের ঘি এবং খাঁটি ঘিয়ে শরীরে খারাপ ফ্যাট জমতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি শরীরের প্রয়োজনীয় যে ফ্যাট গুলো দরকার আছে সেগুলোর প্রয়োজন মেটায়।
ওজন কমানোর জন্য, শক্তিশালী হওয়ার জন্য, নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন? তাহলে তার সাথে ডায়ে়েট চার্টে রাখুন ঘি, আপনার পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করবে।
২) বজায় রাখে আর্দ্রতা :
শরীর এ সবসময় আদ্রতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ঘি খাওয়ার জুড়ি মেলা ভার। ঘিয়ের পুষ্টি গুন শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। তার পাশাপাশি শরীরের আদ্রতা বজায় রাখে।
চেহারায় ফুটিয়ে তোলে নরম ভাব, কোমলতা এবং নমনীয়তা। সেই জন্য শীতকালের তুলনায় গরমকালে ঘি শরীরের জন্য বেশি উপকারী। ঘি খেতে অনেকটা মিষ্টি এবং এতে প্রয়োজনীয় চর্বি থাকার ফলে শরীরকে অনেকাংশে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৩) হজমে সাহায্য করে :
সারাদিন নানা রকম খাবার খাওয়ার পর হজমের সমস্যায় ভুগতে পারেন অনেকেই। আর এই সমস্যা নতুন নয়, তবে সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ঘি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে আপনার হজম শক্তি যেমন বাড়বে, তেমনি হজমের সমস্যা ও তৈরি হবে না কখনো।
অনেকেই মনে করেন গ্যাস্ট্রিক অথবা হজমের সমস্যার জন্য ঘি কমাত্র দায়ী, ঘি খেলে হয়তো এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু আপনি জানেন কি খালি পেটে ঘি খেলে হজম শক্তি আরো দ্বিগুন পরিমান। এবারে তাই হালকা গরম ভাতের সাথে ঘি খেতে পারেন অনায়াসেই।
আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে থাকে তা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজ থেকেই ঘি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন। অনেক কিছু খাওয়ার পরও যখন আপনার এই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়নি, তাহলে একবার ঘি খেয়েই দেখুন না।
৪) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
যে হারে একের পর এক মহামারী দেখা দিচ্ছেে, রোগব্যাধি পিছু ছাড়ছে না। সেক্ষেত্রে কিন্তু ইমুউনিটি পাওয়ার অথবা রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা শরীরে বাড়ানোটা কতটা জরুরী সেটা আজকে ভালো ভাবেই বোঝা যাচ্ছে।
ঘি শরীরে প্রত্যেকটি কোষকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে। দুধে থাকা সমস্ত প্রোটিন ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ ঘি এর মধ্যে থাকে বলে ঘি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ।
৫) ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়় :
যেহেতু ঘি খাওয়ার ফলে শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকে সেই কারণে কিন্তু ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকে অনেকাংশে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই উজ্জ্বল দেখাতে শুরু করে। ত্বকের বিভিন্ন রোগ সমস্যা অনায়াসেই মেটাতে পারে ঘি। নিয়মিত ঘি খাওয়ার ফলে চোখেমুখে আলাদা তারুণ্য ফুটে ওঠে।
৬) হাড় শক্ত করে :
ছোট থেকে শিশুদের ঘি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু দুধের সমস্ত পুষ্টিগুণ ঘিতে থাকার জন্য হাড়ের ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ সঠিক থাকে এবং শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের যোগান হয়ে যায়়। তার ফলে শরীর থাকে সুস্থ সবল এবং হাড় থাকে মজবুত।
৭) জীবানু নাশ করে :
মুখের সাথে সাথে সারা শরীরে ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে ঘি। আমাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, বাসা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু নিয়মিত ঘি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এই সব ধরনের সমস্যার সাথে লড়াই করতে পারে।
খাঁটি এবং উন্নত মানের ঘি আপনার শরীরে কি কি পরিবর্তন আনতে পারে তা আপনি বুঝতে পারবেন না যতক্ষণ না ঘি খাবার অভ্যাস তৈরি করছেন ।নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে কি কি পরিবর্তন ঘটেছে আগের থেকে, অনেক বেশী শক্তিশালী, অনেক বেশি সতেজ এবং মেজাজ ফুরফুরে উপহার হিসেবে পাবেন আপনি।
তাহলে আর ঘিয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কেন? যখন হাতের কাছেই রয়েছে শরীরকে সুস্থ সবল রাখার অব্যর্থ দাওয়াই, তাহলে আর চিন্তা কিসের।