সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার ৭ টি উপায় – 7 Ways To Get Respect And Dignity

মানুষের যেসব কিছু পাওয়ার চাহিদা রয়েছে তারমধ্যে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার চাহিদা অন্যতম। একজন মানুষ সবসময়েই অন্যের কাছে অনুকরণীয় আদর্শ হতে চায়। কিন্তু সবাই কখনোই সেটা হতে পারেনা।

মানুষের যখনই মৌলিক চাহিদা ও নিরাপত্তার চাহিদা পূরণ হয়ে যায়, তখনই সে সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার আকাঙ্খা পোষণ করে। ক্ষমতাবান বা বিত্তশালী হওয়া কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়, কিন্তু সকলের পক্ষে সম্মানীয় ব্যক্তি হওয়া সম্ভব হয়না।

টাকা থাকলে সবাই আপনাকে মূল্যায়ন করবে, ক্ষমতা থাকলে সমীহ করবে, বিদ্যা থাকলে জ্ঞানী বলবে কিন্তু সম্মান পেতে হলে কি করতে হবে এ তথ্য অনেকেরই অজানা। আর যারা জানেন, তারাও এই নীতি পালনে সমর্থ হননা অনেক সময়।

কারণ মানুষের চোখে সম্মানের পাত্র হওয়া সহজ নয়, বরং সবচেয়ে কঠিন ও আত্নসংযমের কাজ৷ কিন্তু আপনি যদি তা হতে চান, তাহলে উপায় অবশ্যই রয়েছে। শুধু তা একনিষ্ঠভাবে পালন করতে হবে।

সুপ্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আলোচনায় থাকছে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার ৭ টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।  চলুন জেনে নেয়া যাক, উপায়গুলো কি কি?

সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার ৭ টি উপায়

 

১. নীতির খেলাপ করবেন না

আপনি চড় খেয়ে চড় দেওয়ার নীতিতে বিশ্বাস করলে তা হবে প্রতিহিংসাপরায়ণতা। এতে করে আপনার সম্মান বাড়বে না। আপনি যখন কোন কাজ করছেন, সম্পর্কে আছেন, কাউকে কথা দিচ্ছেন, তখন নীতি মেনে চলুন।

মাঝে মাঝে আপনি চাইলে অন্যকে অসম্মান করতে পারেন, তাদের গোপনীয়তা ফাস করে দিতে পারেন, কিন্তু তা যখন করবেন না, তখনই আপনি অন্যদের চোখে সম্মানের পাত্র হয়ে উঠবেন। অনেকেই হয়ত আপনাকে পছন্দ করে, আপনাকে জীবনসঙ্গী করতে চান।

কিন্তু সবার প্রস্তাবে রাজী হওয়াই আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই যারা তাদের পছন্দ করেন তাদেরকে ছোট করেন, তাদের কথা অন্যদের বলে বেড়ান। এটা করা কখনোই উচিত নয়। আপনি যদি এটা না করে তাদের সম্মানের চোখে দেখেন, তারাও আপনাকে সম্মান করবেন, সাথে অন্যরাও।

 

২. বিনাস্বার্থে পরের উপকার করুন

যখন অন্য কারো উপকার করবেন তখন কোন রকম প্রাপ্তির আশা করবেন না। বিনা স্বার্থেই উপকার করুন। মনে রাখবেন যখনই কারো কাছে কিছু প্রত্যাশা করবেন তখনই তার পরবর্তী আচরণ থেকে আপনি কষ্টও পেতে পারেন।

আপনার আচরণে তা প্রকাশ পাবে এবং উভয়ের মাঝে সম্পর্কে অবনতি ঘটবে। কিন্তু যখন আপনি প্রত্যাশা ছাড়াই উপকার করবেন তখন আপনার সম্পর্কে অন্যদের ধারণা বদলে যাবে, সবাই আপনাকে সম্মানের চোখে দেখবে।

