ভিটামিন-ই ক্যাপসুলের ৭টি জাদুকরী ব্যবহার – Amazing Use of Vitamin E Capsule

ভিটামিন ই ত্বকের জন্য ভাল, এ তথ্যটি আমাদের অনেকেরই জানা। কিন্তু ঠিক কি উপায়ে আমরা ভিটামিন ই সবসময় নিজেদের কাজে লাগাতে পারি, সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, বা জানলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ে ভুগে থাকেন।

বিভিন্ন ধরনের খাবার, সবজি ও ফল থেকে আমরা ভিটামিন ই পেয়ে থাকি। কিন্তু সব ধরনের খাবার খাওয়া সবসময় হয়ত সম্ভব হয়ে ওঠেনা।

কিন্তু ইন্সট্যান্ট যে উপায়ে আপনি সবসময় ভিটামিন ই ব্যবহার করতে পারেন সেটা হচ্ছে ভিটামিন ই ক্যাপসুল। যেকোন ফার্মেসী, ঔষধের দোকানে  ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিনতে পাবেন।

Amazing Use of Vitamin E Capsule in Bangla
Amazing Use of Vitamin E Capsule in Bangla

ভিটামিন ই ক্যাপসুল আপনি সরাস রি খেতে পারেন, খেলে এটা শরীরের প্রাকৃতিক তেল বৃদ্ধি করে, চেহারা ও চুল ঝলমলে ও সুন্দর করে তোলে।

কিন্তু ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। নিজের মত করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে হিতে বিপরীত ও হতে পারে। এছাড়াও ত্বক ও চুলের জন্য আলাদা ভিটামিন ই ক্যাপসুল পাওয়া যায়। আপনি চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন।

আজ আমাদের পোস্টটি সাজানো হয়েছে ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কিছু জাদুকরী ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে। আশা করি পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে উপকৃত হবেন। চলুন দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

 

ভিটামিন ই ক্যাপসুলের ৭ টি জাদুকরী ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন:

 

১. বলিরেখা দূর করতে

চেহারায় বয়সের আগেই বলিরেখা নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। মুখে ভাজ পড়া মানেই চেহারার সৌন্দর্য শেষ বলে ভাবি আমরা। আর অনেকেই ভাবেন, বলিরেখা একবার দেখা দেওয়া মানেই বার্ধ্যক্য চলে এসেছে।

এ থেকে বাচার আর কোন উপায় নেই। কিন্তু এটা সত্য নয়। ত্বকে সঠিক উপায়ে ম্যাসাজ ও ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা হলে বলিরেখা দূর করা সম্ভব।

এরজন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুলের কোন জুড়ি নেই। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে মুখ পরিষ্কার করার পর একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে নিয়ে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ৩-৫ মিনিট ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুন।

তারপর ৩০ মিনিট পর ঘুমাতে যান। সকালে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের বলিরেখা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে এভাবে ব্যবহারের ফলে।

 

২. নতুন চুল গজাতে

চুল পড়া খুবই চিন্তার বিষয় আমাদের জন্য। চুল চেহারার সৌন্দর্যবর্ধনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  কিন্তু দূষ্ণ, অনিয়ম, হরমোনের পরিবর্তন, দুঃশ্চিন্তা ইত্যাদি কারণে চুল পড়া আটকানো যায়না।

৩০ বছর বয়সের আগেই এখন অধিকাংশ মানুষের মাথায় টাক পড়ে যায়। এতে বয়সের আগেই বুড়ো দেখায়। এ সমস্যা দূর করতে অলিভ আমন্ড বা ভার্জিন কোকোনাট অয়েলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলে লাগান।

সপ্তাহে ৩-৪ দিন চুলে এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল যুক্ত তেল ম্যাসাজ করুন ২০ মিনিট করে।

এতে মাথার চুলে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, চুলের গোড়া মজবুত হবে, চুল পড়া কমে যাবে, এবং সেই সাথে নতুন চুল গজাবে। অনেক বড় সমস্যার কত সিম্পল একটি সমাধান। তাই নয় কি?

