স্বাস্থ্যবান হওয়ার ৬ টি অব্যর্থ টিপস জেনে নিন

স্বাস্থ্যই আমাদের সকল সুখের মূল। আপনি যদি অতিরিক্ত মোটা হন তাহলেও আপনি অস্বস্তিতে ভুগবেন। যেকোন কাজ সহজে করতে পারবেন না, একটুতেই হাপিয়ে যাবেন, উচ্চ রক্তচাপে ভুগবেন। আবার যদি আপনি অতিরিক্ত রুগ্ন স্বাস্থ্যের হন তাহলেও কোন কাজে জোর পাবেন না।

সারাক্ষন মাথা ধরে থাকবে, কোন কাজে মন বসবে না, শরীর দূর্বল লাগবে, খাবারে রুচি থাকবে না। তাই অতিরিক্ত রোগা বা মোটা কোনটাই ভাল নয়। আপনাকে ভাল থাকতে হলে স্বাস্থ্যবান হতে হবে। স্বাস্থ্যবান মানে আপনাকে আপনার উচ্চতা অনুযায়ী পারফেক্ট ওজনের অধিকারী হতে হবে।

তবে বিষয়টি শুধু ওজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এমনও হতে পারে আপনার ওজন উচ্চতা অনুযায়ী ঠিক আছে, কিন্তু শরীরে মাংস কিছু নির্দিষ্ট সাথে জমা হচ্ছে। অনেকেরই খেলে কেবল পেটে চর্বি জমা হয়, বা বিশেষ কোন অংশে মাংস জমে। এ অসুবিধা দূর করে স্বাস্থ্যবান হতে হলে আপনাকে কিছু টিপস অনুসরণ করতে হবে।

সুপ্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে স্বাস্থ্যবান হওয়ার কিছু অব্যর্থ টিপস। চলুন জেনে নেয়া যাক স্বাস্থ্যবান হওয়ার টিপস।

স্বাস্থ্যবান হওয়ার ৬ টি অব্যর্থ টিপস

১. শরীরের গড়ন সম্পর্কে ধারণা

শিরোনাম পড়ে কি অবাক হয়েছেন পাঠক?  অবাক হতেই পারেন।

বেশীরভাগ মানুষই নিজের গড়ন সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। অনেকেরই কাধে মাংস বেশী থাকায় তাদের উচ্চতা অনুযায়ী লম্বা মনে হয়। আবার অনেকেরই উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের কাধ ও শরীর চওড়া না হওয়ায় উচ্চতা কম মনে হয়।

আমরা মনে করি চিকন হলেই উচ্চতা বেশী মনে হয়, আর উচ্চতা বেশী হলে বেটে মনে হয়। এটা ভ্রান্ত ধারনা।  আপনার গড়ন ঠিক থাকলে আপনার উচ্চতা সঠিক মনে হবে।

তাই আগে বুঝতে হবে আপনার গড়ন কেমন? আপনার সমসাময়িক উচ্চতার মানুষদের তুলনায় আপনার ওজন ও উচ্চতা ঠিক দেখায় কিনা। না দেখালে এর কারণ জেনে নিতে হবে। তাহলে সমাধান করাও সহজ হবে।

২. পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ

সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে আপনাকে প্রথমেই সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। শরীরে সঠিক পুষ্টি না থাকলে স্বাস্থ্যবান হওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত শর্করা, আমিষ, স্নেহ, খনিজ, ভিটামিনযুক্ত খাবার রাখুন।

শরীরে প্রচুর ঘাটতি থাকলে ডিম, বাদাম, বাটার, চিজ, মিষ্টিজাতীয় খাবার, মাংস ও মাছ রাখুন। এগুলো দ্রুত ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে। সব ধরনের খাবারই আপনাকে খেতে হবে কিন্তু দ্রুত শরীর গঠন করে এমন খাবার বেশী খেতে হবে।

আর যদি ওজন বেশী হয়ে থাকে, তবে তেল চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিয়ে বেশী প্রোটিনযুক্ত খাবার পরিমানে কম খেতে হবে।