 

৩. আচরণে এবং স্বভাবে বিনয়ী হোন

উদ্ধত স্বভাব এবং অহংকারী পদক্ষেপ এরজন্য আপনি আলোচিত হতে পারেন, কিন্তু তা আপনাকে সম্মান এনে দেবেনা। আপনি যত বেশী বিনয়ী হবেন স্বভাবে এবং আচরণে তত বেশী মানুষ আপনার সাথে সহজভাবে মিশতে পারবে। আপনাকে সম্মান করবে।

তবে বিনয়ী হওয়ার অর্থ এই নয় যে, আপনি তোশামোদ করবেন, অথবা অকারণ বশ্যতা দেখাবেন। বরং কেউ কিছু জানতে চাইলে নম্রভাবে বলবেন, না বলার হলেও ভদ্রভাবে বলবেন, বিরক্ত হয়ে বা রাগ দেখিয়ে নয়।

 

৪. পরচর্চা হতে বিরত থাকুন

পরচর্চা করার মত সময় তাদের হাতেই থাকে যাদের নিজেদের কোন কাজ নেই। বা যারা নিজেদের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তাই পরচর্চা এড়িয়ে চলুন, কাউকে দেখে তার অবস্থানে যেতে ইচ্ছা হলে মন দিয়ে পরিশ্রম করুন।

আপনার চেষ্টা আর পরিশ্রমই আপনার অবস্থান বদলে দেবে, সেই সাথে পরচর্চা না করায় সকলের কাছে সম্মানের পাত্র হয়ে উঠবেন।

 

৫. শো-অফ করবেন না

যারা নিজেদের গুণ, দক্ষতা বা অবস্থান দেখাতে ব্যস্ত হয়ে যান, সবাই তাদের অহংকারী বলে ভাবে। মুখের উপর কিছু না বললেও মনে মনে বিরক্ত হয় সকলেই। এজন্য এ জাতীয় কাজ থেকে বিরত থাকুন।

আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা, অবস্থান কাজে, আচরণে এবং গুণে প্রকাশ পাবে। এটা আপনি মুখে বলার চেয়ে কাজে করে দেখালে সবার কাছে বেশী গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

৬. গুণী ব্যক্তিদের সম্মান করুন

যাদের কর্মশক্তি প্রচুর, যাদের গুণ রয়েছে, যাদের কাছ থেকে আপনি কিছু শিখতে পারেন তাদেরকে সম্মান করুন। তাদের প্রশংসা করুন। এতে করে আপনি ছোট হয়ে যাবেন না, বরং সম্মানিত হবেন।

 

৭. হাল ছেড়ে দেবেন না

কোন কাজ একবার না পারলেই হাল ছাড়বেন না। মনে রাখবেন কাজের ক্ষেত্রে বারবার চেষ্টায় সম্মান কমে না, বরং হাল না ছেড়ে কাজ চালিয়ে যাওয়াতেই সম্মান বাড়ে।

তাই যতবারই ব্যর্থ হবেন তা থেকে শিক্ষা নিয়ে কাজ চালিয়ে যান। সকলেই আপনার অদম্য মনোভাবের জন্যই সকলের কাছে সম্মানিত হবেন।

 

উপসংহার

সাফল্য অর্জনের চেয়ে কঠিন হচ্ছে সম্মান ও মর্যাদা অর্জন। বাহ্যিকভাবে সফল অনেকেই হতে পারে, যেমন ঘুষখোর কর্মকর্তা, ভেজাল ব্যবসায়ী, দূর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা। এরা ক্ষমতার দাপটে চললেও কেউই এদের মন থেকে সম্মান ও মর্যাদা দেয় না।

এর চেয়ে ত্যাগী একজন শিক্ষকের মূল্য সমাজে বেশী। আশা করি সম্মান ও মর্যাদা অর্জনে পোস্টটি আপনাকে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।

আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top