 

৩. নাইট ক্রিম হিসেবে

যারা ত্বকের জন্য নাইট ক্রিম ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন না, তারা  নিজেদের ব্যবহৃত নাইট ক্রিমের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

এটা ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখবে এবং নাইট ক্রিমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে।

 

৪. ত্বকের দাগ দূর করতে

বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমাদের সুন্দর ত্বকে দাগ পড়ে যায়। ব্রণ, র‍্যাশ, এলার্জি,মেছতা ইত্যাদি সমস্যায় ত্বকে দাগ পড়ে যায়, এবং তা সহজে দূর করা সম্ভব হয়না।

এতে সৌন্দর্যহানি হয়। আত্নবিশ্বাস কমে যায়। এ সমস্যার সমাধান করতেও ভিটামিন ই ক্যাপসুলের জুড়ি নেই। প্রতিদিন রাতে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করার পর, টোনার হিসেবে মুখে গোলাপজল লাগিয়ে নিন।

এরপর মধু ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করুন। তারপর সারা মুখে অথবা যে স্থানে দাগ আছে, সে স্থানে ব্যবহার করুন। এটা সারামুখে অথবা দাগের স্থানে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন।

১৫-২০ দিনের মধ্যেই দাগ অনেক হালকা হয়ে আসবে, এবং আপনি যদি ব্যবহার চালিতে যান তবে দাগ একেবারেই দূর হয়ে যাবে।

 

৫. স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে

শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক থাকলে সেগুলো খুবই বাজে দেখায়, এগুলো দূর করা মোটেও সহজ নয়। অনেকেই এগুলো দূর করতে কসমেটিক সার্জারি বা লেজার ট্রিটমেন্ট করিয়ে থাকেন।

কিন্তু এগুলো করা ব্যয়বহুল এবং এর প্বার্শপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে৷ কিন্তু ভিটামিন ই ক্যাপসুল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে প্রতিদিন ম্যাসাজ করা হলে স্ট্রেচ মার্ক আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে থাকবে।

তবে এরজন্য প্রতিদিন নিয়ম করে ২০ মিনিট স্ট্রেচ মার্কের স্থানে ম্যাসাজ করতে হবে। তাহলে আপনি ভাল ফল পাবেন।

 

৬. ঠোট সুন্দর করতে

বিভিন্ন কারণে ঠোট শুষ্ক এবং কালচে হয়ে যায়, আর এটা দেখতে খুবই খারাপ দেখায়৷ এটা আমাদের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। ঠোটের জন্য সব ধরনের রেমিডি কাজেও আসেনা।

কিন্তু এর চমৎকার সমাধান দেবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভ্যাসলিনের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ঠোটে লাগান।

এটা ঠোট ফাটা বন্ধ করবে, ঠোট নরম ও গোলাপি রাখবে।

৭. নখ সুন্দর রাখতে

কাজকর্ম করার ফলে হাত ও পায়ের নখ সুন্দর রাখা সম্ভব হয়না। নখে ময়লা জমে, নখ ভেঙে যায়, অনেক সময় ফাংগাল সমস্যাও দেখা দেয়।

এ সমস্যা দূর করতে গরম জলে নিম পাতা ফুটিয়ে তাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে হাত ও পা জলে ডুবিয়ে রাখুন। এরপর নরম ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।

সপ্তাহে একবার এভাবে নখের যত্ন নিন। নখের সমস্যা দূর হয়ে যাবে সহজেই।

 

ভিটামিন ই বাদাম, মধু, মৌসুমী ফলে বেশী পাওয়া যায়, এসব খাবার খাদ্যতালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। আর ত্বক, চুল, নখ ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের যত্ন নিতে নিয়ম মেনে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করুন।

সঠিক ব্যবহারে অনেক কঠিন সমস্যারও খুব সহজ সমাধান করা সম্ভব ই ক্যাপসুল দ্বারা। সুপ্রিয় পাঠক আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভাল লেগেছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top