৩. শারীরিক পরিশ্রম

শরীরের গঠন সুন্দর করার জন্য বা স্বাস্থ্যবান হওয়ার জন্য প্রথমেই জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রথমে আপনাকে শারীরিক পরিশ্রমের কাজগুলো করতে হবে। অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজনের ব্যক্তিরা অল্প কাজেই হাপিয়ে যান।

তাই আগে তাদেরকে শারীরিক পরিশ্রম করে নিজেদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাড়িতে থাকলে নিজেদের কাজ নিজেরাই করার অভ্যাস করতে হবে। অফিসে বা ক্লাস করতে গেলে লিফট দিয়ে না উঠে সিড়ি দিয়ে ওঠার অভ্যাস করুন, সবসময় যাতায়াতে ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার না করে কিছুটা হাটার অভ্যাস করুন।

এই কাজগুলো করার অভ্যাস করলে সহজেই অন্যান্য কাজও করতে পারবেন, পরবর্তীতে জিম করার উপযোগী মনে হবে নিজেকে।

৪. জিম করুন

শারীরিক পরিশ্রমের ফলে যখন কাজ করার বা একটু বেশী অনুশীলন করার জন্য নিজেকে উপযুক্ত মনে হবে তখন জিমে জয়েন করুন। এখানে আপনার ট্রেনার বলে দেবেন উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের কোন কোন অংশে মাংস বাড়ানো বা কমানো জরুরী।

প্রতিটা অঙ্গের জন্য আলাদা আলাদা ব্যায়াম রয়েছে। আপনাকে ধীরে ধীরে সেগুলো আয়ত্ত করতে হবে। প্রথমেই হয়ত সবকিছু করতে পারবেন না। এটা অভ্যাস করলে হয়ে যাবে।

৫. নিয়মানুবর্তী হতে হবে

স্বাস্থ্যবান হতে আমরা সকলেই চাই। কিন্তু অধিকাংশের স্বপ্ন কিন্তু স্বপ্নই থেকে যায়, কারণ তারা শুরু করেন কিন্তু স্বাস্থবান হওয়ার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার সেগুলো নিয়মিত করেন না।

অনিয়মের ফলে সবকিছু আবার আগের মত হয়ে যায়। ফলে তাদের আগ্রহ হারিয়ে যায়। তাই নিয়মানুবর্তী হতে হবে। তবেই স্বাস্থ্যবান হওয়া সম্ভব।

৬. মেইন্টেইন করতে হবে

আপনি যখন বুঝবেন যে আপনার ইচ্ছানুযায়ী ওজন বা শেপ এ চলে এসেছেন, এরপর কিন্তু ডায়েট বা শরীরচর্চা বাদ দিলে চলবে না। কারণ স্বাস্থ্য পরিবর্তনশীল বিষয়। এরজন্য আপনাকে পারফেক্ট হওয়ার পরেও নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ ও শরীরচর্চা করে যেতে হবে।

তবে প্রথম অবস্থার মত এতটা নয়। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে খাবার খুব বেশী বা কম যেন না হয়। আর শরীরচর্চা করে যাবেন। এতে আগের শেপ বজায় থাকবে।

উপসংহার

সুপ্রিয় পাঠক, স্বাস্থ্যবান হওয়া আমাদের সবার স্বপ্ন হলেও আমরা কিন্তু এটা নিয়ে অতটা পরিশ্রমে আগ্রহী নই। আর শুরু করলেও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ধৈর্য আমাদের থাকেনা।

এরকম করলে স্বাস্থ্যবান হওয়ার স্বপ্ন কখনোই পূরণ করা সম্ভব হবেনা। তাই নিজের স্বপ্ন পূরণে অবশ্যই ধৈর্যশীল আচরণ করুন। উপরিউক্ত নিয়ম মেনে চেষ্টা চালিয়ে যান। অবশ্যই আপনি সফল হবেন। আশা করি পোস্টটি স্বাস্থ্যবান হতে আপনাকে সাহায্য করবে।

এ বিষয়ে কোন মতামত বা প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করতে পারেন। আমরা অবশ্যই তথ্য জানিয়ে আপনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top