চাল ধোয়া জল দিয়ে ত্বক ও চুলের যত্নে ৫টি উপকার

শিরোনাম পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন, চাল ধোয়া জল আবার কী করে রূপচর্চায় কাজে লাগবে? এটা আমরা অনেকেই জানি যে, প্রাচীনকাল থেকেই ঘরোয়া এবং প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই রূপচর্চা করা হত।

প্রতিদিনই ভাত রান্নার সময় চাল ধুই আমরা। আর সেই জলটুকু ফেলেও দেই। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন।

কখনো কি ভেবেছেন এই ফেলনা জলটুকুই আপনি ত্বকের নানা সমস্যা ও রুপচর্চায় দারুণ ভাবে ব্যবহার করতে পারেন? খুব সহজেই রূপচর্চা ও চুলের যত্ন নিতে চাল ধোয়া জল তৈরি করে নিতে পারেন আপনি।

এর জন্য আপনার দরকার- ২ কাপ জল ও আধা কাপ চাল। প্রথমে, এমনি পানিতে চাল ধুয়ে নোংরা, ময়লা পরিষ্কার করে নিন।

এবার ২ কাপ পরিষ্কার জলেতে চাল ভিজিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট ভেজানোর পর ছেঁকে জল আলাদা করে নিন। চাল ধোয়া জল তৈরি। চাইলে এমনি ভাত রান্নার সময়কার চাল ধোয়া জল ব্যবহার করতে পারেন।

সুপ্রিয় পাঠক, ত্বকের যত্নে এবং চুলের পরিচর্যায় না জানলে বরং আজ জেনে নিন। চলুন দেরী না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

ত্বক ও চুলের যত্নে চাল ধোয়া জলের ৫ টি চমকপ্রদ দিক

১. চুলের যত্নে চাল ধোয়া জল

চুল সৌন্দর্যের প্রধান একটি দিক। চুল সতেজ আর ঝলমলে রাখতে কত কিছুই না ব্যবহার করে থাকি আমরা, তবুও দুর্বল চুল, চুল পড়া, চুলের আগা ফাটা আরোও কত সমস্যা থেকেই যায়।

এবার আপনার হেয়ার প্যাকে যুক্ত করুন চাল ধোয়া জল!প্রথমে চুল ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। এরপর চাল ধোয়া জল চুলে দিয়ে আলতো করে মাথার ত্বক ও চুলে ম্যাসেজ করুন।

৫ মিনিট রেখে পরিষ্কার জল দিয়ে আবার ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন এভাবে চাল ধোয়া জল ব্যবহার করুন। চুল ফিরে পাবে তার হারানো যৌবন।

২. ত্বকের কালচে ভাব কমাতে চাল ধোয়া জল

চাল ধোয়া জলের আরেকটি দারুণ ব্যবহার হল ফেসিয়াল ক্লিনজার হিসেবে। মুখের ত্বকে সহজেই ধুলাবালি জমে, মৃতকোষ ও বাড়তি অয়েলের জন্য ত্বক কালচে ও বিবর্ণ দেখায়।

এ সমস্যা দূর করার জন্য আপনাকে কটন বল বা কটন প্যাডকে চাল ধোয়া জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন এই ভেজানো কটন বল দিয়ে মুখের ত্বক হালকা করে ম্যাসেজ করুন।

এরপর স্বাভাবিক জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করলে ত্বকের কালচে ভাব, মৃতকোষ ও ত্বকের ভাজ দূর হবে।

৩. রোদে পোড়া ত্বক স্বাভাবিক করতে 

বাইরে গেলে যতই ত্বকে লোশন, সানস্ক্রিন বা পাউডার ব্যবহার করুন না কেন, ত্বক রোদে পুড়বেই। এসময় ত্বক পুড়ে দুই রঙের হয়ে যায়।

ত্বকের এ রোদে পোড়া ভাব দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন চাল ধোয়া জল। ফ্রিজে রাখা চাল ধোয়া জল দিয়ে হাত ও মুখ পরিষ্কার করুন।

রোদে পোড়াভাব তো যাবেই একই সাথে চুলকানি বা এলার্জি জাতীয় সমস্যা থেকেও মিলবে সমাধান। ত্বক হবে আগের চেয়ে অনেক বেশী গ্লোয়িং।

৪. প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে চাল ধোয়া জল

চুল স্মুথ করতে কন্ডিশনার ব্যবহার করে থাকি। চাল ধোয়া জল কিন্তু দারুণ কন্ডিশনার। চাল ধোয়া জলের সাথে একটুখানি অ্যাসেনসিয়াল অয়েল মিলিয়ে নিন।

সাধারণ কন্ডিশনারের মতো এই মিশ্রণ চুলে দিন। ১০ মিনিটের মতো সময় অপেক্ষা করে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন।

চুল হবে ঝলমলে, উজ্জ্বল, ও চুলের আগা ফাটার সমস্যাও এতে দূর হবে। কারণ চুলে ঠিকমত পুষ্টি থাকলেই চুল আর শুষ্ক দেখাবে না।

৫. বয়সের ছাপ কমাতে চাল ধোয়া জল

চাল ধোয়া জলে রয়েছে প্রচুর মিনারেল সহ এমন অনেক উপাদান যা বয়সে তারুণ্য ধরে রাখতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে বেশ কার্যকরী।

তাই নিয়মিত চাল ধোয়া জল দিয়ে মুখ ধোয়ার ফলে আপনি পেতে পারেন সতেজ ত্বক, যে ত্বকে সহজে রিংকেল বা ভাজ পড়বে না।

ত্বকের অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে গেলে এবং ভিটামিনের যোগান ঠিক থাকলে ত্বকে ভাজ পড়ার সমস্যা সহজে দেখা দেয়না।

উপসংহার

আমাদের রান্নাঘরেই রয়েছে ত্বক, চুল, হাত-পায়ের যত্ন নেওয়ার কার্যকর উপাদান। এগুলো সঠিকভাবে ব্যবহারের নিয়ম জানলে খুব সহজেই বিনা খরচে ত্বক ও চুলের সঠিক পরিচর্চা করতে পারবেন।

এরজন্য বাড়তি যত্ন, পার্লার অথবা লেজার ট্রিটমেন্ট দরকার হয়না তাই প্রতিদিন চাল ধোয়া জল ব্যবহার করুন। এতে আপনি অবশ্যই উপকৃত হবেন।

আশা করি আজকের পোস্টটি চুল ও ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা,  ও সমস্যা দূর করতে আপনাদেরকে সাহায্য করবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার অথবা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন।

আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top